acc-chairman-iqbal mahmud-doinikbarta

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক)চেয়ারম্যান পদে সাবেক সিনিয়র সচিব ইকবাল মাহমুদকে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। একইসঙ্গে রাষ্ট্রীয় দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটির কমিশনার পদে নিয়োগ পেয়েছেন সাবেক জেলা ও দায়রা জজ এএফএম আমিনুল ইসলাম।বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হয়েছে বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মাকসুছুর রহমান পাটওয়ারী। ইকবাল মাহমুদ দুদকের সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামানের স্থলাভিষিক্ত হলেন।জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব ইকবাল মাহমুদকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়া হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ইকবাল মাহমুদ ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ এ এফ এম আমিনুল ইসলামকে দুদকের কমিশনার নিয়োগ করা হয়।এর মধ্য থেকে ইকবাল মাহমুদকে চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

দুদকের চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান ও কমিশনার মো. সাহাবুদ্দিনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ১৩ মার্চ। এ দুটি শূন্য পদে নিয়োগ পেলেন ইকবাল মাহমুদ ও এ এফ এম আমিনুল ইসলাম। বর্তমানে দুদকে কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালনরত নাসিরউদ্দীন আহমেদ সহ তিন সদস্যের কমিশন পুনর্গঠিত হলো।

ওই দুই পদে নিয়োগের জন্য গত ২ ফেব্র“য়ারি আপিল বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের বাছাই কমিটি গঠন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এম মোয়াজ্জাম হোসেন, মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মাসুদ আহমেদ, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান ইকরাম আহমেদ এবং অবসরপ্রাপ্ত মন্ত্রিপরিষদ সচিব এম আবদুল আজিজ।

এর মধ্যে অবসরপ্রাপ্ত মন্ত্রিপরিষদ সচিব এম আবদুল আজিজকে কমিটির সাচিবিক দায়িত্ব দেওয়া হয়। এ কমিটি ‘বাছাই’ শেষে দুদকে নিয়োগ উপযোগী চারজনের নাম রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করেন। সেখান থেকে এ দুজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়।

বিসিএস ১৯৮১ব্যাচের কর্মকর্তা ইকবাল মাহমুদ দুদক চেয়ারম্যান মো.বদিউজ্জামানের স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব থাকা অবস্থায় ২০০৮ সালের জুন মাসে পদোন্নতি পেয়ে সচিব হন ইকবাল মাহমুদ। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তাকে সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের (বর্তমান জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়) সচিব করা হয়। এরপর ২০১২ সালে সরকার ‘সিনিয়র সচিব নামে নতুন পদ সৃষ্টি করলে আরও সাতজনের সঙ্গে ইকবাল মাহমুদও ওই পদ পান। সে সময় তিনি ছিলেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব। ওই বছর নভেম্বরে তিনি এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) বিকল্প নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্ব পান। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে তার ওই দায়িত্বের মেয়াদ শেষ হয় এবং তিনি অবসরোত্তর ছুটিতে যান। গত বছর বিটিআরসির চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেওয়ার পরও পরে সেটা বাতিল করা হয়।

২০০৪ সালে দুর্নীতি দমন কমিশন গঠিত হলে বিচারপতি সুলতান হোসেন খানকে চেয়ারম্যান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য মনিরুজ্জামান মিঞা ও অডিট বিভাগের কর্মকর্তা মনিরুদ্দীন আহমেদকে কমিশনার নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০০৭ সালে এক এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়ের দাওয়াতের’ মাধ্যমে তাঁদের সরিয়ে দিয়ে চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয় সাবেক সেনাপ্রধান হাসান মশহুদ চৌধুরীকে। কমিশনার হন অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ হাবিবুর রহমান ও মনযুর মান্নান। ২০০৯ সালে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর হাসান মশহুদ চৌধুরী পদত্যাগ করে দুদক থেকে সরে গেলেও থেকে যান দুই কমিশনার। চেয়ারম্যানের শূন্যপদে নিয়োগ পান সাবেক সচিব গোলাম রহমান। ২০১১ সালের ১৪ মার্চ কমিশনারের পদ দুটি শূন্য হলে সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. বদিউজ্জামান ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়োগ দেওয়া হয়।

২০১৩ সালে গোলাম রহমানের মেয়াদ শেষে চেয়ারম্যান হন মো. বদিউজ্জামান এবং কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পান এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান নাসিরউদ্দীন আহমেদ। দুদকের মূল আইনে কমিশনারদের মেয়াদ চার বছর হলেও ২০১৩ সালে এক সংশোধনীর মাধ্যমে মেয়াদ এক বছর বাড়িয়ে পাঁচ বছর করা হয়। সে হিসেবে বদিউজ্জামান ও মো. সাহাবুদ্দিনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ১৩ মার্চ।