যুব বিশ্বকাপে বাংলাদেশ তৃতীয়

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬: যুব বিশ্বকাপে তৃতীয় হয়েছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। শনিবার তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে তিন উইকেটে হারিয়েছে মেহেদি হাসান মিরাজের দল। এর আগে গত বৃহস্পতিবার সেমিফাইনাল ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হেরে ফাইনালের স্বপ্ন ভঙ্গ হয় যুব টাইগারদের। তাই প্রথম সেমিফাইনালে হারা শ্রীলঙ্কার সঙ্গে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী এই ম্যাচে অংশ নেয় বাংলাদেশ। সেই ম্যাচে টস জিতে শুরুতে ব্যাট করে শ্রীলঙ্কা ৪৮.৫ ওভারে ২১৪ রানে অলআউট হয়। জবাবে বাংলাদেশ তিন বল হাতে রেখে তিন উইকেটে ২১৮ রান করে বাংলাদেশ। অবশ্য বাংলাদেশ ফাইনালে না ওঠলেও একটা রেকর্ড হয়েছে। আইসিসির কোনো টুর্নামেন্টে প্রথমবারের মতো সেমিফাইনালে খেলার গৌরব অর্জন করে বাংলাদেশ। তাই যুব বিশ্বকাপে এটিই লাল-সবুজের দলের সেরা পারফরম্যান্স। এর আগে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ পঞ্চম স্থান লাভ করে। ২০০৬ সালে বাংলাদেশ মুশফিকুর রহিমের নেতৃত্বে কোয়ার্টারে হারলেও পঞ্চম স্থান লাভ করেছিল। সেবার পঞ্চম স্থান নির্ধারণী ম্যাচে এই শ্রীলঙ্কাকেই হারিয়েছিল তারা।

বাংলাদেশ অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ বলের পর ব্যাটেও পথ দেখান বাংলাদেশকে। করেন হাফ সেঞ্চুরি নিয়েছেন তিন উইকেটও। জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে দলীয় ৫৯ রানের মধ্যে দুই ওপেনার জয়রাজ শেখ ও জাকির হাসান সাজঘরের পথ ধরেন। জয়রাজ ২৯ রান করলেও জাকির রানের খাতা খুলতে পারেননি। পরে জাকের আলীকে নিয়ে মিরাজ তখন দলের হাল ধরেন। ব্যক্তিগত ১৯ রানে জাকের রিটায়ার্ড হার্ট করে মাঠে বাইরে চলে যান। এরপর নাজমুল হাসান শান্ত ও মেহেদি হাসান মিরাজ জুটি বাঁধেন।পরে মিরাজ হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। তৃতীয় উইকেটে শান্তর সঙ্গে ৮৮ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের পথ দেখান তিনি। ৬৬ বলে দুই চার ও এক ছক্কায় মিরাজ রান আউট হন ৫৩ রান করে। আর শান্ত করেন ৫৭ বল থেকে এক চারে ৪০ রান। এরপর শেষ দিকে কিছুটা চাপ তৈরি হলেও সাইফুল হায়াত (২১), সাইফুদ্দিন (১৯)ও মোসাব্বেক (১১) ছোট ছোট কিছু ইনিংস খেলে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন।

এর আগে মেহেদি হাসান মিরাজ, সাইফুদ্দিন ও আবদুল হালিমদের বোলিং নৈপুণ্যে সাত বল বাকি থাকতেই লঙ্কানদের ২১৪ রানে অলআউট করে যুব টাইগাররা। ওপেনিং জুটিতে শ্রীলঙ্কা কিছুটা শক্তিশালী অবস্থান নিলেও পরে তা ভেঙে যায়। শ্রীলঙ্কার দুই ওপেনার কামিন্দু মেন্ডিস ও সালিন্দু পেরেইরা দুর্দান্ত সূচনা করেন। ৬০ রানের ওপেনিং জুটি গড়ে বড় স্কোর গড়ার আভাসই দিচ্ছিলেন তারা। তবে চোখ রাঙাতে থাকা দুই লঙ্কান ওপেনারকে এরপরই ফিরিয়ে দিতে সক্ষম হন বাংলাদেশ অধিনায়ক মিরাজ। মেন্ডিসকে (২৬) এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন তিনি। আর পেরেইরা (৩৪) উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন সেই মিরাজের বলেই। পরে দলীয় ৭০ রানে আভিস্কা ফার্নান্দোকে (৬) বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান মিরাজ। শুরুতেই মিরাজের ট্রিপল আঘাতে রানের গতি কমে আসে লঙ্কানদের। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আরো দুই উইকেট তুলে নেন মেহেদি হাসান রানা ও সালেহ আহেমদ শাওন। রানার বলে আহসান (২৭) উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন। অপরদিকে শাওনের বলে এলবডব্লিউর ফাঁদে পড়েন সিলভা (১০)।

বাকি কাজটা সেরে দেন সাইফুদ্দিন ও আবদুল হালিম। শেষ পাঁচ ব্যাটসম্যানের চার জনকেই ফেরান তারা। ব্যতিক্রম ছিলেন শুধু দামিথা সিলভা। তিনি রান আউট হয়েছেন। লঙ্কান ইনিংসে পরবর্তী ব্যাটসম্যানদের মধ্যে চারিথ আসালাঙ্কা সর্বোচ্চ ৭৬ রান করেন। ওয়ানিদু হাসারাঙ্গা করেন ৩০ রান। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে অধিনায়ক মিরাজ তিনটি এবং সাইফুদ্দিন ও আবদুল হালিম দুটি করে উইকেট নেন। আর একটি করে উইকেট নেন সালেহ আহমেদ শাওন ও মেহেদি হাসান রানা।