পিলখানা হত্যাকাণ্ডে আজ বৃহস্পতিবার নিহত সামরিক কর্মকর্তাদের শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেনা প্রধান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল ও তিন বাহিনীর প্রধানরা।
সকাল ৯টায় বনানী কবরস্থানে প্রথমে রাষ্ট্রপতির পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল আবুল হোসেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন নিহতদের কবরে পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
সাত বছর আগে ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানী ঢাকাবাসী অনেকেরেই ঘুম ভাঙে গুলি ও বোমার বিকট শব্দে। প্রকম্পিত হয়ে উঠে ঢাকা। দিনটি ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই পেয়েছে কলঙ্কিত বিডিআর (বর্তমান বিজিবি) বিদ্রোহ হিসেবে। ওই দিন ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৭৪ জন বেসামরিক লোক নিহত হন। সেদিন পিলখানার এই বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশের ৫৭টি ইউনিটে। টানা একদিন এক রাত শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি মোকাবিলা করে ২৬ ফেব্রুয়ারি-বিদ্রোহ নিয়ন্ত্রণে আসে।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারির ঘটনা শুধু বাংলাদেশ নয়, সমগ্র পৃথিবীর ইতিহাসে এক সঙ্গে এত সেনা কর্মকর্তা হত্যার কোনো নজির নেই। ঘটনার সময় ৪ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে অবস্থিত পিলখানায় ৬ হাজার ৯০৩ জন বিডিআর সদস্য কর্মরত ছিলেন। তবে দরবারে উপস্থিত ছিলেন ৯৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ২ হাজার ৪৮৩ জন। পিলখানা বিদ্রোহের ঘটনায় তিনটি মামলা হয়। এর মধ্যে বিডিআর বিদ্রোহ ও হত্যা মামলা নিষ্পত্তি হলেও অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে করা একটি মামলা এখনো চলছে। ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর তৃতীয় দায়রা জজ আদালতে হত্যা মামলার রায় দেওয়া হয়। এ মামলায় ১৫২ জন আসামির ফাঁসি ও ১৫৯ জন আসামির যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে কারাগারে থাকা অবস্থায় দুজনের মৃত্যু হয়। বর্তমানে মামলাটি হাইকোর্টে শুনানি চলছে। অপরদিকে অস্ত্র ও বিস্ফোরক মামলার বিচারকাজ বিশেষ ট্রাইব্যুনালে চলছে। এ মামলায় মোট আসামি ৮৩৪ জন। এদের মধ্যে ৫ জন মারা গেছেন। বাকি ২০ জন এখনো পলাতক। সরকারপক্ষের এক হাজার ৩৪৫ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে।