আবদুল্লাহ আল নোমান

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬: খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে সরকার বিএনপির কাউন্সিল ভণ্ডুলের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান। তিনি বলেছেন, সরকার বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে একের পর এক ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলার অংশ হিসেবে সর্বশেষ দুরভিসন্ধিমূলক’ রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দিয়েছে। তবে এ মামলা দিয়ে বিএনপি এবং খালেদা জিয়াকে দমানো যাবে না।

বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে সদ্য কারামুক্ত ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকনকে নিয়ে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এ কথা বলেন তিনি।এ সময় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান, রুহুল কবির রিজভী আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।বিএনপির ষষ্ঠ কাউন্সিল নিয়ে সরকার ষড়যন্ত্র করছে এমন অভিযোগ পুনর্ব্যক্ত করে নোমান বলেন, বিএনপি নেত্রীর বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে কাউন্সিল প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে চায় সরকার। কিন্তু বিএনপি তার কাউন্সিল করার ব্যাপারে দৃঢ় প্রত্যয়ী।

তিনি আরো বলেন, আমাদের কাউন্সিল করার রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার আছে। এই অধিকার কেউ খর্ব করতে পারবে না। যারা কাউন্সিল বাধাগ্রস্ত করতে চায় জনগণ তাদের জবাব দেবে।এ প্রসঙ্গে নোমান জানান, কাউন্সিলের জন্য এরই মধ্যে রাজধানীতে তিনটি স্থান চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। এর মধ্যে যেকোনো একটি ভেন্যুতে কাউন্সিল করা হবে। দেশে গণতন্ত্র নেই উল্লেখ করে আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, সরকার গুম-খুন-অত্যাচার-নির্যাতন করে সারা দেশে ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। মানুষের কথা বলার অধিকার নেই। এভাবে দেশ চলতে পারে না।

জিয়াউর রহমানের সমাধিতে এলে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার সংগ্রামের অনুপ্রেরণা পান জানিয়ে বিএনপির এ ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘তিনি (জিয়াউর রহমান) যেভাবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন, সেভাবে আপোষহীনভাবে গণতন্ত্র ফিরে পেতে লড়াই চলছে। এই লড়াইয়ে জনগণ জয়ী হবেই। নোমান বলেন, সরকার দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া চলমান আন্দোলনের নেত্রী, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার নেত্রী, অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলার নেত্রী তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক বহু মামলা দিয়েছে।

সর্বশেষ যে মামলা করেছে, তাতে তাদের লক্ষ্যই হচ্ছে, আমরা মার্চে যে সুসংগঠিত কাউন্সিল করতে যাচ্ছি, তাতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা এবং কাউন্সিলের সফলতা বিনষ্ট করা। এটা তাদের (সরকার) একটি দুরভিসন্ধিমূলক ষড়যন্ত্র।তবে সব ষড়যন্ত্র ও দুরভিসন্ধি মোকাবেলা করে কাউন্সিলের কার্য্ক্রম অব্যাহত থাকবে বলে প্রতিশ্র“তি ব্যক্ত করেন বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা।২০০৯ সালের ৮ ডিসেম্বর বিএনপির সর্বশেষ কাউন্সিল হয়। গত ২৩ জানুয়ারি দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটি মার্চের তৃতীয় সাপ্তাহে কাউন্সিল করার সিদ্ধান্ত নেয়।

মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠানের জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তন ও বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের যে কোনো একটি জায়গা বরাদ্দ পেতে গত মাসের শেষ দিকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমতি চেয়ে চিঠি দিয়েছে বিএনপি।

নোমান বলেন, আমরা এখনো ভেন্যু (স্থান) পাইনি। এই ভেন্যু না দেওয়াটাও একটা ষড়যন্ত্র বলে আমরা মনে করছি। সরকার এই ষড়যন্ত্র করছে। তারা আমাদের নেত্রীকে কাউন্সিলের কর্মকাণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করছে।সরকারের কাছে আমাদের দাবি, এটা আমাদের অধিকার। গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে বহুদলীয় রাজনীতিতে বিরোধী দলের যে স্পেস থাকে, সেই স্পেসে আমাদের কাউন্সিল করার অধিকার আছে। সেখানে আমাদের স্থান পাওয়ারও অধিকার রয়েছে। এ সময়ে ছাত্র দলের সাবেক নেতা আমিরুল ইসলাম আলীম, শহীদুল ইসলাম বাবুল ও আমিরুজ্জামান থান শিমুল উপস্থিত ছিলেন।