দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬: ২ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৮টি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন একনেক চেয়ারপারসন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল এ তথ্য জানিয়েছেন।
পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, একনেক বৈঠকে ২ হাজার ৮৬৫ কোটি ৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ৫টি নতুন ও ৩টি সংশোধনসহ মোট ৮ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে সরকারি অর্থায়ন ১ হাজার ৫৩৬ কোটি ৪৩ লাখ এবং প্রকল্প সাহায্য ১ হাজার ৩২৮ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।
অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হল,৮১৫কোটি টাকা ব্যয়ে পানি ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন (ওয়ামিপ)’ প্রকল্পের সংশোধনী অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রকল্পটি ব্যয় কমানো হয়েছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড অধীনে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মেয়াদ ধরা হয়েছে ডিসেম্বর ২০১৫ হতে ডিসেম্বর ২০১৬ সালের মধ্যে।
গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় পাঁচপীর বাজার-চিলমারী-উপজেলা সদর দপ্তরের সাথে সংযোগকারী সড়কে তিস্তা নদীর উপর ১৪৯০ মিটার দীর্ঘ গার্ডার সেতু নির্মাণ’ প্রকল্পে প্রথম সংশোধনী অনুমোদন দেয়া হয়ে। প্রকল্পটির ব্যয় ৬৩০কোটি থেকে ৭৩০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে।জাতীয় প্রাণিসম্পদ পোল্ট্রি ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউট এবং রোগ অনুসন্ধান গবেষণাগার স্থাপন প্রকল্প। ব্যয় বৃদ্ধি করে প্রকল্পটির ২য় সংশোধনী অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় দাঁড়িয়েছে ২৭ কোটি ৮৫ লাখ টাকা থেকে ৪২ কোটি ৮০ লাখ টাকা।৪৫৭ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে আন্তঃজেলা সীমান্ত সড়ক নির্মাণ : ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনা জেলার অংশ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।ঢাকার বেইলী রোডে পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্প। এতে ব্যয় হবে ১০২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। মোবারক পুর তেল-গ্যাস অনুসন্ধানকূপ খনন প্রকল্পের ব্যয় হবে ৮৭ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। এছাড়া নংরসিংদী বিসিক শিল্প নগরী সম্প্রসারণ ব্যয় হবে ৭৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকা এবং ভোলা জেলার দৌলত খান ও বোরহানদ্দীন উপজেলায় মেঘনা নদী ভাঙ্গন হতে পোল্ডার ৫৬-৫৭ রক্ষা’ প্রকল্প। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় করা হবে ৫৫১ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
এদিকে, চলতি বছরে জানুয়ারি মাসে বেড়েছে বাড়িভাড়া। অন্যদিকে সোনামনিদের হাতে উঠেছে নতুন বই। বইয়ের যতেœ কেনা হয়েছে নতুন নতুন ব্যাগ। বাচ্চাদের নতুন পোশাকও কেনা হয়। এসব কারণে ডিসেম্বর মাসের তুলনায় জানুয়ারি মাসে খাদ্যবর্হিভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো(বিবিএস)।
বিবিএসের দেওয়া হালনাগাদ তথ্যে দেখা গেছে, জনুয়ারি মাসে খাদ্যবর্হিভূত মূল্যস্ফীতির হার আরও একধাপ বেড়ে হয়েছে ৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ, ডিসেম্বর মাসে যা ছিল ৭ দশমিক ০৫ শতাংশ।অন্যদিকে বাড়িভাড়াসহ আসবাবপত্র, গৃহস্থালি, চিকিৎসা সেবা, পরিবহন ও শিক্ষা উপকরণের দামও বাড়তির দিকে।মঙ্গলবার রাজধানীর শেরে বাংলা নগর পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলনে মিট দ্য প্রেসে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বিবিএসের দেওয়া জানুয়ারি মাসের ভোক্তা মূল্য সূচকের (সিপিআই) সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেন। মন্ত্রী বলেন, বছরের শুরুতে বাচ্চারা নতুন বইয়ে নিয়ে স্কুলে ভর্তি হয়। এ সময় বাচ্চাদের ব্যাগসহ সরঞ্জামাদি কিনতে হয়। এসব জিনিসের দাম কম নয়। তাছাড়া বাড়িওয়ালারা বছরে দুইবার বাড়িভাড়া বৃদ্ধি করেন। জানুয়ারি মাসেও বাড়িভাড়া বৃদ্ধি পায়। এসব কারণে খাদ্যবর্হিভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতির হার বাড়তির দিকে।অন্যদিকে জানুয়ারি মাসে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতির হার কমে হয়েছে ৪ দশমিক ৩৩ শতাংশ। ডিসেম্বর মাসে যা ছিল ৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ। বিবিএস বলছে, মাছ, মাংস, সবজি, মসলা ও তামাক জাতীয় পণ্যের দাম কমায় খাদ্যে মূল্যস্ফীতির হার কমেছে।তবে মাসের ব্যবধানে সাধারণ মূল্যস্ফীতির হার কমেছে। ডিসেম্বর মাসে সাধারণ মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৬ দশমিক ১০ শতাংশ, জানুয়ারি মাসে যা কমে হয়েছে ৬ দশমিক ০৭ শতাংশ।