মেয়র মান্নান ছবি(1)

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচিত প্রথম মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নানের সাময়িক বরখাস্তের আদেশ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছে হাইকোর্ট। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় কর্তৃক সাময়িক বরখাস্তের আদেশের সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাই কোর্ট বেঞ্চ সোমবার রুলসহ এ আদেশ দেন। আদালত অধ্যাপক এমএ মান্নানকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ কেন অবৈধ হবে না- তা জানতে চেয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, জ্যেষ্ঠ সচিব ও সহকারী সচিবসহ ছয় বিবাদীকে চার সপ্তাহের মধ্যে জবাব দিতে রুল জারী করেছে।

আদালতে অধ্যাপক এমএ মান্নানের পক্ষে শুনানি করেন খন্দকার মাহবুব হোসেন ও মো. আবু হানিফ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান।

জয়দেবপুর থানার একটি ফৌজদারি মামলায় মান্নানের বিরুদ্ধে পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্র ২০১৫ সালের ১২ মে গাজীপুরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের আদালতে গৃহীত হওয়ায় ওই বছরের ১৯ অগাস্ট স্থানীয় সরকার বিভাগ তাকে মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে। এ সাময়িক বহিস্কারাদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ৩১ মার্চ হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন এম এ মান্নান, যা সোমবার শুনানির জন্য ওঠে।

পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের (সিটি কর্পোরেশন-২ শাখা) সহকারি সচিব এ.কে.এম আনিছুজ্জামান স্বাক্ষরিত সাময়িক বরখাস্তের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র অধ্যাপক এমএ মান্নানকে স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন ২০০৯ (২০০৯ সালের ৬০ নং আইন) এর ধারা ১২ এর উপধারা (১) মোতাবেক সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বা কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র গৃহীত হলে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করার বিধান রয়েছে। এই ক্ষমতাবলে এমএ মান্নানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ফৌজদারি মামলার অভিযোগপত্র আদালতে গৃহীত হওয়ায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।

অধ্যাপক মান্নানের আইনজীবী আবু হানিফ পরে বলেন, হাইকোর্ট এম এ মান্নানের সাময়িক বরখাস্তের আদেশ স্থগিত করেছে। ফলে মেয়র হিসেবে তার দায়িত্ব পালনে আইনগত কোনো বাধা নেই।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে গাজীপুরের সার্ডি গেইট এলাকায় যাত্রীবাহীবাসে পেট্রোলবোমা হামলার মামলায় ওই বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় রাজধানী ঢাকার বারিধারার ডিওএইচএস’র নিজ বাসা থেকে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের (জিসিসি) মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা অধ্যাপক এম এ মান্নানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারপর থেকে তিনি আদালতের নির্দেশে বন্দি থাকেন। তাকে ২২ টি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। এসব মামলার প্রায় সবগুলোই বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অবরোধ ও হরতালকালে গাড়ী ভাংচুর, অগ্নি সংযোগ, হত্যা, নাশকতা, বিস্ফোরক ও পুলিশের সরকারি কাজে বাধা দানসহ বিভিন্ন আইনে দায়ের করা হয়েছে। তার অবর্তমানে গত বছরের ৮ মার্চ থেকে প্যানেল মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। অধ্যাপক এমএ মান্নান সবক’টি মামলায় জামিন লাভের পর গত ২ মার্চ উচ্চ আদালতের আদেশে তিনি জামিনে কারামুক্তি পান।