ক্রিস্টিয়ানো রোনল্ডোর শেষ গোলে এ্যাথলেটিকো মাদ্রিদকে পেনাল্টিতে ৫-৩ গোলে হারিয়ে ১১বারের মত ইউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লীগের শিরোপা ঘরে তুলেছে রিয়াল মাদ্রিদ। মিলানের সান সিরো স্টেডিয়ামে নির্ধারিত সময়ের খেলা ১-১ গোলে ড্র ছিল। দুই বছর পরে রিয়াল দশম শিরোপাকে ছাড়িয়ে যাবার লড়াইয়ে মাঠে নেমেছিল। সেই লক্ষ্যে অধিনায়ক সার্জিও রামোস ১৫ মিনিটেই দলকে এগিয়ে দেন। ম্যাচটি যখন প্রায় রিয়ালের দখলেই চলে যাচ্ছিল ঠিক তখনই ৭৯ মিনিটে বেলজিয়ান ইয়ানিক কারাসকো বদলী হিসেবে খেলতে নেমে এ্যাথলেটিকো মাদ্রিদকে সমতায় ফেরান। আর এতেই অতিরিক্ত সময়ে গড়ায় ফাইনালটি। দুই অর্ধে অতিরিক্ত সময়ে গোলশুণ্য থাকার পরে টাই ব্রেকারে দুই দলের ভাগ্য নির্ধারিত হয়। তিনটি করে শট গোলের ঠিকান খুঁজে পাবার পরে এ্যাথলেটিকো ডিফেন্ডার হুয়ানফ্রানের শটটি যখন কেইলর নাভাসের ডাকদিক দিয়ে বারে লেগে ফেরত আসে তখনই রিয়াল এগিয়ে যাবার সুযোগ পায়। আর সেই সুযোগ পুরোপুরি কাজে লাগাতে রোনাল্ডো কোন ভুল করেননি। তিন বছরে দ্বিতীয়বারের মত ইউরোপীয়ান শিরোপা উপহার দেন তিনি রিয়ালকে। আর সেইসাথে আবারো শিরোপা হাতছাড়া হওয়ায় হতাশ হয়েই মাঠ ছাড়তে হয় এ্যাথলেটিকোকে।
১৯৫৬ সালে প্রথমবারের মত আয়োজিত ইউরোপের সর্বোচ্চ এই আসরের শিরোপা জিতেছিল গ্যালাকটিকোরা। দুই বছর আগে লিসবনে দশম শিরোপা জয় করে রেকর্ড গড়ে। ঐ ম্যাচেও রামোসের শেষ মুহূর্তের গোলে ম্যাচটি অতিরিক্ত সময়ে গড়িয়েছিল। এ্যাথলেটিকো কোচ দিয়েগো সিমিয়োনে তার দলের পারফরমেন্সে হতাশা প্রকাশ বলেছেন ২০১০ ও ২০১২ সালের দুইবারের ইউরোপা লীগের চ্যাম্পিয়নদের সামনে এবার দারুন সুযোগ ছিল চ্যাম্পিয়নস লীগের শিরোপা জয়ের। কিন্তু ম্যাচ শুরুর মাত্র ৬ মিনিটের মধ্যেই রিয়াল তাদের দরজায় কড়া নাড়তে শুরু করে। গোল এরিয়ার ঠিক বাইরে গ্যারেথ বেল একটি ফ্রি-কিক অর্জন করেন। ওয়েলসম্যানের দূর্দান্ত সেই ডেলিভারি থেকে করিম বেনজেমা পায়ে বল লাগালেও গোলরক্ষক ইয়ান ওবলাকের দক্ষতায় সেযাত্রা রক্ষা পায় এ্যাথলেটিকো। এটা একটু আগে ভাগেই সতর্কবার্তা থাকলেও হুমকিটি ছিল সত্যিকারের। এরই ধারাবাহিকতায় টনি ক্রসের ক্রস থেকে বেলের ব্যাক হেড থেকে আর ভুল করেননি রামোস। এযাত্রা ওবলাকের আর কিছুই করার ছিল না।
এই গোলের পরপরই এ্যাথলেটিকো নিজেদের গুটিয়ে নিতে শুরু করে। খুব কমই তারা রিয়ালের শিবিরে হানা দিতে পেরেছে। হুয়ানফ্রানের হাফ ভলি গোলের ঠিকানা খুঁজে পায়নি। কোকের বাড়ানো বলে ফার্নান্দো তরেসের প্রচেষ্টা রিয়ালের সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার পেপে রক্ষা করেছেন। বিরতির পরে তরেসকে পিছন থেকে ফাউল করার অপরাধে ইংলিশ রেফারী মার্ক ক্ল্যাটেনবার্গ কোন সংশয় না করেই পেনাল্টির নির্দেশ দেন। কিন্তু এবারের মৌসুমে সাত গোল করা এন্টোনিও গ্রিয়েজমানের শট ক্রসবারে লেগে বাইরে চলে গেলে এ্যাথলেটিকোর ম্যাচে ফেরা হয়নি। এরপর দুই দলের বেশ কিছু প্রচেষ্টা নষ্ট হলে সমর্থকদের হতাশ হতে হয়। কিন্তু ৭৯ মিনিটে আর কোন ভুল করেননি কারাসকো। হুয়ানফ্রানের দারুন এক ক্রসে রিয়াল ডিফেন্সকে হতাশ করে কারাসকোর শট নাভাসকে পাশ কাটিয়ে জালে প্রবেশ করে।