bbfireeye-doinikbarta

সার্ভার হ্যাক নয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের টাকা চুরি করা হয়েছে জালিয়াতের মাধ্যমে । এমন ধারণা এখন ক্রমেই তথ্য প্রমাণের দিকে অগ্রসর হচ্ছে । ছায়াতদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকজন জানিয়েছেন একটু অপেক্ষা করুন। শিগগিই সব জানতে পারবেন ।প্রযুক্তিগত গোপন তথ্য বেশিক্ষণ গোপন রাখা যায় না। আর প্রযুক্তির ব্যবহার করে যেসব অপরাধ সংগঠিত হয় তাও ধরা হয় প্র“ক্তির মাধ্যমে । এটিই সারা বিশ্বে স্বীকৃত উপায় । তারাও সেই পথে এগাচ্ছেন । তবে এ বিষয়টি নিয়ে যারা কাজ করছেন তাদেও স্বাধীনভাবে করার সুযোগ দিতে হবে।
কেননা অনেক সময় দেখা যায় ,তীরে এসে তরী ডুবে যাওয়ার উপক্রম হয়। তার বলেন, বিষয়পি স্পর্শকাতর। তাই কোন ভাবে যেন প্রভাবশালী মহল তদবিরের তদন্ত বাধাগ্রস্থ না হয় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। এদিকে,সন্দেহ ভাজনদেও কাছ থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য উদ্ধারে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৪ কর্মকর্তাাকে বৃহস্পতিবার গোপনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে ।এক পর্যায়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনরের তাদের রুমে ডেকে নিয়ে কথা বলেন। বিশ্লেষকরা বলছেন বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তপক্ষ কোনভাবেই এর দায় এড়াতে পারে না ।কারণ রিজার্ভ থেকে টাকা স্থানাস্তরের ব্যাপওে ৫টি মেসেজ আসার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়নি ।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কোনোভাবেই এর দায় এড়াতে পারে না। কারণ রিজার্ভ থেকে টাকা স্থানান্তরের ব্যাপারে ৫টি মেসেজ আসার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়নি বাংলাদেশ ব্যাংক।বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বিশ্লেষনে বলা হয়েছে , যারা এ কাজের সঙ্গে জড়িত তারা বাংলাদেশের ব্যাংকের নাড়িনক্ষত সবই জানতেন। সঙ্গত এখঅনে বাংলাদেশে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেও সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টি একরকমই প্রায় নিশ্চিত ।

দীর্ঘ সময় নিয়ে সব ধরনের তথ্য সংগ্রহ করে নিখুঁতভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরি করা হয়েছে। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রস্তুতি ও যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থার দুর্বলতাকেই ব্যবহার করা হয়েছে। তবে বাংলাদেশের কেউ সহায়তা করেছে কি না, তা এখনো পরিষ্কার নয়।যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে রাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের ১০১ মিলিয়ন বা ১০ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার চুরি করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের দাবি, ‘হ্যাক’ করে এ অর্থ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোও বলছে, আর্থিক লেনদেনের বার্তা আদান-প্রদানকারী ব্যবস্থা সুইফটের ( সোসাইটি ফর ওয়ার্ল্ডওয়াইড ইন্টার ব্যাংক ফিন্যান্সিয়াল টেলিকমিউনিকেশন-এসডব্লিউআইএফটি) বাংলাদেশ ব্যাংকের অংশে ঢুকে দীর্ঘদিন ধরে পুরো ব্যবস্থাটিকে নজরদারিতে রেখেই এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ ব্যাংকের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের কী পরিমাণ অর্থ চলতি হিসাবে (কারেন্ট অ্যাকাউন্ট) ছিল, সেই তথ্যও নেওয়া হয়েছে।এ ছাড়া কী কী উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংক থেকে বাংলাদেশের রিজার্ভের চলতি হিসাবের অর্থ লেনদেন বা স্থানান্তর করা হতো, এসব বিষয়ও পর্যবেক্ষণ করা হয়।

