মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসি কার্যকর হওয়া জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর জন্য বুধবার দুপুরে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে গায়েবানা জানাজা পড়া হয়৷ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগর ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতা-কর্মী, সমর্থক ও অনুসারীরা এতে অংশ নেন৷ জোহরের নামাজের পর এই জানাজা অনুষ্ঠিত হয়৷ জানাজা শেষে এতে অংশগ্রহণকারীদের বেশির ভাগ লোকজন বিজয়সূচক ‘ভি’ চিহ্ন দেখিয়ে মসজিদের উত্তর গেট দিয়ে বের হয়ে যান৷ এ সময় তাঁরা ‘নারায়ে তকবির, আল্লাহু আকবর’ স্লোগানও দিতে থাকেন৷ মঙ্গলবার রাতে নিজামীর ফাঁসি কার্যকর হয়৷ এ নিয়ে জামায়াতের চারজন নেতার ফাঁসি কার্যকর হলো৷
জামায়াত ঘোষিত গায়েবানা জানাজার কারণে বায়তুল মোকাররম মসজিদের আশপাশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়৷ ঢাকা মহানগর পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার আনোয়ার হোসেন বলেন, জামায়াতে ইসলামী মসজিদে গায়েবানা জানাজা কর্মসূচি দিয়েছে বলে তাঁরা জানতে পেরেছেন৷ এ কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যেন কোনো ধরনের অবনতি না হয়, সে জন্য পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে৷
দুপুর ১২টা েথেকে জামায়াত ও শিবিরের নেতা-কর্মী, সমর্থকেরা মসজিদে প্রবেশ করতে শুরু করেন৷ আলাপকালে ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতের সভাপতি মো. ইব্রাহিম জানালেন, তিনি গায়েবানা জানাজায় অংশ নিতে এখানে এসেছেন৷ গতকাল রাতে ফাঁসি কার্যকরের পর কেন্দ্র থেকে এই কর্মসূচি দেওয়া হয়৷ এখানে আসার জন্য কেন্দ্র থেকে মহানগরের নেতাদের জানানো হয়েছে৷
জামায়াতের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সারা দেশে গায়েবানা জানাজা কর্মসূচি পালনের কথা বলা হয়েছে৷ তবে ঢাকায় কোথায় কোথায় এই কর্মসূচি হবে, সে ব্যাপারে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কিছু বলা হয়নি
মঙ্গলবার রাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি কার্যকরের পর কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে পাবনার সাঁথিয়ার মনমথপুর গ্রামে বুধবার ভোর ৬.২৫ মিনিটে তার লাশ পৌঁছেছে৷ এরপর ৬.৫৩ মিনিটে লাশ নেওয়া হয় মনমতপুর গোরস্থান চত্বরে এবং ৭.০৩ মিনিটে তার জানাযা শেষে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে৷ এর আগে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার মাজহারম্নল ইসলাম নিজামীর লাশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকতর্া শফিকুল ইসলামের কাছে পৌঁছে দেন৷ তিনি পরিবারের কাছে লাশ হনত্মানত্মর করেন৷ নিজামীর ছেলে ব্যারিস্টার নাজির মোমিন পরিবারের পৰে লাশটি গ্রহণ করেন৷ এ সময় পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) সিদ্দিকুর রহমান, সাঁথিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন৷
নিজামীর জানাযা নামাজে ইমামতি করেন নিজামীর ছেলে ব্যারিস্টার নাজির মোমিন৷ জানাযা ও দাফন কাজে অংশ নিতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষ মনমথপুর মাদ্রাসা মাঠে উপস্থিত হয়৷
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) সিদ্দিকুর রহমান জানান, দাফনের পর কবরস্থান এলাকা ও গ্রামের বিভিন্ন স্থানে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছে৷ আগামী দু’দিন এভাবে মোতায়েন থাকবে পোশাকী ও সাদা পোশাকী আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা৷
মঙ্গলবার রাতে ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ার সাথে সাথে আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা ওই গ্রামটিতে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে৷ সংবাদ সংগ্রহে গ্রামে প্রবেশে সাংবাদিকদের উপর কড়াকড়ি আরোপ করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী৷ এতে ভোগনত্মিতে পড়েন গণমাধ্যমকর্মীরা৷