বাজেটে যেসব পণ্যের দাম বাড়ছে ও কমছে

নতুন ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরের ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এবারের বাজেটের দর্শন- প্রবৃদ্ধি, উন্নয়ন, সমতাভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণের অগ্রযাত্রা।বৃহস্পতিবার দুপুরে সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিশেষ বৈঠকে এ বাজেট অনুমোদন হয়।দশম জাতীয় সংসদের তৃতীয় বাজেট উপলক্ষে সংসদের দ্বিতীয় তলায় দুপুর সাড়ে ১২টায় মন্ত্রিসভার এ বিশেষ বৈঠক শুরু হয়। বৈঠক শেষ হয় দুপুর আড়াইটার পর।প্রত্যেক বাজেট পেশ করার আগে বিশেষ এ বৈঠক হয়ে থাকে।বিকেল সাড়ে ৩টায় সংসদে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত অনুমোদিত এ বাজেট পেশ করেন। প্রবৃদ্ধি সঞ্চারে নতুন মাত্রার’ লক্ষ্য নিয়ে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট ঘোষণা করা হয় বৃহস্পতিবার। এটি হবে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বাজেট। ইতোমধ্যে সংসদে পেশের জন্য ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকার এ বাজেট অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা।। বিটিভিসহ দেশের সব টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারিত হয় এ বাজেট। এছাড়া অর্থ মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ওয়েবসাইটে পাওয়া যাচ্ছে এর সফটকপি।

বাংলাদেশের ৪৫তম বাজেট এবার। আর আওয়ামী লীগ সরকারের ১৭তম। অর্থমন্ত্রী হিসেবে আবুল মাল আবদুল মুহিতের দশম বাজেট এটি।অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতই প্রথম অর্থমন্ত্রী যিনি টানা ৮ বছর জাতীয় বাজেট ঘোষণা করেছেন। ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে ২০১৬-১৭ অর্থবছর পর্যন্ত আটটি বাজেট এবং তার আগে ১৯৮২-৮৩ ও ১৯৮৩-৮৪ অর্থবছরের বাজেট পেশ করেছিলেন তিনি।অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) আকার ধরা হচ্ছে ১৯ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকা। সে হিসাবে আগামী বাজেট হবে মোট জিডিপির ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ।

মোট বাজেটের মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) থাকছে ১ লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। তবে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন বরাদ্দসহ হিসাব করলে এডিপির আকার দাঁড়াবে ১ লাখ ২৩ হাজার ৩৪৫ কোটি টাকা।বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪২ হাজার ৭৫২ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) নিয়ন্ত্রিত রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ২ লাখ ৩ হাজার ১৫২ কোটি টাকা। বাকি অর্থ বৈদেশিক ঋণ, অনুদান ও স্থানীয় ঋণের মাধ্যমে ঘাটতি অর্থায়ন করা হবে।

এবারও ডিজিটাল পদ্ধতিতে অর্থাৎ পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে বাজেট উপস্থাপন করা হবে। বাজেট বক্তৃতা; সম্পূরক আর্থিক বিবৃতি; প্রজাতন্ত্রের সরকারি হিসাব; সংযুক্ত তহবিল-প্রাপ্তি; মঞ্জুরী ও বরাদ্দের দাবীসমূহ (অনুন্নয়ন ও উন্নয়ন); বিস্তারিত বাজেট (উন্নয়ন); নারী উন্নয়ন ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় ৪০টি মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম; শিশুদের নিয়ে বাজেট ভাবনা; মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি; মধ্যমেয়াদি বাজেট কাঠামো; বার্ষিক আর্থিক বিবৃতি; বাজেটের সংক্ষিপ্তসার; দক্ষতা উন্নয়ন- উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জনের অগ্রাধিকার, কাঠামো রূপান্তরে বৃহৎ প্রকল্প : প্রবৃদ্ধি সঞ্চারে নতুন মাত্রা, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা-২০১৬ এবং ডিজিটাল বাংলাদেশের পথে অগ্রযাত্রা: হালচিত্র ২০১৬ ওয়েবসাইটে প্রকাশসহ জাতীয় সংসদ হতে সরবরাহ করা হবে।

একই সঙ্গে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ প্রণীত ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যাবলী- ২০১৫-১৬ জাতীয় সংসদে পেশ করা হবে।বাজেটকে আরো অংশগ্রহণমূলক করার লক্ষ্যে অর্থ বিভাগের ওয়েবসাইট (িি.িসড়ভ.মড়া.নফ) এ বাজেটের সব তথ্য ও গুরুত্বপূর্ণ দলিল যে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান পাঠ ও ডাউনলোড করতে পারবেন। দেশ বা বিদেশ থেকে ওই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ফিডব্যাক ফরম পূরণ করে বাজেট সম্পর্কে মতামত ও সুপারিশ প্রেরণ করা যাবে। প্রাপ্ত সকল মতামত ও সুপারিশ বিবেচনা করা হবে। জাতীয় সংসদ কর্তৃক বাজেট অনুমোদনের সময়ে ও পরে তা কার্যকর করা হবে বলেও উল্লেখ করা হয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞাপ্তিতে।এতে আরও বলা হয়, ব্যাপকভিত্তিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারি ওয়েবসাইট লিংক িি.িনধহমষধফবংয. মড়া.নফ,িি.িহনৎ-নফ.ড়ৎম, িি.িঢ়ষধহপড়সস.মড়া.নফ,িি.িরসবফ.মড়া.নফ,িি.ি নফঢ়ৎবংংরহভড়ৎস.ড়ৎম,িি.িঢ়সড়.মড়া.নফ এবং বেসরকারি ওয়েবসাইট লিংক িি.ি নফহবংি২৪.পড়স ঠিকানায় বাজেট সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া যাবে।এদিকে বাজেট উপস্থাপনের পরদিন অর্থাৎ আগামী ৩ জুন শুক্রবার বিকেল ৪টায় ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাজেটোত্তর সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।