19-04-16-PM_44th Raising Day of BD Krishok League-20

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা চাই কৃষকের প্রতি সবার সম্মান জন্মাবে। তবে এখন দেখা যায় কৃষকের ছেলে পড়াশোনা শিখে কৃষক হতে চায় না, কোনো কোনো সময় তো বাবার পরিচয়ও দিতে চায় না সে ছেলে।এটি যেন না হয় সে জন্য কৃষককে তার যথাযথ সম্মান দিতে হবে।মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে কৃষক লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক সভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, সব ছাত্র-ছাত্রীকে মাঠে যেতে হবে। শিক্ষাকার্যক্রমের আওতায় তাদের কৃষি মাঠে নিয়ে যাওয়া উচিত, স্কুল-কলেজে এ জন্য যদি অতিরিক্ত নম্বরের ব্যবস্থাও করা লাগে তবে সেটি করতে হবে। শেখ হাসিনা বলেন, আমরা কৃষি উপকরণ কার্ড দিয়েছি, যা দুই কোটি কৃষক পাচ্ছেন। এছাড়া দেয়া হচ্ছে ১০ টাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সুবিধা, যা এক কোটি কৃষক পাচ্ছেন। আমরা দেশি মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিতে গবেষণা চালু করেছি এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে চতুর্থ স্থান নিয়েছি এখন।বিএনপির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, বিএনপি বলেছিল দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া ভালো না, এতে বিদেশি সাহায্য আসবে না। চিন্তা-চেতনায় কী পার্থক্য আমাদের সঙ্গে তাদের, একবার এটি ভাবুন! দেশের উন্নয়নে যথাযথ পরিকল্পনা গ্রহণ এবং সে অনুযায়ী কাজ বাস্তবায়ন করাই আওয়ামী লীগের দেশপ্রেম বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জাতির পিতার হাতে এই সংগঠন- কৃষক লীগ গড়ে ওঠে। তার নেতৃত্বেই মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা একটি স্বাধীন জাতি হয়েছি। আর বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য, বলেন প্রধানমন্ত্রী।তিনি বলেন, দেশের জনগণ আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসিয়েছে আর সে কারণেই কিছু কাজ করতে পারছি। অথচ একটা সময় ছিল যখন বিএনপি আমলে সারের দাবি করার কারণেই ১৮ জনকে গুলি করে মারা হয়েছিল। শেখ হাসিনা বলেন, ওই সময়ে কৃষককে কোনো রকম সহায়তাই দেওয়া হতো না। তখন তারা ব্যবসা করতে ক্ষমতায় এসেছিলো ফলে কোথায় কীসে লাভ হবে সেটাই খুঁজতো। এটাই ছিল তাদের লক্ষ্য। বিএনপি বলেছিল দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া ভালো না, এতে দেশে বিদেশি সাহায্য আসবে না।

