আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামায়াত ধ্বংসযজ্ঞ চালালেও তাদের কাছে জনগণ মাথা নত করেনি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।তিনি বলেছেন, নির্বাচন বন্ধের নামে বিএনপি-জামায়াত কী করেছে তা সবাই দেখেছে। মা দেখছে তার ছেলে আগুনে পুড়ে মারা যাচ্ছে। ছোট্ট শিশুকেও তারা পুড়িয়ে মেরেছে। আন্দোলনের নামে মানুষ পুড়িয়ে মারার উৎসব হয়েছে। প্রায় সাড়ে পাঁচশ মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে তারা। রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করা ছিল তাদের কাজ। তবু জনগণ তাদের সেই ধ্বংসযজ্ঞের কাছে মাথা নত করেনি।জাপানের রাজধানী টোকিওর ইমপেরিয়াল হোটেলে সেখানে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্যোগে প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া ‘নাগরিক সংবর্ধনা’ অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে তিনি এ কথা জানান। জি-৭ সম্মেলনে অংশ নিতে প্রধানমন্ত্রীর জাপান সফরের শেষ দিন রোববার (২৯ মে) স্থানীয় সময় বিকেলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়বাংলাদেশে সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডের জন্য বিএনপি ও তার জোটসঙ্গীদের দায়ী করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরি ও যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে বেছে বেছে হত্যার এই পথ নিয়েছে তারা।গত বছর বিএনপি-জামায়াত জোটের তিন মাসের হরতাল-অবরোধে নাশকতায় প্রাণহানির প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যখন দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি, তখন বিএনপির কাজ পুড়িয়ে পুড়িয়ে মানুষ মারা। মনে হলো যেন, আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারার মহোৎসব শুরু হয়েছে। এটিই নাকি তাদের আন্দোলন। রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করাটা তাদের কাজ।
তবে জনগণ বিএনপির ওই আন্দোলনে সমর্থন দেয়নি মন্তব্য করে তিনি বলেন, বরং জনগণ তাদের প্রতিহত করেছে। তাই বিএনপি নেত্রী রণে ভঙ্গ দিয়ে কোর্টে হাজিরা দিলেন এবং বাসায়ও ফিরে গেলেন। এটা কেন করল? ওই যে যুদ্ধাপরধীরা তাদের সাথে আছে।ওই আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি বেছে বেছে মানুষ হত্যা শুরু করেছে অভিযোগ কওে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিরীহ মানুষ, মন্দির ও গির্জার পুরহিত, ফাদার, বিদেশি নাগরিকদের হত্যা করল; যেন বিদেশে সেনসেশন তৈরি হয়। প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় বাংলাদেশকে।গত মাসে কলাবাগানে সমকামী অধিকারকর্মী জুলহাজ মান্নান ও তার বন্ধু নাট্যকর্মী মাহবুব রাব্বী তনয় হত্যাকাণ্ড নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মণির আপন খালাতো ভাই (জুলহাজ) ও তার বন্ধুকে ঘরে ঢুকে হত্যা করল। সে আমেরিকান অ্যাম্বাসিতে কাজ করত, পরে ইউএসআইডিতে ছিল। তারা তো আমাদের মতাদর্শেরই। তাদের হত্যা করা হল। কারণ এটা নিয়ে আমেরিকা যেন প্রশ্ন করে।
উদ্দেশ্যমূলকভাবে গুপ্তহত্যা হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, লক্ষ্য একটাই- দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করা, আর যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে বাধা সৃষ্টি করা। আগে প্রকাশ্যে শুরু করেছে। এখন গুপ্তহত্যা শুরু করেছে। তবে যতো বাধাই আসুক না কেন যুদ্ধাপরাধের বিচার চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আজকে জাতির আকাঙ্ক্ষা। আজকে বাংলাদেশের মানুষ অভিশাপ মুক্ত হচ্ছে।অনেক বাধা-বিপত্তি আমাদের ওপর এসেছে, কিন্তু আমরা বিচার কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের দুই মন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের যুদ্ধাপরাধে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার কথাও তুলে ধরেন তিনি।যুদ্ধাপরাধী দুইজনকে মন্ত্রী বানিয়ে তাদের হাতে পতাকা তুলে দিয়েছিল। তাদের দুজনেরই যুদ্ধাপরাধী হিসাবে বিচার হয়েছে। ফাঁসির রায় কার্যকর হয়েছে।যারা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে বিশ্বাস করে না’ তারা কীভাবে বাংলাদেশের কল্যাণকামী হতে পারে সে প্রশ্ন তুলে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ আসলেই দেশের উন্নয়ন হয়। বিদেশে ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়।গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের উন্নয়ন বিদেশিদের নজর কেড়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখনই বিদেশে যাই তখনই আমাকে একটা প্রশ্ন মোকাবেলা করতে হয়- এই অসম্ভব সম্ভব হয় কী করে, এটা একটা মিরাকল। কীভাবে বাংলাদেশ এতো উন্নয়ন করতে পারল?অর্থনৈতিক অগ্রগতি নিয়ে তিনি বলেন, আমরা বাজেট তিন গুণ বৃদ্ধি করেছি। সামনের বাজেট আরও বড় বাজেট আসছে। সেটা করতে আমরা সক্ষম হয়েছি।আমাদের প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ০৫ করেছি। আমাদের মাথাপিছু আয় ১৬৪৪ ডলারে উন্নীত হয়েছে। আশা করি কিছুদিনের মধ্যে ২ হাজার ডলারের কোটা ছাড়িয়ে যাবে।
