অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জানিয়েছেন, সাদা পোশাকে যারা কাউকে গ্রেফতার করতে যায়,তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ নয়।মঙ্গলবার বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার ও রিমান্ড বিষয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল খারিজের পর তিনি এ দাবি করেন।
মাহবুবে আলম বলেন, আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী আমার মনে হয় না, নিজের পরিচয় না দিয়ে কাউকে গ্রেফতার করতে যায়। পোশাক ছাড়া যারা গ্রেফতার করতে যাচ্ছে তারা নিশ্চয়ই আইনশৃংখলা বাহিনীর কেউ না। কারণ আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকেরা ইউনিফর্ম ছাড়া তো ডিউটিতে যায় না।তিনি আরও বলেন, সাদা পোশাকের কোনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোক থাকতে পারে। তবে তাদের কাজ হল, তদন্ত করা বা অনুসরণ করা বা গোয়েন্দার কাজে নিয়োজিত থাকা। কিন্তু গ্রেফতার করার যখন ব্যাপারটা আসবে তখন নিশ্চয়ই পরিচয় দেওয়ার ব্যাপারটাও আসবে।রাষ্ট্রপক্ষের আপিল খারিজ করে দেয়ার বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আদালতের অভিমত হলো- ফৌজদারী কার্যবিধি, সাক্ষ্য আইন বা পুলিশের কাজ করা সংক্রান্ত আইনগুলো সংবিধান পরিপন্থি হয়ে যাচ্ছে। সংবিধানের আলোকে এসব আইন সংশোধনের প্রয়োজন মনে করে কিছু নির্দেশনা দিয়েছে।
এখন পূর্ণাঙ্গ রায়ের অপেক্ষা করতে হবে জানিয়ে তিসি বলেন, আপিল বিভাগ যে রায় দেবেন বা যে সমস্ত নির্দেশনা দেবেন তার আলোকে আশা করি সরকার পদক্ষেপ নেবে।উল্লেখ্য, ১৯৯৮ সালের ২৩ জুলাই ঢাকার সিদ্ধেশ্বরী এলাকা থেকে বেসরকারি ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্র শামীম রেজা রুবেলকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করেন তৎকালীন গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সহকারী কমিশনার (এসি) আকরাম হোসেন। ওই বছরের ২৪ জুলাই মিন্টো রোডের গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে মারা যান রুবেল।এ ঘটনায় রুবেলের বাবা রমনা থানায় এসি আকরামসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ মামলায় ২০০২ সালে বিচারিক আদালত এসি আকরামসহ ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন।এরপর তৎকালীন সরকার রুবেল হত্যা তদন্তের জন্য বিচারপতি হাবিবুর রহমান খানের সমন্বয়ে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত শেষে কমিটি ৫৪ ও ১৬৭ ধারা সংশোধনের পক্ষে কয়েকটি সুপারিশ করে।এ সুপারিশ বাস্তবায়িত না হওয়ার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) হাইকোর্টে রিট করেন। ওই রিট মামলার চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০০৩ সালের ৭ এপ্রিল এ ব্যাপারে ১৫ দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেন হাইকোর্ট।