soleman-1_4495গাজীপুরে ঋণের টাকার জামিনদার না হওয়ায় ভাঙারী ব্যবসায়ী মোকাররম হোসেনের চার বছরের শিশুপুত্র সোলায়মানকে হত্যা করেছে প্রতিবেশি এক সেলুন মালিক। র‌্যাব-১-এর সদস্যরা সেলুন মালিক (ব্যবসায়ী) নির্মলকে (৪০) আটক করেছে।

নিহত শিশু সোলেমানের পিতা মোকাররম হোসেন জানান, নির্মলের বাড়ি নেত্রকোনা জেলায়। মোকাররম ও নির্মল স্ব-পরিবারে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের চান্দনা-চৌরাস্তা আউটপাড়া এলাকার পরিবহন নেতা আব্দুল মোতালেবের বাড়িতে ভাড়া থাকেন। নির্মল স্থানীয় কলেজপাড়া এলাকায় দোকান ভাড়া নিয়ে সেলুন ব্যবসা করেন এবং মোকাররমও পাশাপাশি দোকানে ভাঙারী মালামালের ব্যবসা করেন।

প্তাহ খানেক আগে নির্মল স্থানীয় মার্স মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠান থেকে ২০ হাজার টাকা ঋণ নেয়ার আবেদন করেন। নির্মল তার ঋণপত্রে জামিনদার হতে মোকাররমকে অনুরোধ জানান। ঋণপত্রে মোকাররম প্রথমে জামিনদার হিসেবে স্বাক্ষরও করেন। কিন্তু পরে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা তদন্ত করতে এসে জানান, নির্মল ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে ওই টাকা মোকাররমকেই শোধ করতে হবে। ফলে মোকাররম ওই ঋণপত্রে জামিনদার হতে অস্বীকৃতি জানান। পরবর্তীতে এ নিয়ে নির্মলের সাথে মোকাররমের বিরোধ সৃষ্টি হয়।

মোকাররমের একমাত্র ছেলে সোলায়মান শনিবার বিকেলে নির্মলের দোকানের সামনেই খেলা করছিল। কিছুক্ষণ পর থেকেই  সোলায়মানের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। ঘটনার কয়েকদিন আগে নির্মল তার স্ত্রী-সন্তানকেও গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। সোলায়মান নিখোঁজের পর থেকে নির্মলের সেলুনটিও বন্ধ থাকতে দেখা গেছে। পরে মধ্যরাতে তার মোবাইলে অজ্ঞাত পরিচয়ের এক ব্যক্তি সোলয়মানকে ফিরে পেতে দেড় লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে ফোন করে। ফোনে তারা রোববার সন্ধ্যায় টঙ্গীতে মুক্তিপণের টাকা নিয়ে হাজির হতে বলেছিল।

পরদিন রোববার সকালে এ ব্যাপারে জয়দেবপুর থানায় সাধারণ সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয় এবং ঘটনাটি র‌্যাব অফিসেও জানানো হয়। কিন্তু সেদিন আর টাকা ব্যবস্থা করতে পারেনি মোকাররম। জানা গেছে, নির্মল ঘটনার দিনই তার দোকানের শার্টার আটকিয়ে সোলায়মানকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর সোলায়মানের লাশটি কাশিমপুরের সুরাবাড়ি এলাকার রাইস মিলের পাশের জঙ্গলে ফেলে দিয়ে আসে বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। সোমবার বিকেলে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে র‌্যাব-১ নির্মলকে আটক করে। স্থানীয় চক্রবর্তী পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাইফুল ইসলাম জানান, এ ব্যাপারে মঙ্গলবার রাতে মোকাররম বাদি হয়ে জয়দেবপুর থানায় মামলা করেছেন।