সংসদে নেভি সংশোধন বিল-২০১৬ পাস

সংসদে মঙ্গলবার নেভি (সংশোধন) বিল-২০১৬ পাস করা হয়েছে।সংসদ কার্যে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বিলটি পাসের প্রস্তাব করেন।বিলে নেভি (সংশোধন) অধ্যাদেশ-১৯৭৬, নেভি (সংশোধন) অধ্যাদেশ-১৯৭৭, নেভি (সংশোধন) অধ্যাদেশ-১৯৮৬ এই ৩টি অধ্যাদেশকে সমন্বিত করে প্রয়োজনীয় বিধান সংযোজন করা হয়েছে।

বিলে এ উল্লেখিত অধ্যাদেশের বিভিন্ন ধারাকে যুগোপযোগী করতে প্রয়োজনীয় সংশোধন করা হয়েছে। বিলে নেভি (সংশোধন) অধ্যাদেশ-১৯৭৬, নেভি (সংশোধন) অধ্যাদেশ-১৯৭৭, নেভি (সংশোধন) অধ্যাদেশ-১৯৮৬ বাতিল করা হয়েছে। জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম, মো. সেলিম উদ্দিন, মো. নূরুল ইসলাম ওমর, কাজী ফিরোজ রশীদ, নুরুল ইসলাম মিলন, বেগম নূর-ই-হাসনা লিলি চৌধুরী, মোহাম্মদ ইলিয়াছ, স্বতন্ত্র সদস্য আব্দুল মতিন ও রুস্তম আলী ফরাজী বিলের ওপর জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাব আানলে তা কন্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়।

এছাড়া সংসদে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির দ্বিতীয় রিপোর্ট কমিটির সভাপতি মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম উপস্থাপন করেন। তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, বর্তমান সরকারের সময়ে সংবাদপত্র ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করছে।তিনি মঙ্গলবার সংসদে জাতীয় পার্টির সদস্য মোহাম্মদ ইলিয়াছের এক প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, সকল মিডিয়া বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করবে- সরকার সবময় এমনটাই আশা করে থাকে। তবে, অবাধ স্বাধীনতাভোগের সুযোগে কোন কোন পত্রিকা জনহিতকর ও ব¯‘নিষ্ঠ সংবাদ ও প্রতিবেদন প্রকাশের পরিবর্তে অসত্য সংবাদ প্রকাশ করে থাকে, যা হলুদ সাংবাদিকতার নামান্তর। তথ্যমন্ত্রী বলেন, তথ্য অধিদফতর, বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল, বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট (পিআইবি) এবং জাতীয় গণমাধ্যম ইনষ্টিটিউট হলুদ সাংবাদিকতা রোধের ক্ষেত্রে কাজ করছে। পিআইবি হলুদ সাংবাদিকতা রোধের লক্ষ্যে সাংবাদিকদের সচেতন করার জন্য বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সে এই বিষয়ে একটি সেশন পরিচালনা করে থাকে। এছাড়া হলুদ সাংবাদিকতার প্রবণতা ও প্রকরণ বিষয়ে পিআইবির একটি গবেষণা কার্যক্রম ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে এবং তা রিপোর্ট আকারে প্রকাশিত হয়েছে। হলুদ সাংবাদিকতা রোধের ক্ষেত্রে রিপোর্টটি অনেকটাই অনুঘটক (ক্যাটালিস্ট) হিসাবে কাজ করবে।হাসানুল হক ইনু বলেন, ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমে কর্মরত রিপোর্টাররা সংবাদ প্রতিবেদন তৈরির ক্ষেত্রে মানদন্ড অনুসরণের লক্ষ্যে জাতীয় গণমাধ্যমে ইনস্টিটিউট এথিকস অব জার্নালিজম শিরোনামে সেশন পরিচালনা করে থাকে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল হলুদ সাংবাদিকতা রোধে সাংবাদিকদের জন্য নিয়মিত প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করে থাকে। বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল কর্তৃক সংবাদপত্র, সংবাদ সংস্থা ও সাংবাদিকদের জন্য প্রণীত আচরণবিধি, ১৯৯৩ (২০০২ ও ২০০৩ সালে সংশোধিত) যথাযথভাবে অনুসরণের জন্য সাংবাদিকদের সচেতন করে থাকে। এ ছাড়া বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের উদ্যোগে ব¯‘নিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন সম্পর্কিত মতবিনিময় সভারও আয়োজন করা হয়ে থাকে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল হলুদ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে স্ব উদ্যোগে অথবা অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিষয়টি আমলে নিতে পারে। প্রকাশিত সংবাদ হলুদ সাংবাদিকতার দায়ে দোষী বিবেচিত হলে প্রেস কাউন্সিল সংশ্লিষ্ট সংবাদপত্র, সংবাদ সংস্থা, সম্পাদক ও সাংবাদিককে সতর্ক, ভর্ৎসনা এবং তিরস্কার করা মামলার রায় দিতে পারে। সেই সাথে সংশ্লিষ্ট পত্রিকায় অনুরূপ রায় প্রকাশ করার নির্দেশনাও প্রদান করতে পারে।

তিনি বলেন, দেশের জনসাধারণ যাতে ব¯‘নিষ্ঠ এবং নিরপেক্ষ সংবাদ পায় সেই লক্ষ্যে তথ্য অধিদফতর কর্মরত সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণ প্রদানসহ অনলাইনভিত্তিক গণমাধ্যমকে নিবন্ধন কার্যক্রমের আওতায় আনার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।এছাড়া তথ্য অধিদফতর হলুদ সাংবাদিকতায় জড়িত সাংবাদিকদের নামে ইস্যুকৃত এক্রিডিটেশন কার্ড বাতিল করে থাকে।তথ্যমন্ত্রী বলেন, সর্বোপরি ‘বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল আইন, ১৯৭৪’ কে যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে সংশোধন কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে।