দুই দিনে বজ্রপাতে ৮১ জনের মৃত্যু, সহায়তা দিচ্ছে সরকার

আবহাওয়ার পরিবর্তন জনিত কারণে বাংলাদেশে বজ্রপাতের ঘটনা ঘটছে জানিয়ে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী েেমাফাজ্জল হোসেন মায়া বলেছেন, প্রাকৃতিক এই দুর্যোগে দুই দিনেই ৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে।মঙ্গলবার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।মন্ত্রী মায়া জানান, নিহতদের পরিবারকে ১০ থেকে ২৫ হাজার টাকা বিতরণের মাধ্যমে এ পর্যন্ত ১৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা অর্থ সহায়তা করা হয়েছে। এছাড়া আহতদেরকে সাড়ে ৭ হাজার টাকা থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়।

গত বছরের ২৭ আগস্ট মন্ত্রণালয় বজ্রপাতকে দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করেছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান মন্ত্রণালয়ের সচিব শাহ কামাল।গত ১২ ও ১৩ মে সারা দেশে বজ্রপাতে নারী-শিশুসহ ৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে। কালবৈশাখী ঝড়ে মারা গেছেন আরও ৫ জন।

বজ্রপাতকে দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করেছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি বজ্রাঘাতে নিহতদের পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা দেয়া হয়েছে।সম্প্রতি বজ্রাঘাতে ২৬ জেলায় ৮১ জনের প্রাণহানীর ঘটনায় গতকাল এক প্রেস ব্রিফিংয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ শাহ্ কামাল এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, গত বছর বজ্রাঘাতে ১৭ জনের প্রাণহানীর ঘটনায় ওই বছরের ২৭ আগস্ট বজ্রপাতকে দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করা হয়।মন্ত্রণালয়টির মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, বীরবিক্রম, এমপি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বজ্রাঘাতে নিহতদের পরিবারের প্রতি শোক ও সমবেদনা জানিয়ে বলেন, সরকার নিহতদের পরিবারকে ১০ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা করে মোট ১৪ লাখ ৭০ হাজার টাকার আর্থিক সহায়তা দিয়েছে। এছাড়া আহত ব্যক্তিদের ৭ হাজার টাকা থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত সহায়তা দেয়া হয়। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারনেই সাম্প্রতিক বজ্রপাতের সংখ্যা বেড়েছে ।

অনুষ্ঠানে বজ্রপাতের সময় সতর্কতামূলক বিষয়গুলো মেনে চলতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী।এসব সতর্কতা ও পরামর্শে বলা হয়, আকাশে ঘনকালো মেঘ দেখা দিলে বজ্রপাতের আশংকা তৈরী হয়। এজন্য বজ্রপাতের সময় ঘরে অবস্থান করাই নিরাপদ। প্রয়োজনে রাবারের জুতা পরে বাইরে বাইরে যাওয়া যেতে পারে। খোলা জায়গা, খোলা মাঠ বা উঁচু স্থানে বজ্রাঘাতের ঝুঁকি বেশী। তবে প্রয়োজনে ধানক্ষেত বা খোলা মাঠে থাকলে তাড়াতাড়ি হাঁটু গেড়ে, কানে আঙ্গুল দিয়ে, মাথা নিচু করে বসতে পড়তে হবে।

এতে বলা হয়, দালান বা কংক্রিটের ছাউনি বেশী নিরাপদ। টিনের চালা যথা সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে। উঁচু গাছপালা, বৈদ্যুতিক তার বা ধাতব খুঁটি, মোবাইল টাওয়ার থেকে দুরে থাকতে হবে। বজ্রপাতের সময় গাড়ির ভিতর অবস্থান করলে, গাড়ির ধাতব অংশের সাথে শরীরের সংযোগ ঘটানো যাবে না। সম্ভব হলে গাড়িটি নিয়ে কোন কংক্রিটের ছাউনির নিচে আশ্রয় নিতে হবে।
এ ছাড়া জানালার কাছাকাছি বা বারান্দায় অবস্থান না করা,। বাড়ির জানালা বন্ধ রাখা, ঘরের ভিতরে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম থেকে দূরে থাকা, মোবাইল, ল্যাপটপ, কম্পিউটার, ল্যান্ডফোন, টিভি, ফ্রিজসহ সকল বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ও ধাতব হাতলযুক্ত ছাতা ব্যবহার না করা, েেখালা মাঠে খেলাধুলা থেকে বিরত থাকা, ছাউনী বিহীন নৌকায় মাছ ধরতে না যাওয়া, নদীতে থাকলে নৌকার ছাউনীর নিচে অবস্থান করা, বজ্রপাত ও ঝড়ের সময় বাড়ির ধাতব কল, সিঁড়ি রেলিং, পাইপ ইত্যাদি স্পর্শ না করা এবং প্রতিটি ভবনে বজ্র নিরোধক দন্ড স্থাপনের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।