আইন,বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন,বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার সংক্রান্ত ফৌজদারী কার্যবিধির ৫৪ ধারা সংশোধন বিষয়ে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় পাওয়ার আগে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হবে না।বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সাব- রেজিষ্ট্রারদের বিশেষ প্রশিক্ষণ কোর্সের সনদ বিতরণী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রোববার তিনি এ কথা বলেন। ফৌজদারী কার্যবিধির ৫৪ ধারা সংশোধন বিষয়ে হাইকোর্টের রায় ও নির্দেশনা ছিল। সে রায়ের বিরুদ্ধে সরকারের করা আপিল খারিজ করে দিয়ে গত ২৪ মে রায় দেয় আপিল বিভাগ। আদালত বলেন রায়ে কিছু মডিফিকেশন থাকবে। উচ্চ আদালতের রায়ের আলোকে ওই ধারা সংশোধনের উদ্যোগ নেয়া হবে কি না আজ জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, পূর্ণাঙ্গ রায় পাওয়ার আগে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হবে না। রায়ে আদালতের মডিফিকেশন না আসা পর্যন্ত এখানে কোনো পদক্ষেপ নয়।
সাতক্ষীরার জবেদ আলী বিচারকের ভুলে ১৩ বছর কারাভোগ করেছেন। অপরদিকে ভুল আইনে বিচার করায় সাতক্ষীরার আবদুল জলিল ১৪ বছর ধরে কারাভোগ করেছেন। এসব বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষন করলে আইনমন্ত্রী বলেন, এসব ঘটনায় সংশ্লিষ্টদেও কোনো দুর্বলতা বা অপরাধ হয়ে থাকলে তাতে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ভুল আইনে বিচারের ঘটনাকে দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেন তিনি।এসব বিষয়ে গণমাধ্যমকে আরো ভুমিকা রাখার আহ্বান জানান আইনমন্ত্রী। তিনি বলেন, আপনারা ইনভেস্টিগেটিভ রিপোর্টিং করেন। এমন ঘটনা যদি চোখে পড়ে আপনারা নিশ্চয়ই গোচরে আনবেন। তাহলে তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পনের বছর আগের ধর্ষণের এক ঘটনায় ভুল আইনে বিচার করায় ভোলার চরফ্যাশনের আব্দুল জলিলকে সম্প্রতি ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে রাষ্ট্রপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।গত ২৫ মে ওই রায়ে জলিলের দণ্ডাদেশ বাতিল করে তাকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়।বিষয়টি মন্ত্রীর গোচরে এনে রোববার এক সাংবাদিক জানতে চান- সংশ্লিষ্ট বিচারকদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হবে কি না, ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না।জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, নিশ্চয়ই। এটাইতো স্বাভাবিক যে, কর্তব্য পালনে ব্যর্থ হলে ডিপার্টমেন্টাল প্রসিডিংস হবে। কোনো ফৌজদারি অপরাধ হলে মামলা হবে। দেওয়ানি অপরাধ হলে সেখানেও ফাইনের জন্য মামলা হবে।হাই কোর্টের রায়ে বলা হয়, আসামি নাবালক হওয়ার পরও নিম্ন আদালতের বিচারক শিশু আইনে তার বিচার না করে যাবজ্জীবন দণ্ড দিয়েছেন। নিম্ন আদালতের বিচারক এ মামলার বিষয়ে উচ্চ আদালতের নির্দেশনাও অবহেলা করেছেন। এর দায় থেকে তিনি অব্যাহতি পেতে পারেন না।সংবাদপত্রে ওই খবর পড়ার কথা জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, এটা নিঃসন্দেহে দুঃখজনক।তিনি বলেন, বিচার বিভাগে কখনও ভুল হবে না- এমন নিশ্চয়তা দেওয়া যায় না। তবে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধের চেষ্টা অবশ্যই করতে হবে।
ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আবারও চোখে পড়লে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের মাধ্যমে তা তুলে আনতে সাংবাদিকদের অনুরোধ জানান আনিসুল হক।তাহলে আমি তৎক্ষণাত ব্যবস্থা নেব। এতটুকু আমি আপনাদেরকে নিশ্চিত করতে পারি, বলেন মন্ত্রী।