শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় ‘দুঃখ ও লজ্জা’ প্রকাশ করে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের এমপি সেলিম ওসমান বলেছেন, ‘আমি দুঃখিত ও লজ্জিত। কিন্তু পেছনের ঘটনা কেউ প্রকাশ করেনি। শিক্ষককে যখন আমি জনরোষ থেকে রক্ষা করেছিলাম তখন ওই শিক্ষক নিজেই অবস্থা থেকে রক্ষার জন্য আমাকে অনুরোধ করেছিল। আমি সে কাজটিই করেছি। সেই শিক্ষককে শিক্ষা মন্ত্রণালয় পুনর্বহাল করেছে তাতে আমার কোনো আপত্তি নাই।’ তদন্তের বিষয়ে সেলিম ওসমান বলেন, ‘বারবার স্কুলের শিক্ষার্থীদের বক্তব্য নিয়ে তাদের টর্চারিং করা হচ্ছে। তাদের মিথ্যেবাদী বানানো হচ্ছে।’ নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে কান ধরে উঠবোস করানোর ঘটনার ভিডিওচিত্র কোনো সাংবাদিক ধারণ করেননি বলে জানিয়েছেন সেলিম ওসমান। তিনি বলেন, ‘সেদিনের ঘটনায় আমার মনে হয় আমি রাজনৈতিক শিকার হয়েছি। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। একটি গ্রুপ প্রচণ্ড মেধা খাটিয়ে কাজটি সেরেছে। কারণ ঘটনার পর যেভাবে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী ও নেতারা আমার বিরুদ্ধে বক্তব্য রেখেছেন তাতে অনেক কিছু সন্দেহ পোষণ হয়।’ আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ ক্লাব লিমিটেডে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজনের সঙ্গে মতবিনিময়কালে সেলিম ওসমান আরো বলেন, ‘আমার কাছে অনেক প্রমাণাদি ছিল। সেগুলো আমি সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপন করতে চেয়েছিলাম। আমি গত মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করতে চাইলেও আমার দল জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নির্দেশে সেই সংবাদ সম্মেলন করা থেকে বিরত হই। এরশাদ স্যারকে আমি কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেলিম তো আল্লাহর ওলি হয়ে গেছ। দেশের কোটি কোটি মানুষ তোমার জন্য দোয়া করছে। সংবাদ সম্মেলন করে কী হবে? তোমার জন্য মানুষ দুই হাত তুলছে। তোমার সঙ্গে দেশের মানুষ আছে, তোমার সঙ্গে আমি আছি, জাতীয় পার্টি আছে, আল্লাহ আছে। তুমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আছো ও থাকো। এখন এসব নিয়ে কথা বলতে যেও না।” সভায় নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, ব্যবসায়ী সমাজ, সর্বদলীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, শ্রমিক নেতৃবৃন্দ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পেশাজীবী পরিষদ, নারায়ণগঞ্জ আইনজীবী সমিতি, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ, নারায়ণগঞ্জ মহিলা সংস্থা ও মহিলা নেতৃবৃন্দ, নারায়ণগঞ্জ শিক্ষক সমিতি এবং বিএমএ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সভা শুরু হওয়ার আগে অনেক এলাকা থেকেই দলীয় স্লোগান নিয়ে কর্মীরা সভায় যোগ দেন।