তনু হত্যার বিচারের দাবিতে ২৫ এপ্রিল আধাবেলা হরতাল

সোহাগী জাহান তনু হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে সরকারকে সময় বেঁধে দিল প্রগতিশীল ছাত্র জোট ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্য। ২৪ এপ্রিলের মধ্যে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা না হলে সংগঠন দুটি পরের দিন সারা দেশে আধাবেলা হরতাল পালনের হুমকি দিয়েছে।বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালনে বাধার মুখে এক সমাবেশ থেকে এ ঘোষণা দেন জোট দুটির সমন্বয়ক আশরাফুল আলম।আশরাফুল আলম বলেন, তনু হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদেও গ্রেপ্তার ও বিচারের ব্যবস্থার জন্য আমরা সরকারকে ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত সময় দিচ্ছি। যদি সরকার ব্যর্থ হয়, তাহলে ২৫ এপ্রিল সকাল ছয়টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সারা দেশে আধাবেলা হরতাল পালিত হবে। দেশের সব শ্রেণির- পেশার মানুষকে হরতাল সফলের আহ্বান জানান তিনি।

আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) চত্বর থেকে সংগঠন দুটির কয়েক শ নেতা-কর্মী মিছিল নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাওয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হন। পথে জাতীয় তিন নেতার মাজার ও দোয়েল চত্বর এলাকায় দুই দফা পুলিশের বাধার মুখে পড়েন তাঁরা। কিন্তু ওই ব্যারিকেড ভেঙে তাঁরা সামনে এগিয়ে যান। শিক্ষা চত্বর এলাকায় গেলে আবারও ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেয় পুলিশ। পরে সেখানে বসে সমাবেশ করেন জোট দুটির নেতা-কর্মীরা। ওই সমাবেশ থেকেই হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হয়।পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে তাঁদের ১৫ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন উল্লেখ করে আশরাফুল আলম বলেন, তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হাইকোর্ট মোড়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে নতুন এ কর্মসূচি ঘোষণা করে জোটের সম্বনয়ক ও ছাত্র ফেডারেশনে সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম সোহেল বলেন, তনু হত্যার ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা চলছে। প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করার চেষ্টা চলছে। রাষ্ট্র তদন্ত নামের নানান নাটক শুরু করেছে। সোহেল বলেন, সারাদেশে নারীর নিরাপত্তা নেই। অন্যদিকে নিরাপত্তাবাহিনী বাশঁখালীর মতো এলাকায় গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যা করছে। ছাত্রসমাজ এতোদিন শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে গেছে। কিন্তু সরকার তাতে কর্ণপাত করেনি। দেশে যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি চলছে ছাত্রসমাজ তা রুখে দেবে।তিনি আরো বলেন, ২৪ এপিলের মধ্যে তনু হত্যকারীর প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেপ্তার না করা হলে ২৫ তারিখ আধাবেলা হরতাল পালন করা হবে।

গত রোববার দেয়া ঘোষণা অনুযায়ী সকাল ১১টার দিকে প্রথমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এসে জড়ো হন বামপন্থি ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা। ে সেখান থেকে মিছিল নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কার্যালয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে দোয়েল চত্বর মোড়ে আসলে পুলিশ তাদের ব্যারিকেডের দিয়ে বাধা দেয়। এ সময় আন্দোলনকারীরা ব্যারিকেড ভেঙে মিছিল নিয়ে সচিবালয়ের দিকে রওনা হলে আবার তাদের হাইকোর্ট মোড়ে আবার ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেয় পুলিশ।

পরে আন্দোলনকারীরা হাইকোর্ট মোড়ে সমাবেশ করে তাদের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এসময় পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতিতে প্রগতিশীল ছাত্র জোট ও সামজ্যবাদ বিরোধী ছাত্র ঐক্যের ৭ জন আহত হয়েছে বলে তিনি জানান।রমনা জুনের এডিসি ইব্রাহিম খান সাংবাদিকদের বলেন, আমরা তাদের সচিবালয় ঘেরাও না করে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করার আহ্বান জানিয়েছিলাম। তারপরও সচিবালয় ঘেরাও করতে গেলে আমরা বাধা দিই। এসময় দুই পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছে। তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।