রপ্তানি ও রেমিটেন্স বৃদ্ধির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমাদের দেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা যেহেতু বেড়েছে, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন বাড়ছে। ৫ শতাংশ মানুষ নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্তে এসেছে। আমাদের লক্ষ্য ডতিটি মানুষ নিম্ন মধ্যবিত্ত থেকে উঠে আসতে পারে।
শেখ হাসিনা বলেন, যদিও আমরা ইতোমধ্যে নিম্ন মধ্যবিত্ত আয়ের দেশে পরিণত হয়েছি, কিন্তু আমি সব সময় বলি, আমরা মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বিজয় অর্জন করেছি। আমরা বিজয়ী জাতি। আমরা নিম্নে থাকতে পারি না। আমরা ঊর্ধ্বে উঠবোই এবং সেটাই হবে আমাদের লক্ষ্য।কথায় আছে, নিয়ত গুণে বরকত। নিয়ত থাকায় আমরা যেখানে হাত দিয়েছি, সেখানে সাফল্য অর্জন করেছি।প্রবাসীদের প্রতি দেশ নিয়ে হতাশা নয়, আশাবাদের কথা বলার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক সময় বাংলাদেশ শুনলে অনেকে নাক সিঁটকাত, অসম্মানের চোখে দেখত। বাংলাদেশের কিন্তু সেই অবস্থান এখন আর নেই। এই সম্মানটা ধরে রাখার দায়িত্ব কিন্তু আপনাদের প্রবাসীদের ওপর বর্তায়।
জাপানের মতো অবকাঠামো গড়ে তোলার স্বপ্নের কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমি জাপানের সঙ্গে মিলিয়ে আমি আমাদের অবকাঠামো দেখছিলাম। উন্নত দেশ জাপান, তাদের সঙ্গে আমাদের তুলনা সাজে না। আমাদের দেশকে কবে এমন উন্নত করব সেই স্বপ্ন দেখতেতো কোনো অসুবিধা নাই।এরইমধ্যে যে অবকাঠামো উন্নয়ন হয়েছে তাতে ঢাকা শহরের চেহারা পাল্টে গেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।পায়রা বন্দর, কুতুবদিয়া, মহেশখালীসহ বিভিন্ন স্থানে গভীর সমুদ্রবন্দর করার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।ব্যাপক আকারে যাতে বিদেশি বিনিয়োগ আসে সেজন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “প্রায় ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল আমরা করব, যাতে দেশি-বিদেশি সবাই বিনিয়োগ করতে পারেন। কারণ বিনিয়োগ ছাড়া উন্নয়ন হবে না, সেটা আমি বিশ্বাস করি।
বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি এবং বিভিন্ন রকম অবকাঠামো নির্মাণ আমরা করে যাচ্ছি। সেখানে যথেষ্ট সাড়া পাচ্ছি। তাদের জন্য বিশেষ সুযোগ-সুবিধা আমরা দিচ্ছি।
জাপানকে বিনিয়োগের জন্য চট্টগ্রামে ৫০০ একর জায়গা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী এবং আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য আখতারুজ্জামান বক্তব্য রাখেন।এদিকে, বিশ্ব নেতৃত্বের সারিতে বসে জি-৭ সম্মেলনে অংশগ্রহণ, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনঝো আবের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক এবং শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মৈথ্রিপালা সিরিসেনার সঙ্গে সৌজন্য বৈঠকসহ গুরুত্ব ও তাৎপর্যপূর্ণ কর্মসূচিতে জাপানে তিন দিন ব্যস্ত সফর কাটিয়ে দেশে ফিরছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।রোববার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে (বিজি-১০৭৯) টোকিওর হানেদা বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করেন তিনি। বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান টোকিওতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা, জাপানের রাষ্ট্রাচার প্রধান কাওরু শিমাজাকিসহ দূতাবাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।বাংলাদেশ সময় রাত পৌনে ১২টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী ভিভিআইপি ফ্লাইটটি।
জি-৭ সম্মেলনের আউটরিচ অধিবেশনে অংশ নিতে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনঝো আবের বিশেষ আমন্ত্রণে গত ২৬ মে দেশটি সফরে যান শেখ হাসিনা।তার সফরসঙ্গী হন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন, পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক, অর্থনৈতিক বিভাগের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন, অপর সিনিয়র সচিব ও সদস্য জিইডি অধ্যাপক ড. শামসুল আলম প্রমুখ।
