দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, গণতন্ত্রকে বাদ দিয়ে সরকার উন্নয়নের কথা বললেও সেটি আসলে উন্নয়নের ফাঁকা বুলি’। এ ফাঁকা বুলি দিয়ে স্ট্যাটিসটিক (পরিসংখ্যান) সাজিয়ে-গুঁছিয়ে বাহবা নেয়া গেলেও তাতে দেশের মানুষের কোনো কল্যাণ হবে না।শনিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় ‘জিয়া মঞ্চ’ আয়োজিত এক আলোচনা সভা, পবিত্র কোরআন খতম ও মিলাদ মাহফিলে অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সরকারের উদ্দেশে এসব কথা বলেন তিনি।বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কনিষ্ঠপুত্র আরাফাত রহমান কোকোর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ড. মঈন খান বলেন, দেশ ক্রান্তিকালের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। দেশে গণতন্ত্র নেই, মানুষের নিরাপত্তা ও কথা বলার কোনো স্বাধীনতা নেই। এভাবে একটি রাষ্ট্র চলতে পারে না।তিনি আরো বলেন, মানুষ সরকারের তথাকথিত উন্নয়নের জোয়ারে ভেসে যাচ্ছে। কিন্তু একটু গভীরে গেলে আমরা দেখতে পাচ্ছি, যে উন্নয়ন হচ্ছে তা ফাঁকা উন্নয়ন, ফাঁকা উন্নয়নের বুলি। কেননা, গণতন্ত্র ছাড়া উন্নয়ন কখনো টেকসই হতে পারে না। সরকার উন্নয়নের ধোঁয়া দিয়ে গণতন্ত্রকে আচ্ছন্ন করার প্রচেষ্টায় রত।বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা গণতন্ত্র যদি দেশে না থাকে, মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি না থাকে; তাহলে শুধু মেগা প্রজেক্টের মাধ্যমে চোখ ঝলসানো উন্নয়নের চমক দিয়ে দেশ-বিদেশের মানুষকে চমকে দেয়া যেতে পারে। কিন্তু সেটি কোনো বিশেষ উন্নতির লক্ষণ নয়। শতকরা ৮০ ভাগ মানুষ গ্রামে বসবাস করে। তাই গ্রামীণ অবকাঠামোর উন্নয়ন ও উন্নয়নের সুফল গ্রামবাসীর কাছে পৌঁছে দিতে না পারলে সরকারের তথাকথিত’ উন্নয়ন কেবল ফাঁকা বুলিতে পরিণত হবে। এ ফাঁকা বুলি দিয়ে হয়তো স্ট্যাটিসটিক (পরিসংখ্যান) সাজিয়ে-গুছিয়ে বাহবা নেয়া যেতে পারে, কিন্তু তাতে দেশের মানুষের কোনো কল্যাণ হতে পারে না।
ড. মঈন খান বলেন, ১/১১ এর সরকার অন্যায়-অত্যাচার ও নিপীড়নের মাধ্যমে দেশের মানুষকে স্তব্ধ করে দিয়ে এ দেশে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়েছিল। প্রায় দশ বছর আগের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার সেই প্রক্রিয়া এখনো অব্যাহত রয়েছে। তখন দেশ থেকে গণতন্ত্র যে অন্তর্নিহিত হয়েছিল সেটি আজো ফিরে আসেনি।তিনি বলেন, গণতন্ত্রের মূল উপাদান ভোটাধিকার’ বিগত দশটি বছর ধরে হরণ করে নিয়ে ‘তথাকথিত’ নির্বাচনের নামে একটি অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় দেশকে আচ্ছন্ন করে ফেলা হয়েছে। আরাফাত রহমান কোকোর শোককে শক্তিতে পরিণত করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দেশকে গণতন্ত্রের পথে পুনরায় এগিয়ে নিয়ে মানুষের হাতে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। আসুন, আমরা আজ সবাই এই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই।
জিয়া মঞ্চর সভাপতি মহসিন আহমেদের সভাপতিত্বে এবং মহাসচিব ফয়েজ উল্লা ইকবালের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন-বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য রফিক শিকদার, কৃষক দলের যুগ্ম সম্পাদক শাহজাহান মিয়া সম্রাট প্রমুখ।আলোচনা সভা শেষে আরাফাত রহমান কোকোর রুহের মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।