সংবাদপত্র শিল্পের প্রধান কাঁচামাল নিউজপ্রিন্ট আমদানিতে ৫ শতাংশ শুল্ক এবং ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট দেয়াতে ব্যয় বেশি হচ্ছে। তাই এ শিল্পকে বাঁচাতে আমদানি পর্যায়ে ৫ শতাংশ শুল্ক এবং ১৫ শতাংশ ভ্যাট মওকুফের দাবি জানিয়েছে নিউজপেপারস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব)। রোববার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলন কক্ষে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনায় এ প্রস্তাব দেন নোয়াবের সভাপতি ও দৈনিক প্রথম আলো’ সম্পাদক মতিউর রহমান।তিনি বলেন, বর্তমানে আমাদের এ নিউজপ্রিন্ট আমদানিতে ৫ শতাংশ শুল্ক এবং ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয়। অথচ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে নিউজপ্রিন্ট আমদানিতে শুল্ক হার শুন্য, শ্রীলংকায় ২ শতাংশ আছে। আর পৃথিবীর বড় বড় পত্রিকারগুলোও সেসব দেশেরই। তাই অন্যান্য দেশের সঙ্গে সমঞ্জস্য রেখে এই দেশীয় সেবা শিল্পকে বাঁচাতে আগামী বাজেটে নিউজপ্রিন্ট আমদানিতে শুল্কমুক্ত করার দাবি করছি।মতিউর রহমান বলেন, পত্রিকা শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে আমদানি করা নিউজপ্রিন্টের ওপর কোনো আমদানি কর থাকা উচিত নয়। কারণ এ কাঁচামাল পত্রিকা হিসেবে বিক্রি হওয়ার আগে মুদ্রণ, সংযোজন, মিশ্রণ ও কাটিংয়ের মাধ্যমে বড় ধরনের রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যায়। এছাড়া বর্তমানে সংবাদপত্রের জন্য নিউজপ্রিন্ট আমদানিতে এবং উৎপাদন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয়। আমরা এ ভ্যাট অব্যাহতি চাই।
সংবাদপত্রের কাঁচামাল যেমন কালি, প্লেট, প্রিন্টিং কেমিক্যাল আমদানি পর্যায়ে নির্ধারিত হারে যে শুল্ক দিতে হয় তা মওকুফ করার দাবিও জানান নোয়াব সভাপতি।তিনি আরো বলেন, বর্তমানে বিজ্ঞাপনদাতারা বিজ্ঞাপন বিল প্রদানের সময় ৪ শতাংশ হারে অগ্রিম আয়কর (এআইটি) কেটে রাখছেন। কিন্তু পরে এআইটি চালান সংগ্রহ করা খুব কষ্টদায়ক হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এআইটির অর্থ যথা সময়ে জমা না দেয়ায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি আমরা। তাই এআইটির বিকল্প পদ্ধতি চালু করার প্রস্তাব করছি। বর্তমান নিউজপ্রিন্ট বরাদ্দপত্রে দুই মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হয়। এতে করে অনেক হয়রানি শিকার হতে হয়। তাই এ ক্ষেত্রে দুই মন্ত্রণালয়ের পরিবর্তে শুধু তথ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাক্ষরে অনুমোদন হওয়ার ব্যবস্থা রাখার দাবি জানান তিনি।এনবিআরের চেয়ারম্যান নজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে আজকের প্রাক-বাজেট আলোচনায় আরও উপস্থিত ছিলেন ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন, সমকালের প্রকাশক একে আজাদ, ইত্তেফাকের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক তাসমিমা হোসেন, বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ এবং সদস্য (শুল্কনীতি) ফরিদ উদ্দিন, সদস্য (ভ্যাট নীতি) ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর হোসেন, প্রধান বাজেট সমন্বয়ক আকবর হোসেন প্রমুখ।