গাজীপুরে চাঞ্চল্যকর স্কুলছাত্র মামুন হত্যার দায়ে সহোদর দু’ভাইসহ ৪ জনের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকরের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। এছাড়াও মামলার অন্য ধারায় আদালত দন্ডপ্রাপ্তদের প্রত্যেককে ৭ বছর করে সশ্রম কারাদন্ড ও ৫ হাজার টাকা করে জারিমানার রায় প্রদান করেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালতের বিচারক মোঃ ফজলে এলাহী ভূইয়া জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় প্রদান করেন।
ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হচ্ছে- গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের হাড়িবাড়ির টেক এলাকার আফজাল হোসেন সরকারের ছেলে জামান সরকার, একই এলাকার হামিদ ভ’ইয়ার ছেলে মোঃ সাকিল ভ’ইয়া ও মোঃ ইকবাল হোসেন ভ’ইয়া এবং কুড়িগ্রাম জেলার বাজারহাট থানার লতাবর গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে আবু সায়েম। মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় উজ্জল সরকার, সুমন খান ও আফজাল হোসেনকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের পূবাইলের হাড়িবাড়ির টেক এলাকার হাসান খন্দকারের মেয়ে রোকসানাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় প্রতিবেশী জামান সরকার। রোকসানার পরিবার ওই প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় জামান ক্ষুব্ধ হয়। এর জের ধরে জামান ২০০৪ সালের ১০ আগস্ট সকালে হাসান খন্দকারের ছেলে স্থানীয় ভাদুন উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম ছাত্র মামুনকে ফুসলিয়ে নিয়ে যায়। ছেলেকে না পেয়ে তার বাবা হাসান খন্দকার এ ঘটনায় জয়দেবপুর থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন। নিখোঁজ হওয়ার তিন দিন পর ১৩ আগস্ট ওই এলাকার শাহজাহান ভূইয়ার বাড়ির পূর্ব পাশে পায়খানার সেফটি ট্যাংকির ভেতর হাত-পা ও গলায় কালো কাপড় দিয়ে বাধা অবস্থায় মামুনের লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় নিহতের পিতা বাদি হয়ে জয়দেবপুর থানায় জামান সরকারসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পরে তদন্ত শেষে সিআইডির পরিদর্শক সুলতান মাহমুদ ২০০৬ সালের ১১ মার্চ অভিযুক্ত আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। মামলায় ১৫জন স্বাক্ষীর সাক্ষগ্রহণ করা হয়। দীর্ঘ শুনানী শেষে বৃহস্পতিবার আদালত এ রায় প্রদান করেন।
রাষ্ট্র পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান খান এবং আসামি পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আব্দুর রশীদ।