শাহজাহান-খান.

ঢাকাস্থ পাকিস্তান দূতাবাস প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে বলে মন্তব্য করেছেন নৌ-পরিবহণমন্ত্রী শাহজাহান খান।বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ বস্ত্র ও পোশাক শিল্প শ্রমিকলীগ আয়োজিত সংগঠনটির ১১তম জাতীয় কাউন্সিলে তিনি এ মন্তব্য করেন।শাহজাহান খান বলেন, পাকিস্তান রাষ্ট্রটি যেমন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করছে, ঠিক তেমনি ঢাকাস্থ পাকিস্তান দূতাবাস আমাদের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করে চলেছে। দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে পাকিস্তানসহ সব আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। পাশাপাশি দেশে অবস্থানরাত পাকিস্তানের দোসর, আল-বদর, রাজাকারদের বিরুদ্ধেও রুখে দাঁড়াতে হবে।তিনি বলেন, যে ঘরে পাপ থাকে, লক্ষ্মী সে ঘরের দরজা দিয়ে পালিয়ে যায়। একাত্তরে যারা এ দেশে জুলুম, নির্যাতন, ধর্ষণ করেছে তাদের দোসররা এখনো এদেশে আছে। জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া, এরশাদরা এদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছে। পাপীদের দেশ থেকে উৎখাত করতে হবে।

হরতালকারীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে নৌমন্ত্রী বলেন, দেশে গণতন্ত্র আছে বলেই কথা বলতে পাড়ছেন, মিটিং করতে পাড়ছেন। কিন্তু গণতন্ত্রের নামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতে দেয়া হবে না।পহেলা বৈশাখে নারীদের যৌন নিপীড়নের ঘটনাকে ‘তেমন বিষয় না’ বলে করা মন্তব্য প্রত্যাহার করে নিয়েছেন নৌমন্ত্রী শাজাহান খান।আন্তর্জাতিক নারী দিবসে মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে তার এই বক্তব্য ঘিরে তুমুল সমালোচনা হচ্ছে। তার মধ্যেই বুধবার নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বক্তব্য প্রত্যাহারের কথা জানায়।এতে বলা হয়, পহেলা বৈশাখে নারীদের লাঞ্ছনার বিষয়ে মন্ত্রী তার বক্তব্যে যা বোঝাতে চেয়েছেন তা সঠিকভাবে উপস্থাপিত হয়নি।এ বিষয় নিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি দেখা দেওয়ায় তিনি (নৌমন্ত্রী) সে বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।এই বক্তব্যকে কেন্দ্র করে কেউ মনে কষ্ট পেয়ে থাকলে সেজন্য দুঃখও প্রকাশ করেছেন শাজাহান খান।

মঙ্গলবারের ওই অনুষ্ঠানে পহেলা বৈশাখে নারীদের যৌন নিপীড়নের ঘটনাকে তেমন বিষয় না’ বলে মন্তব্যের ব্যাখ্যায় শাজাহান খান বলেছিলেন, পহেলা বৈশাখে অনেক মানুষ রাস্তায় থাকি।কোটি কোটি মানুষের এই দেশে ঢাকা শহরে প্রায় দুই কোটি মানুষ থাকে। তার মধ্যে এমন কী ঘটনা ঘটেছে একটা সংবাদ হওয়ার মতো ঘটনা। একটা টুকিটাকি ঘটনা হতেই পারে। এতগুলো মানুষের মধ্যে এটা তেমন কোনো বিষয়ই না।গত বছর পহেলা বৈশাখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় নারীদের যৌন নিপীড়নের ঘটনায় দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় বয়ে গিয়েছিল।জাতীয় কাউন্সিলে উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘জিএসপি দেয়ার জন্য আমেরিকা যেসব শর্ত দিয়েছিলো তার সবই পূরণ করা হয়েছে। কিন্তু দেশিয় কুচক্রীদের আন্তর্জাতিক চক্রান্তে বাংলাদেশ জিএসপি পাচ্ছে না। আপনারা জানেন, বাংলাদেশকে জিএসপি না দিতে খালেদা জিয়া ওয়াশিংটনে চিঠি পাঠিয়েছিলো। জিএসপি বন্ধে খালেদা ও তার দল চক্রান্ত করেছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের অগ্রগতির পেছনে গার্মেন্টস শ্রমিক ভাই-বোনদের অবদান আছে। আপনাদের আহ্বান জানাই, আসুন সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে আরো শক্তিশালী করি।২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস ঘোষণা এবং একাত্তর সালে বাংলাদেশের গণহত্যাকে স্বীকৃতি দিতে জাতিসংঘের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ করতে আনুরোধ জানান শাহজাহান খান।তিনি বলেন, পাকবাহিনী ওই একরাতে আমাদের শুধু হত্যা করতেই চাইনি, আমাদের বাঙ্গালি জাতিসত্ত্বাকেও ধ্বংস করে দিতে চেয়েছিল। পরবর্তীতে ৯ মাসের যুদ্ধে ৩০ লাখ নিরাপরাধ মানুষকে হত্যা করেছে। সৃষ্টি করেছে বর্বরতম গণহত্যার ইতিহাস, যা সংখ্যার দিক থেকে ইহুদি হলোকাস্ট ও রুয়ান্ডার গণতহ্যাকে অতিক্রম করেছে।শাহজাহান খান আরো বলেন, এই গণহত্যার হোতা পাকিস্তানি সেনাদের বিচার হয়নি বলে লাখ লাখ বাঙালি মর্মাহত। এদিকে, পশ্চিমা দেশগুলো নানা ইস্যু তৈরি করে বাংলাদেশের গণহত্যার বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছে। এজন্য ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসাবে ঘোষণার পদক্ষেপ নিতে হবে।আয়োজক সংগঠনের সভাপতি জেডএম কামরুল আনামের সভাপতিত্বে কাউন্সিলে আরো বক্তব্য দেন, জাতীয় শ্রমিক লীগের কার্যকরী সভাপতি ফজলুল হক মিন্টু, সাধারণ সম্পাক সিরাজুল ইসলামসহ অন্যান্য নেতারা।