সন্ত্রাস-উগ্রবাদ দমনে একসঙ্গে কাজ করবে বাংলাদেশ-ভারত

সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থা দমনে ভারত বাংলাদেশকে দৃঢ়ভাবে সহায়তা করবে বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র সচিব ড. সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্কর। এ ব্যাপারে বাংলাদেশকে বার্তা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব বলেন, সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে যুদ্ধে বাংলাদেশকে দৃঢ় সমর্থনের কথা আমি বাংলাদেশকে জানিয়েছি। প্রতিবেশী হিসেবে ভারতের জন্য এটা প্রত্যক্ষ উদ্বেগের বিষয়। এ ইস্যুতে আমরা দ্বিপক্ষীয়ভাবে কাজ করব।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন মেঘনায় ভারত-বাংলাদেশের সচিব পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন দুই পররাষ্ট্র সচিব।বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হকও ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিবের কথার পুনরাবৃত্তি করে সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত দ্বিপাক্ষিকভাবে সন্ত্রাসবাদ দমন করবে। এ ক্ষেত্রে দু’দেশের মধ্যে সহযোগিতার যে কাঠামো রয়েছে তা আরও শক্তিশালী করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

বৈঠকে দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন ইস্যুর পর্যালোচনা হয়েছে বলেও জানান শহীদুল হক। এছাড়া তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির অগ্রগতি বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, আমরা এ বিষয়ে আশাবাদী।
সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিকভাবে কাজ করছি। এ বিষয়ে তথ্য (নোট) বিনিময় করেছি। আমাদের ও তাদের বিশ্লেষণের মধ্যে প্রচুর মিল আছে। আমরা মনে করি একসঙ্গে কাজ করলে এটা কমিয়ে আনা সম্ভব।

একইসঙ্গে দুদেশের সম্পর্ক, সীমান্ত নিরাপত্তা বিষয়ে আলোচনা হয়। দক্ষিণ এশিয়ার ক্রমবর্ধমান খরা কিভাবে দূর করা যায় সে বিষয়ে সহযোগিতার কথা আলোচনা হয়েছে’ বলেন পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক।

এছাড়া ভারতের নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরে একমত হওয়া বিভিন্ন ইস্যুর পর্যালোচনা হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানান উভয় সচিব। এসব বিষয়ের বেশির ভাগ ইস্যুতেই অল্প সময়ে অনেক অগ্রগতি হয়েছে উল্লেখ করে সন্তোষ প্রকাশ করেন তারা।সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নয়া দিল্লি সবসময় বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলে আশ্বস্ত করেছেন ভারতের সফররত পররাষ্ট্র সচিব এস জয়শঙ্কর। ঢাকার ভারতীয় কমিশন জানিয়েছে, বাংলাদেশে সম্প্রতি সন্দেহভাজন জঙ্গিদের হামলায় কয়েকজনের মৃত্যুর প্রেক্ষাপটে জয়শঙ্করের এই বক্তব্য এলো।

দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পর্যালোচনায় শহিদুল হকের আমন্ত্রণে বুধবার ঢাকায় পৌঁছার পর রাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন জয়শঙ্কর।

বৃহস্পতিবার সকালে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও বৈঠক করেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব।পরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বৈঠকে বসেন দুই সচিব। বৈঠক শেষে জয়শঙ্কর সাংবাদিকদের বলেন, আমি পররাষ্ট্র সচিবকে জানিয়েছি, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের লড়াইয়ের প্রতি জোরালো সমর্থন জানাতে এসেছি আমি।প্রতিবেশি দেশ হিসেবে এটি (সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ) আমাদের জন্য উদ্বেগের। এ ব্যাপারে ঢাকার সঙ্গে সবসময়ই যোগাযোগ রেখে চলেছে নয়াদিল্লি এবং (সন্ত্রাস দমনে) এক সাথে কাজ করে যাচ্ছি।গত বছরের শেষ থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে কয়েকজন ব্লগার, শিক্ষক ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টকে হত্যায় মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট ও আল-কায়েদার দায় স্বীকারের খবর গণমাধ্যমে এসেছে।তবে সরকার শুরু থেকেই দেশে বিদেশি জঙ্গি সংগঠনের অস্তিত্ব নেই বলে জানিয়ে আসছে। স্থানীয় জঙ্গিরাই এসব হামলা করছে বলে সরকারের দাবি।অবশ্য স্থানীয় এসব জঙ্গিদের সঙ্গে বিদেশি সংগঠনগুলোর যোগাযোগ থাকতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।সচিব পর্যায়ের বৈঠকে এ ব্যাপারে দুই পক্ষের মধ্যে তথ্য বিনিময় হয়েছে জানিয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক বলেন, “আমদের বিশ্লেষণে মিল রয়েছে।এ বিষয়ে দুই দেশ ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে বলেও জানান তিনি।বৃহস্পতিবারই ঢাকা ছাড়ার কথা রয়েছে জয়শঙ্করের।