আমেরিকা থেকে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দেশে ফেরাতে জোর লবিং চলছেযুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে থাকা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিকে দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যপারে জোর লবিং চলছে বলে জানিয়েছেন ওয়াশিংটনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন। গত বুধবার ওয়াশিংটনে দুই মার্কিন কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।

মার্কিন কংগ্রেসে বাংলাদেশ ককাসের প্রতিষ্ঠাতা কো-চেয়ার কংগ্রেসম্যান যোসেফ ক্রাউলি এবং কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে পররাষ্ট্র সম্পর্কিত কমিটির প্রভাবশালী সদস্য কংগ্রেসওম্যান তুলশি গ্যাবার্ডের সঙ্গে পৃথক ওই বৈঠক হয়। জিয়াউদ্দিন জানিয়েছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান হত্যকাণ্ডের দুই আসামিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে অবিলম্বে ফেরত এবং বাংলাদেশের তৈরি পোশাক যুক্তরাষ্ট্রে ডিউটি ফ্রি এবং কোটামুক্ত হিসেবে রপ্তানির প্রক্রিয়া চালুর ব্যাপারে কংগ্রেসের সহকর্মীদের সঙ্গে পরামর্শ করবেন বলে জানান কংগ্রেস সদস্যরা।

জিয়াউদ্দিন কংগ্রেসম্যানদের অবহিত করেন যে, তৈরি পোশাক কারখানাসমূহে কর্মরতদের অধিকাংশই মহিলা। নারী ক্ষমতায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে উগ্রপন্থি মুক্ত করা সহজ হবে। সে প্রক্রিয়ায় হাঁটছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ। রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন, নারীরা আর্থিকভাবে স্বনির্ভরতা অর্জন করলে গোটা পরিবার অশিক্ষা-কুশিক্ষার প্রভাবমুক্ত হবে। রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিন আঞ্চলিক, আন্তর্জাতিক এবং অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে বাংলাদেশের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির বিস্তারিত ব্যাখা প্রদান করেন। ওয়াশিংটনের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে বাংলাদেশ চরমপন্থি আর সহিংসতায় লিপ্তদের মুলোৎপাটনে সোচ্চার রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত।

আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর বাংলাদেশ-এমন তথ্য উপস্থাপন করে রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিন কংগ্রেসম্যানদের জানান, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রীতি সমুন্নত রেখে একাত্তরের ঘাতকদের বিচার চলছে। একইভাবে সকল রীতি অনুসরণ করে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচারও সম্পন্ন হয়েছে। সেই বিচারে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে অন্তত দুজন এখনও যুক্তরাষ্ট্রে আত্মগোপন করে রয়েছে। এই ঘাতকদের বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করা জরুরি হয়ে পড়েছে বলেও উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত। বৈঠকে দূতাবাসের রাজনীতি বিষয়ক কাউন্সেলর তৌফিক হাসানও ছিলেন।

প্রসঙ্গত, বিদেশে পলাতক বঙ্গবন্ধুর ৬ খুনীর মধ্যে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা লে. কর্নেল খন্দকার আবদুর রশিদ পাকিস্তান এবং লিবিয়ার বেনগাজিতে, লে. কর্নেল নূর চৌধুরী কানাডায়, লে. কর্নেল শরিফুল হক ডালিম কানাডায়, নাইরোবি এবং পাকিস্তানে, লে. কর্নেল এম এ রাশেদ চৌধুরী আমেরিকার লসএ্যাঞ্জেলসে, অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন আব্দুল মাজেদ পাকিস্তানে এবং রিসালদার মোসলেমউদ্দিন পাকিস্তানে অবস্থান করছেন। পলাকত এ আসামীদের পাকিস্তানের পাসপোর্ট রয়েছে।