সূত্রগুলো বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকে বাংলাদেশের রিজার্ভের মোট যে অর্থ তার বড় অংশই বন্ডসহ বিভিন্ন ধরনের বিনিয়োগ উপকরণে বিনিয়োগ করে রাখা। আর নিয়মিত লেনদেনের জন্য একটি অংশ রাখা হয় চলতি হিসাবে। গড়ে এ চলতি হিসাবে এক বিলিয়ন বা ১০০ কোটি ডলারের মতো রাখা হতো বলে বাংলাদেশ ব্যাংক-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। চলতি হিসাবে নিয়মিত লেনদেনের জন্য রাখা অর্থের পুরোটাই চুরির চেষ্টা করা হয়েছিল। এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অথেনটিক’ ব্যবস্থা থেকে ৩৫টি ‘পরামর্শ বা অ্যাডভাইসও’ পাঠানো হয়েছিল। যদিও তার মধ্য থেকে ৫টি পরামর্শ স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর হয়ে যাওয়ায় তাতে ১০১ মিলিয়ন বা ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চলে যায়। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কায় যাওয়া ২০ মিলিয়ন বা ২ কোটি ডলার উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।বাংলাদেশ ব্যাংকসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, রিজার্ভের চলতি হিসাবের অর্থ থেকে দেশের বিভিন্ন ব্যাংক ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের হয়ে বৈদেশিক দেনা-পাওনা মেটানোসহ ঋণ পরিশোধ করা হতো। পরে তা ঋণগ্রহীতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করা হতো। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ঋণ পরিশোধ ও পরামর্শক ফি হিসেবে রিজার্ভের চলতি হিসাব থেকে অর্থ পরিশোধ করা হতো। সেই তথ্যকেও কাজে লাগিয়েছে এ অর্থ চুরির ক্ষেত্রে।একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের সুইফটের সংকেতলিপি ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ব্যাংকে অর্থ স্থানান্তরের যেসব পরামর্শ গিয়েছিল, সেগুলোতে কারণ হিসেবে পরামর্শক ফি ও ঋণ শোধের কথা উল্লেখ করা হয়।

এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে গ ফিলিপাইনে স্থানান্তরিত হয়ে যাওয়া ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ফিরিয়ে আনার বিষয়ে জোরালো আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহা সাংবাদিকদের বলেন, ‘ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও অ্যান্টি মানি লন্ডারিং কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে যথেষ্ট তৎপর। সে দেশে বেশ কিছু অগ্রগতি হয়েছে। আমরা এখন পর্যন্ত তাদের দিক থেকে যতটুকু জানতে পেরেছি তাতে অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে আশাবাদ আরও জোরালো হয়েছে।

এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে অত বড় ঘটনা ঘটলেও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ভারত গেছেন গভর্নর আতিউর রহমান। বৃহস্পতিবার সকালে তিনি দিল্লির উদ্দেশে দেশ ছাড়েন।ঘটনাটির বিষয়ে জানতে ই-মেইলে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কের যোগাযোগ বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রিয়া প্রিস্টর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তার জবাবে প্রিস্ট জানিয়েছেন, লেনদেনের নির্দেশগুলো দ্রুতগতির বার্তা আদান-প্রদানকারী সুইফটের মাধ্যমে যথাযথ প্রক্রিয়া ও প্রটোকল অনুসরণ করে এসেছিল। ঘটনার পর থেকে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছে ফেড। সেই সঙ্গে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতাও অব্যাহত রয়েছে। প্রিস্ট তাঁর ই-মেইলে আরও বলেন, এ লেনদেনের ক্ষেত্রে ফেডারেল রিজার্ভ সিস্টেমের অপব্যবহার করা হয়েছে, এমন কোনো প্রমাণ মেলেনি।

হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের আট কোটি ডলারের বেশি হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা তদন্তে যুক্তরাষ্ট্রের সাইবার নিরাপত্তা কোম্পানি ফায়ারআইয়ের ম্যানডিয়েন্ট ফরেনসিক বিভাগের সহযোগিতা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় বড় সাইবার চুরির ঘটনাগুলোর বেশ কয়েকটির তদন্ত করেছে সিলিকন ভ্যালির কোম্পানি ফায়ারআই। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরামর্শক ওয়ার্ল্ড ইনফরমেটিক্সই অর্থ লোপাটের তদন্তে ফায়ারআইকে সম্পৃক্ত করেছে বলে সংশ্লিষ্ট দুজন রয়টার্সকে জানিয়েছেন।