চিন্তা-চেতনায় কী পার্থক্য তাদের সঙ্গে আমাদের। আওয়ামী লীগ দেশের উন্নয়ন চায়, দেশের উন্নয়ন পরিকল্পনাই আওয়ামী লীগের কাছে দেশপ্রেম। কারো কাছে হাত পেতে আমরা চলবো না। মাথা নতো করে চলবো না, এটাই আমাদের লক্ষ্য।দেশকে প্রতিনিয়ত প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করে এগুতে হচ্ছে, উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তার পরেও ‘৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে দুর্যোগ মোকাবেলা করেও কিভাবে সামনে এগুনো যায় আমরা তা করে দেখিয়েছি।কৃষি উন্নয়নে সরকারের নানা পদক্ষেপ তুলে ধরে তিনি বলেন, তার সরকার বর্গা চাষিদের কৃষি ব্যাংক থেকে অর্থায়নের ব্যবস্থা করেছে। তিনি বলেন, কৃষি ব্যাংকের শাখা তখন এতো ছিল না, তখন আমরা ঠিক করলাম- কৃষককে ব্যাংকে আসতে হবে না, ব্যাংক যাবে কৃষকের কাছে। হাটে হাটে যাবে ব্যাংক। কৃষককে সেবা দেবে। শেখ হাসিনা বলেন, এভাবেই সঠিক কৃষিবান্ধব ব্যবস্থা নেওয়ার কারণেই আজ কৃষিতে বিপ্লব ঘটেছে। দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে। একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন গবেষণা করে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, প্রথমে পাইলট প্রকল্প করেছিলাম- গাজীপুরের শ্রীপুরে। তবে সে অর্জন সবই ধ্বংস করে দেয় বিএনপি-জামায়াত জোট ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর।নতুন করে আবার শুরু করতে হয় আওয়ামী লীগকে। এখন কৃষি উপকরণ কার্ড পেয়েছে দেশের ২ কোটি কৃষক। ১০ টাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে পেরেছেন ১ কোটি কৃষক। দেশি মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিতে গবেষণা চালিয়ে সরকার দেশে মাছ উৎপাদনেও বিপ্লব ঘটাতে সক্ষম হয়।এখন আমরা বিশ্বে মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে চতুর্থ, বলেন প্রধানমন্ত্রী। কৃষি বিষয়ে যদি কোনো জরিপ হয়ে তাহলে প্রধানমন্ত্রী এক নম্বরে থাকবেন। শেখ হাসিনা জনবান্ধব, বাংলার গরিব মানুষের মমতাময়ী মা, যোগ করেন মতিয়া চৌধুরী। বাংলাদেশের কৃষির উন্নয়নে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সব ছাত্র-ছাত্রীকে মাঠে যেতে হবে। শিক্ষাকার্যক্রমের আওতায় তাদের কৃষি মাঠে নিয়ে যাওয়া উচিত, স্কুল-কলেজে এ জন্য যদি অতিরিক্ত নম্বরের ব্যবস্থাও করা লাগে তবে সেটি করতে হবে। শেখ হাসিনা বলেন, শুধু ঘরে বসে মজার মজার ফল, খাদ্য খেলেই হবে না। জানতে হবে কোন ফসল কী করে হয়, কেমন করে জন্মায়। আমাদের নতুন প্রজন্ম এ বিষয়ে জানলেই আগামীতে আরও কৃষি উন্নতি সম্ভব।তিনি বলেন, আমরা চাই কৃষকের প্রতি সবার সম্মান জন্মাবে। তবে এখন দেখা যায় কৃষকের ছেলে পড়াশোনা শিখে কৃষক হতে চায় না, কোনো কোনো সময় তো বাবার পরিচয়ও দিতে চায় না সে ছেলে।এটি যেন না হয়, সে জন্য কৃষককে তার যথাযথ সম্মান দিতে হবে, বলেন প্রধানমন্ত্রী।

’৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ কৃষি বিষয়ক সুপরিকল্পনা হাতে নেয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, তখন থেকেই আমরা সঠিক কৃষিবান্ধব ব্যবস্থা নিয়েছি। একটি বাড়ি একটি খামার করেছি আমরা। দীর্ঘ দিন গবেষণা করে এটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। যার পাইলট প্রকল্প ছিল গাজীপুরের শ্রীপুরে। তবে ২০০১ সালে সবই ধ্বংস করে দেয় বিএনপি-জামায়াত।কৃষি উন্নয়নে ও কৃষকের মুখে হাসি ফোটাতে তার সরকারের পদক্ষেপগুলো উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা কৃষি উপকরণ কার্ড দিয়েছি, যা ২ কোটি কৃষক পাচ্ছেন। এছাড়া দেওয়া হচ্ছে ১০ টাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সুবিধা, যা ১ কোটি কৃষক পাচ্ছেন। আমরা দেশি মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিতে গবেষণা চালু করি- এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে চতুর্থ স্থান নিয়েছি এখন। শেখ হাসিনা বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্য আয় এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ করবো আমরা। এ জন্য চাই কৃষির আরও উন্নতি সাধন। এছাড়া ২০২০ সালে জাতির জনকের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করবো, এতে আশা করছি- তখনই বাংলাদেশ মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হয়ে যাবে।

এর আগে বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন প্রধানমন্ত্রীকে জীবন্ত কিংবদন্তি উল্লেখ করে বলেন, তার হাতের ছোঁয়া পরশ পাথর। তিনি যেখানে হাত দিয়েছেন সফল হয়েছেন, দেশের উন্নয়ন করেছেন। এদেশের মানুষ সারাজীবন তাকে কৃতজ্ঞতা ভরে স্মরণ রাখবে।কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, সেই ’৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে ‘কৃষক বাঁচাও দেশ বাঁচাও’ কর্মসূচি শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি কৃষকও বাঁচিয়েছেন, দেশও বাঁচিয়েছেন। দেশে উন্নতি করেছেন। তবে ২০০১ সালে বিএনপি জোট ক্ষমতায় এসে দেশে অন্ধকার নিয়ে আসে। তবে ২০০৯ সালে ফের সুযোগ পেয়ে প্রধানমন্ত্রী দেশের উন্নয়ন শুরু করলেন। সব দিন থেকে তিনি দেশকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন, নিয়ে যাচ্ছেন।