বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘‘দেশটা আওয়ামী লীগের পিতৃক সম্পত্তি হয়ে গেছে অথচ মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে তারা সাহস পায়নি।’’ তিনি বলেন,‘‘ আওয়ামী লীগ সীমান্ত পারি দিয়েছে আর স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে যুদ্ধ করেছেন জিয়াউর রহমান।কিন্তু যুদ্ধ না করে তারা এখন মুক্তিযোদ্ধা।’’
শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি ইঙ্গিত করে খালেদা জিয়া বলেন, তিনি সব সময় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছেন।বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চাননি।বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছেন এবং দেশ স্বাধীন করেছেন।’’ চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে শনিবার রাতে বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে বেগম জিয়া বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগ মুখে ধর্ম নিরপক্ষেতার কথা বললেও বাস্তব চিত্রটা ভিন্ন।তারা ধর্ম নিরপক্ষেতা বিশ্বাস করেনা।তাই যদি হতো তাহলে সকল ধর্মের মানুষকে হত্যা করতো না।তাদের মনে যে কি আছে তা জানা কঠিন।’’
তিনি বলেন, ‘‘ বিএনপি সকল ধর্মের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী।কিন্তু বর্তমানে দেশে অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।আমরা চাই শান্তি, ঐক্য ও প্রতিবেশীর সঙ্গে সুসম্পর্ক।কারণ সমস্যার সমাধান মারামারিতে নয়, সমাধান করতে হয় আলাপ-আলোচনায়।’’
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম জিয়া বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগ দেশটাকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়ে প্রয়োজনে নিরাপত্তার খাতিরে দেশ ছেড়ে চলে যাবে।তাই সময় এসেছে সকলকে এক হওয়ার।’’
তিনি বলেন, ‘‘ দখল ও হত্যা আওয়ামী শাসকদলের জন্য নতুন কিছু নয়।স্বাধীনতার পর রাষ্ট্রক্ষমতায় থেকেও তারা দখল,হত্যা ও নির্যাতন চালিয়েছে।বর্তমানে দেশে কোনো ধর্মের মানুষের নিরাপত্তা নেই।এখন পর্যান্ত যত লোক হত্যা হয়েছে তার হত্যাকারীদের কেউ কি গ্রেফতার হয়েছে ? গ্রেফতার করা হয়নি কারণ এই সকল অপরাধীরা তাদেরই দলীয় লোক।এদের ধরেনি হয়তো এরা বাংলাদেশেও নেই।’’
নির্বাচন কমিশননের কঠোর সমালোচনায় খালেদা জিয়া বলেন, ‘‘এরা অপদার্থ।বোবা ও কালা।সম্প্রতি বলেছে নির্বাচন সুষ্ঠু করতে ট্যাঙ্ক লাগে।তাই বলছি জাতীয় নির্বাচন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে করতে হবে।তখন সেনাবাহিনীও মোতায়েন লাগবে কারণ সেনাবাহিনীর কাছেই তো ট্যাঙ্ক থাকে।’’
তিনি বলেন,‘‘ দেশে এখন গণতন্ত্র আইনের শাসন, মানবাধিকার,কথা বলার স্বাধীনতা নেই। ভিন্ন মত প্রকাশ করলেই মামলা, জেলে নিয়ে নির্যাতন শুরু হয়ে যায়।ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে একলা থাকবে, কোনো দল থাকবে না।দেশটা ধ্বংস করে দিয়ে যাবে আর আমরা শুধু চেয়ে থাকবো আকাশের দিকে তা হতে পারে না।’’
বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে বাংলাদেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। শুভেচ্ছা বিনিময়ের শুরুতেই বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে খালেদা জিয়াকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। তখন খালেদা জিয়াও আয়োজিতদের বুদ্ধ পূর্ণিমার শুভেচ্ছা জানান।
শুভেচ্ছা বিনিময়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সহ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এ্যাডভোকেট দীপেন দেওয়ান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. সুকোমল বড়ুয়া বক্তব্য রাখেন।
এছাড়াও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্ঠা রুহুল আলম চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা খন্দকার গোলাম আকবর, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মাসুদ আহমেদ তালুকদার, সু মঙ্গল ভিক্ষু, সাচিং ভ্র জেরী, দয়া নন্দ ভিক্ষু, শান্তি রক্ষিত থের, সুশীল বড়ুয়া, চন্দ্রগুপ্ত বড়ুয়া, প্রবীণ চন্দ্র চাকমা, সনত তালুকদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।