দেশের একমাত্র মিঠা পানির প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে স্বল্প পরিমাণে নমুনা ডিম ছাড়ল কার্প জাতীয় (রুই, কাতাল, মৃগেল ও কালিবাইশ) মা-মাছ। গত বুধবার (৬ এপ্রিল) দিবাগত রাত আনুমানিক ১২টার দিকে নমুনা ডিম ছেড়েছে মা-মাছ। ডিম ছাড়ার স্থান সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, গত বুধবার রাতে প্রায় শতাধিক ডিম সংগ্রহকারীরা অর্ধশতাধিক নৌকা, জাল ও ডিম আহরণের সরঞ্জাম নিয়ে হালদার হাটহাজারী অংশের গড়দুয়ারা, নয়াহাট বাজার, সুইচ গেইট, কাগতিয়ার টেক, বাড়িয়া ঘোনা, নাফিতের ঘাট, অংকুরী ঘোনা এলাকা থেকে জেলেরা নমুনা ডিম আহরণ করেছে।
হাটহাজারীর গড়দুয়ারা এলাকার ডিম সংগ্রহকারী মো. কামাল উদ্দিন সওদাগর এর সাথে কথা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, স্বল্প পরিমাণে নমুনা ডিম ছেড়েছে মা-মাছ। ডিম সংগ্রহ করতে শুধুমাত্র ৪০-৫০ নৌকা নিয়ে ডিম সংগ্রহকারী নদীতে নামে। গড়ে প্রতি নৌকায় ৫০-১০০ গ্রাম পর্যন্ত ডিম সংগ্রহ করতে দেখা গেছে। এখন হালদা নদীতে প্রচুর মা-মাছের বিচরণ রয়েছে। দুই একদিনের মধ্যে মেঘের গর্জন ও প্রবল বর্ষন হলে নদীতে পাহাড়ি ঢলের তোড়ে সৃষ্ট স্রোতে ডিম ছাড়বে কার্প জাতীয় মা-মাছ। তাই এখন পুরোপুরি প্রস্তুতি ডিম সংগ্রহকারীরা ।
তিনি আরো জানান, অবাধে মা-মাছ নিধন, হালদার বাঁক কাটা, রাবার ড্যাম ও এশিয়ান পেপার মিল ও ট্যানারির অপরিশোধিত বিষাক্ত বর্জ্য নদীতে পতিত হওয়া রোধ করতে না পারায় ডিম সংগ্রহকারীরা এবারও আশানুরুপ ডিম সংগ্রহ করতে পারবে না তিনি সংশয় প্রকাশ করছেন।
উল্লেখ্য যে, দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র মিঠা পানির প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র মিঠা পানির এই হালদা নদী বিশ্বের একমাত্র অন্যতম জোয়ার-ভাঁটার নদী। এখানে প্রতি বছর এই সময়ে কার্প জাতীয় রুই, কাতাল, মৃগেল ও কালিবাইশ সহ বিভিন্ন প্রজাতির মা মাছের নিষিক্ত ডিম ছাড়ে এবং জেলেরা ডিম সংগ্রহ করে পরে তা কয়েক দফায় বিকিকিনি করে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করে। অপার এই জীব বৈচিত্র ও মৎস্য সম্পদের অন্যতম রূপালী খনি জাতীয় অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রেখে চলেছে বহু বছর ধরে।