ওয়ার্ল্ড ইনফরমেটিক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রাকেশ আস্তানাই এ কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা। এক সময় বিশ্ব ব্যাংকের তথ্য ব্যবস্থাপনা ও প্রযুক্তি বিভাগে পরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। রয়টার্স বলছে, আস্তানাই বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ চুরি তদন্তে ম্যানডিয়েন্টকে এনেছেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। তবে বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় তারা কেউ নাম প্রকাশ করতে চাননি।
তাদের একজন বাংলাদেশ ব্যাংকের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঞ্চিত অর্থ হ্যাকাররা কীভাবে চুরি করল তা খতিয়ে দেখতে যুক্তরাষ্ট্রও সহযোগিতার প্রস্তাব দিয়েছে।

ব্যাংকের টাকা চুরির যেসব ঘটনা এ পর্যন্ত বিশ্বে ঘটেছে, তার মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের এ ঘটনাকে অন্যতম বড় বলছে রয়টার্স। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) ও জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট এই তদন্ত নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা করেছে বলেও খবর দিয়েছে সংবাদ সংস্থাটি।অবশ্য এফবিআই, ইউএস সিক্রেট সার্ভিস, জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট ও ইউএস ট্রেজারির ক্রাইমস এনফোর্সমেন্ট নেটওয়ার্কের প্রতিনিধিরা বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেননি।গত মাসে অর্থ লোপাটের ওই ঘটনা ঘটলেও তা প্রকাশ্যে আসে গত সপ্তাহে ফিলিপিন্সের একটি পত্রিকার খবর হয়ে।

ডেইলি ইনকোয়ারার বলেছে, সুইফট মেসেজিং সিস্টেমে জালিয়াতির মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ সরানো হয় ফিলিপিন্স ও শ্রীলঙ্কার ব্যাংকে।শ্রীলঙ্কায় যাওয়া দুই কোটি ডলার মাঝপথে আটকানো গেলেও ফিলিপিন্সের পাঁচটি অ্যাকাউন্টে নেওয়া ৮ কোটি ডলার ক্যাসিনো হয়ে হংকংয়ে পাচার হয়ে গেছে বলে পত্রিকাটির খবর।নিউ ইয়র্ক ফেডারেল রিজার্ভ কর্তৃপক্ষ কেবল বলেছে, এ ঘটনার তদন্তে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে কাজ করছে তারা। তাদের দাবি, এই জালিয়াতির জন্য তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা হ্যাকাররা ভাঙতে পারেনি। রয়টার্স লিখেছে, সাইবার অপরাধীরা কীভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নেটওয়ার্কে ঢুকেছে, লুট হওয়া অর্থ কোথায় কোথায় গেছে এবং কোনো টাকা উদ্ধার করা যাবে কি না- এসব প্রশ্নের উত্তর মিলতে পারে যুক্তরাষ্ট্রের তদন্ত থেকে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দুই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হ্যাকাররা বাংলাদেশ ব্যাংকের সিস্টেমে ঢুকেই পেমেন্ট ট্রান্সফারের ক্রেডেনশিয়াল চুরি করে। এরপর ভুয়া সুইফট মেসেজের মাধ্যমে ফেডারেল রিজার্ভকে অর্থ স্থানান্তরের অনুরোধ পাঠানো হয়।ফেব্র“য়ারির প্রথম দিকে এক সপ্তাহের মধ্যে এরকম প্রায় তিন ডজন অনুরোধ যায় ফেডারেল রিজার্ভে। সব মিলিয়ে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার স্থানান্তর করতে বলা হয় বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে।

এর মধ্যে চারটি অনুরোধের বিপরীতে ফিলিপিন্সের এক ব্যাংকের পাঁচটি অ্যাকাউন্টে মোট ৮১ মিলিয়ন ডলার পাঠায় যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ।পঞ্চম আদেশে শ্রীলঙ্কার একটি ‘ভুয়া’ এনজিওর অ্যাকাউন্টে ২০ মিলিয়ন ডলার পাঠানো হলেও বানান ভুলে সন্দেহ জাগায় শেষ মুহূর্তে তা আটকে যায়।যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে চুরি যাওয়া যে টাকা ফিলিপাইনস ব্যাংকে গেছে, তার বড় একটি অংশ দেশটির ক্যাসিনো শিল্পে ঢুকেছে। এ পরিমাণ ৪৬ মিলিয়ন ডলার বলে জানিয়েছে ফিলিপাইনস অ্যামিউজমেন্ট গেমলিং করপোরেশন (পেগকর)।ক্যাসিনো তদারকিতে নিয়োজিত রাষ্ট্রীয় এ সংস্থাটি জানিয়েছে, ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা আসার পর পরই দু’জায়গায় তা দ্রুত স্থানান্তর করা হয়। এর মধ্যে ২৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার গেছে সোলারি রেসোট অ্যান্ড ক্যাসিনোতে এবং বাকি ২০ মিলিয়ন ডলার গেছে ইস্টার হাওয়াই ক্যাসিনো অ্যান্ড রেসোটে।ফিলিপাইনের একটি ব্যাংকের পাঁচটি অ্যাকাউন্টে ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার স্থানান্তর করে চোরেরা। ওই অর্থ যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের চুরি যাওয়া টাকার অংশ বলে মনে করা হচ্ছে।

