09-03-16-Cox Bazar_Biman Crash-7

কক্সবাজারের নাজিরাটেক সমুদ্র পয়েন্টে চিংড়ি পোনাবাহী একটি বেসরকারি কার্গো প্লেন বিধ্বস্তের ঘটনায় নিখোঁজ দু’জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এনিয়ে কার্গো প্লেনে থাকা চারজনের মধ্যে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে।এ ঘটনায় কো-পাইলট পেট্রো ভিবেন ওরফে কূলথানব (৪৫) আহতাবস্থায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। নিহতরা হলেন, পাইলট ক্যাপ্টেন গোফরে ওরফে মুরাদ (৪৮), ফাস্ট অফিসার ইভান ও ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার আদ্রিদি। তারা হতাহত চারজনই রাশিয়ার নাগরিক। বুধবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে নাজিরাটেক সমুদ্র পয়েন্টে ট্রু-এভিয়েশনের এ কার্গো প্লেন বিধ্বস্ত হয়।

এদিকে,এ দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ৫০ লাখ টাকার চিংড়ি পোনা সাগরের পানিতে ভেসে গেছে বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।কক্সবাজার বিমানবন্দরের ম্যানেজার সাধন কুমার মোহন্ত জানান, সকাল সোয়া ৯টার দিকে রানওয়ে থেকে উড্ডয়নের কয়েক মিনিট পর চার আরোহী নিয়ে উড়োজাহাজটি সমুদ্রের নাজিরারটেক পয়েন্টে বিধ্বস্ত হয়।এএন-২৬ মডেলের ওই উড়োজাহাজটি কক্সবাজার ও যশোরের মধ্যে চিংড়ি পোনা পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত হতো বলে কক্সবাজার সদর থানার ওসি মো. আসলাম হোসেন জানান।ট্রু এভিয়েশনের স্টেশন ম্যানেজার এস এম হাসনাত জাহান জানান, হতাহতরা সবাই ইউক্রেইনের নাগরিক। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেনও তাদের জাতীয়তার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।সৈকত থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে সাগরে বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার পরপরই স্থানীয় জেলেরা উদ্ধার কাজ শুরু করে। পরে নৌবাহিনী,কোস্ট গার্ড ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তল্লাশিতে যোগ দেন।

দুর্ঘটনার পরপরই স্থানীয় জেলেদের সহায়তায় ওই বিমানের ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার কুলিশ আদ্রে (৪৭) ও কো ক্রু ডলোডায়মারকে (৪৪) উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।তাদের মধ্যে আদ্রেকে মৃত ঘোষণা করা হয় এবং ডলোডায়মারকে জরুরি চিকিৎসা দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেওয়া হয় বলে সদর হাসপাতলের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নোবেল কুমার বড়ুয়া জানান।কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিসের অপারেশন অফিসার আবদুল মজিদ জানান, বিমানটির লেজের একটি অংশ পানির উপরে ভাসছিল। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাগরে ভাটা শুরু হলে বিমানটি ঘটনাস্থল থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে সরে যায়। এ কারণে উদ্ধার কাজ ব্যাহত হয়।বিকালে সোনাদিয়া এলাকায় ওই বিমানের ভেতরেই পাইলট মুরাদ কাপারত ও কো-পাইলট ইভান ডেমানের লাশ পাওয়া যায় বলে সদর থানার অপারশেন অফিসার মো. আবদুর রহিম জানান।কক্সবাজার বিমানবন্দরের ম্যানেজার সাধন কুমার মোহন্ত বলেন, দুর্ঘটনায় পড়া ওই বিমানে চিংড়ি পোনা ভর্তি ৯৭২টি বাক্স ছিল। তবে ঠিক কী কারণে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, উড্ডয়নের পরপরই বিমানটি যশোরযাত্রা বাতিল করে কক্সবাজারে জরুরি অবতরণের জন্য বার্তা পাঠায়। কিন্তু এর পরপরই নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ। নৌবাহিনীর জাহাজ অপরাজেয় ও অতন্দ্র এবং একটি মেরিটাইম পেট্রোল এয়ারক্র্যাফট এই উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয় বলে ঢাকায় নৌ সদর দপ্তরের লেফটেন্যান্ট মো. বদিউজ্জামান জানান।