27-04-16-PM_Fast Track Project Monitoring Meeting-3

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন,যারা প্রকাশ্যে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে, তারাই আজ পরিকল্পিতভাবে মানুষকে কুপিয়ে হত্যা করে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এরা গুপ্ত হত্যাকারী।এদের টার্গেট মসজিদের ইমাম, মন্দিরের পুরোহিত, গির্জার পাদ্রী। এদের শিগগিরই চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা হবে।তিনি বলেন, দেশ যখন উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলছে, দারিদ্র্যের হার কমেছে, মাথাপিছু আয় বেড়েছে, তখন এই ধরনের অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করাই এদের লক্ষ্য। তারা হয়তো দেশের উন্নয়ন চায় না।বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দেশের উন্নয়নে ফার্স্ট ট্র্যাক প্রকল্পগুলোর মনিটরিং কমিটির ৪র্থ সভায় দেওয়া বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।সভা শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব ইহসানুল করিম ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের জানান, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, অশুভ শক্তি যতই চেষ্টা করুক, দেশের উন্নয়ন অব্যাহত থাকবে।প্রধানমন্ত্রী বলেন, হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ধরতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে। এদের চিহ্নিত করে ধরা হবে। জঙ্গিদের কোনো ধর্মও নেই। সীমাও নেই। মানুষ যখন নামাজ পড়ে, তখন এরা খুন করতে চায়।এসময় প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রে ঘরে ঢুকে আটজনকে গুলি করে হত্যারও নিন্দা জানান। তিনি বলেন, আশা করি যুক্তরাষ্ট্রও তাদের দেশে ওই হত্যাকাণ্ডের ব্যবস্থা নেবে।সভায় ১০টি প্রধান উন্নয়ন প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে খোঁজ খবর নেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় সংশ্লিষ্ট সবাইকে স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি। সাম্প্রতিক গুপ্তহত্যাগুলোর নিন্দা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যারা এর আগে আন্দোলনের নামে মানুষ হত্যা করেছে, তারাই এসব ঘটনার পেছনে। সরকার এ ধরনের হত্যাকাণ্ড দেখতে চায় না মন্তব্য করে সরকারপ্রধান বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শিগগিরই অপরাধীদের ধরতে পারবে বলে তিনি আশা করছেন।দুই দিনের ব্যবধানে ঢাকা ও রাজশাহীতে একই কায়দায় এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, এক সমকামী অধিকার কর্মী ও তার বন্ধু এক নাট্যকর্মী খুন হওয়ার পর বুধবার নিজের কার্যালয়ে ফার্স্ট ট্র্যাক প্রজেক্ট মনিটরিং কমিটির’ চতুর্থ সভায় প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।গত শনিবার সকালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক এএফএম রেজাউল করিম সিদ্দিকীকে তার বাসার কাছে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।এরপর সোমবার বিকালে কলাবাগানের লেক সার্কাস এলাকায় পার্সেল দেওয়ার কথা বলে বাসায় ঢুকে খুন করা হয় ইউএসএআইডি কর্মী জুলহাজ মান্নান ও তার বন্ধু লোকনাট্য দলের মাহবুব রাব্বী তনয়কে।প্রেস সচিব বলেন, সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডগুলোর প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সুপরিকল্পিতভাবে এসব হত্যাকাণ্ড ঘটানো হচ্ছে। টার্গেট হচ্ছেন মসজিদের ইমাম, পুরোহিত, পাদ্রী।…উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করা।

যারা উন্নয়ন চায় না তারাই এসব ঘটাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ বিষয়ে কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, তদন্তের মাধ্যমে শিগগিরই অপরাধীদের ধরা হবে বলে তিনি আশা করছেন।প্রেস সচিব বলেন, সব হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমরা চাই না- বাংলাদেশে এ ধরনের ঘটনা ঘটুক। তিনি বলেছেন, আন্দোলনের নামে যারা প্রকাশ্যে মানুষ হত্যা করেছে- তারাই এসব কাজে লিপ্ত।

কলাবাগানের ওই হত্যাকাণ্ডের পর পাঁচ থেকে সাতজনকে ‘আল্লাহু আকবার’ বলতে বলতে গুলি ছুড়ে পালিয়ে যেতে দেখার কথা বলেছেন একজন প্রত্যক্ষদর্শী।আর ঢাকার পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, চলে যাওয়ার সময় খুনীদের একজনকে এক পুলিশ সদস্য ধরে ফেললেও তাকে কুপিয়ে হত্যাকারীরা পালিয়ে যায়। পুলিশ সে সময় গুলি করে তাদের থামাতে চাইলেও আসরের নামাজের পর মসজিদফেরত মানুষের ভিড়ে তা আর সম্ভব হয়নি। প্রেস সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী ধর্মের নামে মানুষ হত্যারও সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ইসলাম ধর্মের নাম করে আছর, মাগরিব নামাজ না পড়ে, যে সময় মানুষ নামাজ পড়ে, সে সময় তারা মানুষ খুন করতে যায়।জঙ্গিদের কোনও ‘ধর্ম ও সীমানা’ নেই বলেও মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।

সভায় উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল, রেলমন্ত্রী মজিবুল হক,ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্যসচিব আবুল কালাম আজাদসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ।