হাসানুল হক ইনু

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুতথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অন্য কোনো দেশ বা সরকারের সহায়তা চাওয়ার প্রয়োজন নেই। দেশে চলমান চক্রান্তের অংশ হিসেবে সাধারণ নাগরিক ছাড়াও সংখ্যালঘুদের গায়ে হাত দেওয়া হচ্ছে। এটা সরকারকে বিব্রত করার জন্য করা হচ্ছে। তবে এর ফলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হয়নি।

সোমবার দুপুরে তথ্য অধিদপ্তরের সম্মেলনকক্ষে সাংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন। দেশের চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে দেশবাসীকে অবহিত করতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

ভারতের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের একটি সংবাদে বলা হয়, বাংলাদেশের হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ দেশটির সংখ্যালঘুদের রক্ষার জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সহায়তা কামনা করেছেন। এ বিষয়ে মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি এসব কথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, এ দেশে ২০ হাজারে বেশি মন্দির আছে। সেখানে সুন্দরভাবে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করা হচ্ছে। সরকারের অবস্থানও নীতিগতভাবে অসাম্প্রদায়িক। সরকার ২৪ ঘণ্টা জেগে আছে। জেগে আছে বলেই বিএনপি-জামায়াতের ৯৩ দিনের আগুন-সন্ত্রাস বন্ধ করতে পেরেছে। হেফাজতের তা-ব মোকাবিলা করতে পেরেছে। ৫ জানুয়ারির নির্বাচন সম্পন্ন করতে পেরেছে। তিনি বলেন, এখনকার গুপ্তহত্যা ধীরস্থিরভাবে বন্ধের চেষ্টা চলছে। সরকারের গায়ে হাত দিতে না পেতে তারা সাধারণ নাগরিকদের গায়ে হাত দিচ্ছে। এ জন্য সরকার দুঃখিত। কিন্তু কেউ পার পাবে না। মন্ত্রী নিজের নাম উল্লেখ করে বলেন, তাঁকেও যদি হত্যা করা হয়, তাহলেও কেউ পার পাবেন না। তাঁকে কাফনের কাপড় পাঠানো সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘জীবনে বহুবার মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছি। মৃত্যুকে ভয় পাই না।

বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের রক্ষায় প্রতিবেশী কোনো রাষ্ট্রনায়কের কাছে আর্জি জানানোর দরকার নেই মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, এজন্য বর্তমান সরকারই যথেষ্ট। দেশের সামাজিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নে তিনি দাবি করেন, সরকারের শক্ত অবস্থানের কারণেই ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ধর্মচর্চার অধিকার নিশ্চিত হয়েছে।

বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর সম্প্রতি বেশ কয়েকটি হামলার পর তাদের দুই নেতা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে ‘হিন্দুদের নিরাপত্তার জন্য হস্তক্ষেপ চেয়েছেন বলে প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়ার বরাতে খবর দিয়েছে বিভিন্ন ভারতীয় সংবাদপত্র।সংবাদ সম্মেলনে সে বিষয়ে সরকারের প্রতিক্রিয়া জানতে চান এক সাংবাদিক।

জবাব তথ্যমন্ত্রী বলেন, সরকার সম্প্রীতি রক্ষা করছে। কোরবানির পাশাপাশি যেভাবে পূজা উদযাপন করছে। সরকার নিরাপত্তা দিতে পারছে বলেই তারা তাদের ধর্ম চর্চার সুযোগ পাচ্ছে।সুতরাং মনে করি না, বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা বিধান করতে বাইরের কোনো রাষ্ট্র নায়কের কাছে আর্জি করার প্রয়োজন আছে। আমরাই যথেষ্ট।

হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের এক নেতা ও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (এফডিসি) সাবেক এক ব্যবস্থাপনা পরিচালককে উদ্ধৃত করে পিটিআইর প্রকাশিত ওই খবর রোববার প্রচার করে ভারতীয় সংবাদপত্রগুলো।সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সমালোচনা করে হাসানুল হক ইনু বলেন, তারা জঙ্গি লালন করতেন, পালন করতেন। শেখ হাসিনার সরকার ‘অসাম্প্রদায়িকতায়’ বিশ্বাস করে, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে। আদিবাসী এবং ক্ষুদ্র জাতিস্বত্ত্বার অধিকারে বিশ্বাস করে বলেই একটা পার্থক্য তৈরি হয়েছে।ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপরে অতীতে যেভাবে আক্রমণ পরিচালনা করা হয়েছিল, আজকে সেভাবে আর নেই। সরকার শক্তভাবে দমন করে তাদের ধর্মচর্চার অধিকার নিশ্চিত করেছে।

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার উৎখাতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে চক্রান্ত চলছে অভিযোগ করে জাসদ নেতা ইনু বলেন, সেই চক্রান্তের অংশ হিসেবে তারা সাধারণ নাগরিকের গায়েও যেভাবে হাত দিচ্ছে, তেমনি ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের গায়েও হাত দিচ্ছে।এতে আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হচ্ছে না। দাঙ্গা লাগছে না। … কতিপয় জঙ্গিবাদি আক্রমণ করছে।