অধ্যাপক মনিরুজ্জামান মিঞা আর নেই

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মনিরুজ্জামান মিঞা ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মনিরুজ্জামান মিঞাকে মঙ্গলবার (১৪ জুন) বাদ জোহর বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে।বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির খান দাফনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এর আগে সোমবার দুপুর ১২টায় রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন।তারপর এ অধ্যাপকের মরদেহ স্কয়ার হাসপাতালের মরচুয়ারিতে রাখা হয়।

মঙ্গলবার সকালে হাসপাতাল থেকে বনানীর বাসায় নিয়ে যাওয়া হবে। তারপর সকলের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য বাসা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জিওগ্রাফি ডিপার্টমেন্টে নেওয়া হবে।শ্রদ্ধা জানানোশেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জানাজায় অংশ নেবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।এরপর বাদ জোহর গুলশান আজাদ মসজিদে দ্বিতীয় জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে।বিএনপিপন্থি বুদ্ধিজীবী মনিরুজ্জামান মিঞা অসুস্থতার কারণে অনেকদিন ধরেই অনেকটা আড়ালে ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সাবেক এই অধ্যাপকের বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।

মনিরুজ্জামান মিঞা বিএনপি সমর্থক পেশাজীবীদের সংগঠন শত নাগরিক জাতীয় কমিটির সদস্য ও জিয়া পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন।বিগত চার দলীয় জোট সরকারের সময় পুনর্গঠিত দুর্নীতি দমন কমিশনে অধ্যাপক মনিরুজ্জামানকে কমিশনারের দায়িত্ব দিয়েছিলেন তখনকার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।

বিএনপি জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেন, অধ্যাপক মনিরুজ্জামান মিঞা বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন। স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ (সোমবার) বেলা ১২টার দিকে তার মৃত্যু হয়।১৯৩৫ সালে জন্ম নেওয়া মনিরুজ্জামান মিঞা লেখাপড়া করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে মাস্টার্স করার পর জগন্নাথ কলেজে তার শিক্ষকতার শুরু।১৯৬১ সালে ফ্রান্সে গিয়ে উচ্চতর ডিগ্রি নেন মনিরুজ্জামান। পাঁচ বছর পর দেশে ফিরে যোগ দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগে।

এইচ এম এরশাদ সরকারের শেষ বছর ১৯৯০ সালের মার্চে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব দেওয়া হয় অধ্যাপক মনিরুজ্জামানকে। ১৯৯২ সালের অক্টোবর পর্যন্ত তিনি ওই দায়িত্বে ছিলেন। পরে তখনকার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া তাকে রাষ্ট্রদূত করে সেনেগালে পাঠান।এরপর ২০০১ সালে বিএনপি আবারও ক্ষমতায় এলে মনিরুজ্জামান মিঞাকে জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়। পরে ইবাইস বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আলাদা শোকবার্তায় মনিরুজ্জামান মিয়ার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। তারা প্রয়াত এ শিক্ষকের প্রতি ‘গভীর শ্রদ্ধা’ জানিয়ে ও তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন।

পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অকৃতদার মনিরুজ্জামান মিঞার মরদেহ সোমবার হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হবে। মঙ্গলবার জোহরের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে এবং আছরের পর গুলশানের আজাদ মসজিদে জানাজা শেষে বনানীতে বাবার কবরে তাকে দাফন করা হবে।