01ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা ফিফার নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন সুইজারল্যন্ডের নাগরিক জিয়ানি ইনফেন্টিনো। ১১৫ ভোট পেয়ে তাঁর নিকটতম প্রতিদন্দ্বীর চেয়ে ২৭ ভোটের ব্যবধানে জয়ের দেখা পান তিনি। ফিফার সুনাম এবং ভাবমূর্তি আবারও ফিরিয়ে নিয়ে আসা এখন তাঁর অন্যতম চ্যলেঞ্জ।

সাবেক প্রেসিডেন্ট সেফ ব্ল্যটারের উত্তরসূরী হিসেবে ফিফার দায়িত্ব নিয়েছেন ইউরোপিয়ান ফুটবলের অধিকর্তা জিয়ানি ইনফেন্টিনো। নির্বাচিত হওয়ার পর ঘন্টা খানিকের মধ্যে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন তিনি। সেখানে মি. ইনফেন্টিনো জোর গলায়, স্পষ্ট করে বলেন, ফিফার হারানো সম্মান ও ইতিবাচক ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনাই এখন তাঁর সামনে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ লড়াই।

উল্লেখ্য, দুর্নীতির অভিযোগে গত বছর ফিফার প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরে যেতে বাধ্য হন সেফ ব্লাটার

এদিকে, ফুটবলের দূর্নীতি ঠেকাতে এবং স্বচ্ছতা বাড়াতে বিশ্ব ফুটবলের পরিচালনাকারী সংস্থা ফিফা বেশ কিছু সংস্কার পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে। সংস্থাটির প্রেসিডেন্ট সহ নির্বাচিত কর্মকর্তারা সর্বোচ্চ কত মেয়াদে ক্ষমতায় থাকতে পারবেন সেই সময়সীমাও বেঁধে দেয়া হয়েছে। একদিকে যেমন ফিফা পেয়েছে নতুন প্রেসিডেন্ট অন্যদিকে এসেছে সংস্কার পরিকল্পনা।

এই বিষয়ে বিবিসির সঙ্গে কথা বলেছেন ক্রীড়া বিশ্লেষক মিহির বোস।

দূর্নীতি ও সংস্কার নিয়ে ফিফা এখন যে সমস্ত চ্যলেঞ্জের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে, সদ্য নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট কি সেগুলো সামলাতে পারবেন কিনা ? এমন প্রশ্নের জবাবে মিহির বোস বলেন- ‘ফিফার অনেক চ্যলেঞ্জ আছে, অনেক কিছুর উন্নতি করতে হবে। অনেক পরিবর্তন আনতে হবে। নতুন প্রেসিডেন্ট যিনি হলেন, তিনি ফিফার ভেতরকার লোক। ভেতরকার লোক কিভাবে পরিবর্তন করতে পারবে এটা দেখার বিষয়।

নতুন আইডিয়া হিসেবে ইলেকশনের আগে ইনফেন্টিনো ক্যাম্পেইনে বলেছিলেন ‘আমি ফুটবল এসোসিয়েশান কে বেশি টাকা দেব। আমি ওয়ার্ল্ড কাপটাকে আরো বড় করবো।’ এবং এই জন্যই ইনফেন্টিনো জিতে থাকে তবে মুশকিল হবে যে, যারা ইনফেন্টিনো’কে ভোট দিয়েছে তারা পরবর্তীতে বেশি টাকা চেয়ে বসতে পারে।’

ফিফার ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনবার জন্য যে সংস্কার প্রস্তাব নেয়া হয়েছে সেগুলো কতোটা কাজে আসবে বলে আপনি মনে করেন?

‘ফিফার ভেতরের সব লোকেদের মন-ভাবনা বদলাতে হবে। এর জন্য দরকার ছিলো বাইরে থেকে একজন লোকের নির্বচিত হওয়া। সে এসে সংস্কার প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো উপলব্ধি করতে পারতো। যারা প্রার্থী ছিলো তারা কেউ এরকম কথা বলেনি যে, ফিফা ভেঙ্গে গিয়েছিলো তাকে নতুন করে গড়তে হবে। সবাই বলেছে, সামান্য গোলমাল ছিলো সেগুলোকে সংস্কার করতে হবে। দরকার কী? একটা জাহাজ যাচ্ছিলো, জাহাজটি এত খারাপ ছিলো যে সেটাকে ভেঙ্গে নতুন করে গড়তে হবে।’

মিহির বোস আরো বলেন, প্রথমে দেখতে হবে যে, ফিফার সমস্যা কোথায়। ফিফা ১১২ বছর আগে যখন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো তখন ফুটবলে কোন পয়সা ছিলো না। এখন বিভিন্ন মাধ্যম হয়ে টাকা আসে। ফিফা এখন একটা ব্যবসায় পরিণত হয়ে গেছে। নতুন পেসিডেন্টের দেখাতে হবে, ফিফার যে ব্যবসায়িক দিক সেটাকে আলাদাভাবে তৈরি করা আর ফিফার যে ফুটবল নিয়ে অগ্রসরতা সেটাকে আলাদা করে দেখাতে পারা। একটা ফিফার আর্থিক উন্নয়নের দিক এবং অন্যটি ফিফার মান উন্নয়নের দিক হতে হবে। দুটো দিককে পরস্পর থেকে আলাদা করতে হবে।’

বিবিসি