ক্যাসিনোতে খরচ হওয়া টাকা ফিলিপাইনে পাঠানো অর্থের ৫৬ শতাংশ বলে জানিয়েছে তদারকিতে নিয়োজিত সংস্থা পেগকো। বাকি ৪৪ শতাংশ অর্থের গতিপথ সম্পর্কে কোনো তথ্য তাদের জানা নেই বলে জানিয়েছেন পেগকোর একজন কর্মকর্তা। ওই কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে শুক্রবার (১১ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ম্যানিলা থেকে প্রকাশিত ইংরেজি দৈনিক ইনকোয়ারার।উল্লেখ্য, ম্যানিলাভিত্তিক ইংরেজি এ দৈনিক গত মাসে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ অ্যাকাউন্ট থেকে হ্যাকারদের টাকা চুরি নিয়ে প্রথম প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর ফিলিপাইন সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা তৎপর হয়ে ওঠে। বাংলাদেশের গণমাধ্যমে ওই পত্রিকার বরাত দিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রিজার্ভ অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা লোপাটের কথা স্বীকার করে। ইনকোয়ারারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ অ্যাকাউন্ট থেকে ফিলিপাইনে একটি ব্যাংকের ৫টি অ্যাকাউন্টে এ টাকা পাঠানো হয় গেল ফেব্র“য়ারি মাসের ৫ থেকে ৯ তারিখের মধ্যে। পেগকোর কর্মকর্তা আরও জানান, অ্যান্টি মানি-লন্ডারিং কাউন্সিল (এএমএলসি) আবেদন জানালে আদালত ব্যাংকে গচ্ছিত টাকা লেনদেনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। ১ মার্চ এ নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। এর আগ পর্যন্ত বিদেশ থেকে আসা এ টাকা লেনদেন হচ্ছিল ক্যাসিনো টেবিলে। সবই চলছিল স্বাভাবিক নিয়মে। গোল বাধে দ্য ইনকোয়ারারের প্রতিবেদন প্রকাশের পর।

এ পর্যন্ত ফিলিপাইনে আসা চুরি যাওয়া কত টাকা এএমএলসি উদ্ধার করতে পেরেছে কিংবা উদ্ধার করতে পারলে সে টাকা বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে কি-না সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। সংবাদ মাধ্যমের অনুরোধ সত্ত্বেও এ বিষয়ে কিছু বলতে অপারগতা জানিয়েছে এএমএলসি কর্মকর্তারা।বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ চুরির ঘটনায় সন্দেহভাজন ছয়জনের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে ফিলিপাইনের মুদ্রাপাচার প্রতিরোধ কর্তৃপক্ষ।

এদিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলেছে,শালিকা ফাউন্ডেশন নামে শ্রীলঙ্কার একটি এনজিওর ডয়চে ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছিল ২ কোটি ডলার। সুইফট মেসেজিং সিস্টেমের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ অ্যাকাউন্টের অর্থ সরানো হয় শ্রীলঙ্কার ব্যাংকেও।কিন্তু পেমেন্ট অর্ডারে ‘ভড়ঁহফধঃরড়হ’ এর জায়গায় লেখা হয়েছিল ‘ভধহফধঃরড়হ’, তাতে ব্যাংক কর্মকর্তাদের সন্দেহ হয়। তখন টাকা অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর আটকে দেয়া হয়। পরে ওই ব্যাংক কর্তৃপক্ষ যোগাযোগ করে হয় বাংলাদেশ ব্যাংকে।