এছাড়া যান সংবাদকর্মী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ব্যবসায়ীদের একটি বড় দল।ওই দিন সন্ধ্যায় দেশটির নাগোয়ায় পৌঁছে প্রধানমন্ত্রী সেখানকার সফরকালীন আবাসস্থল হোটেল হিলটনে ওঠেন। পরদিন ২৭ মে সকাল থেকেই শুরু হয় তার ব্যস্ত কর্মসূচি।সকালে প্রধানমন্ত্রী যোগ দেন জি-৭ সম্মেলনের আউটরিচ মিটিংয়ে, যেখানে অংশ নেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওঁলাদ, জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল, ইতালির প্রধানমন্ত্রী মাত্তিও রেনজি ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনঝো আবের মতো বিশ্বনেতারা। আরও অংশ নেন রয়েছেন লাওস, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, পাপুয়া নিউগিনি, শ্রীলঙ্কা ও শাদ’র সরকার কিংবা রাষ্ট্রপ্রধান; জাতিসংঘ মহাসচিব এবং বিশ্ব ব্যাংক, এডিবি ও আইএমএফ’র প্রেসিডেন্টরা।
আউটরিচের দু’টি অধিবেশনে অংশ নিয়ে বিশ্বনেতা হিসেবে বিশ্বের সাতশ’ কোটি মানুষের উন্নয়নের বর্তমান অবস্থা, সে বিষয়ে ভাবনা ও দর্শনের কথা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।অধিবেশনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কুশলাদি ও মতবিনিময় হয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ওবামা, কানাডার প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো, জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেলসহ শীর্ষ নেতাদের।দুপুরে সম্মেলনের আউটরিচ অধিবেশনের ফাঁকে শেখ হাসিনা দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের সঙ্গে। সে বৈঠকে ক্যামেরন বাংলাদেশের উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন। একইসঙ্গে আগ্রহ প্রকাশ করেন এ উন্নয়নের গল্পের অংশ হওয়ার। ক্যামেরন ব্রিটেনের ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হওয়া-না হওয়ার বিষয়েও প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ চান।সম্মেলনকেন্দ্রিক দিনভর এ ব্যস্ততার পর হোটেল হিলটনে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী। এর পরদিন ২৮ মে সকাল থেকেও শুরু হয় তার ব্যস্ততা।
সকাল ৯টায় হিলটনেই প্রধানমন্ত্রী সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মৈথ্রিপালা সিরিসেনার সঙ্গে। সে বৈঠকে বন্যাকবলিত শ্রীলঙ্কাকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেওয়ার কথা বলেন শেখ হাসিনা।
এরপর ১০টায় প্রধানমন্ত্রী বৈঠক করেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী আবের সঙ্গে। দ্বিপাক্ষিক এ বৈঠকে আলোচনা হয় দু’দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে। এসময় ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ হয়ে ওঠার প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন শিনঝো আবে। বাংলাদেশের তরফ থেকে প্রস্তাব দেওয়া হলে নতুন ‘বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর’ নির্মাণে সহযোগিতার আশ্বাস দেন জাপানি প্রধানমন্ত্রী। একইসঙ্গে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণেও সহযোগিতার কথা বলেন। বৈঠকে জাপানি প্রধানমন্ত্রী জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসাও করেন।নাগোয়ার ব্যস্ততা শেষে দুপুরেই প্রধানমন্ত্রী সফরসঙ্গীদের নিয়ে আসেন রাজধানী টোকিওতে। এখানে তিনি ওঠেন মান্ডারিন ওরিয়েন্টাল হোটেলে। এরপর বিকেলে প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করেন টোকিওতে বাংলাদেশ দূতাবাসের অত্যাধুনিক নকশায় নির্মিত চারতলা বিশিষ্ট নতুন চ্যান্সারি ভবনের। সন্ধ্যায় তিনি ফিরে আসেন মান্ডারিন ওরিয়েন্টাল হোটেলে। রোববারও সকাল থেকেই শুরু হয় প্রধানমন্ত্রীর কর্মব্যস্ততা। সকালে তিনি প্রাতঃরাশ বৈঠক করেন স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে। তাদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী জাপানি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। সেজন্য সম্ভাব্য সব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার কথাও বলেন। এ বৈঠকে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের সংগঠন এফবিসিসিআই ও জাপানের সংগঠন জেটরো’র মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়, যার মধ্য দিয়ে দু’পক্ষই বিনিয়োগের সুযোগ খুঁজতে পারবে বলে জানানো হয়।ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রী দুপুরেই যান ইমপেরিয়াল হোটেলে। এখানে তিনি অংশ নেন জাপানে বসবাসরত বাংলাদেশিদের দেওয়া নাগরিক সংবর্ধনা’ অনুষ্ঠানে। এই সংবর্ধনা নিয়েই তিন দিনের ব্যস্ততম সফর শেষ করে প্রধানমন্ত্রী দেশের উদ্দেশে যাত্রা করেছেন।