দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬: রাষ্ট্রপতি মো.আবদুল হামিদরাষ্ট্রপতি মো.আবদুল হামিদসরকারঘোষিত অষ্টম পে-স্কেলের সঙ্গে সামঞ্জস্য করে সাংবাদিকদের বেতনবৈষম্য দূর করার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তিনি বলেছেন, সম্প্রতি সরকার ঘোষিত অষ্টম পে-স্কেলের ফলে সাংবাদিকেরা বৈষম্যবোধ করছেন। আমি আশা করি, সরকার এ ব্যাপারে যথাযথ মনোযোগ দেবে। সমস্যাটির অচিরেই সমাধান করবে।বুধবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন।সাংবাদিকদের উদ্দেশে আবদুল হামিদ বলেন, রাষ্ট্রপতি হিসেবে আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে পারি। আমার দুয়ার সব সময় আপনাদের জন্য উন্মুক্ত।আর আমার পক্ষে যতটুকু সম্ভব, তা আমি অবশ্যই করব।রাষ্ট্রপতি বলেন, জাতির বিবেক হিসেবে তারা যদি জাতির আলোচ্যসূচিসমূহ যথাযথভাবে কিংবা পূর্ণাঙ্গভাবে জাতির সামনে তুলে ধরতে পারে তবেই দেশ ও জাতি উপকৃত হবে। পত্রিকা বা চ্যানেলের প্রসারের চেয়ে জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
গণতন্ত্র বিকশিত হলেই গণমাধ্যমও প্রসারিত হয় উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে আপনাদের নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে। মনে রাখতে হবে আপনার দেওয়া একটি সংবাদ বা রিপোর্টের কারণে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা জাতি যেন কোনোভাবেই অহেতুক হয়রানির শিকার না হয়। সংবাদ, প্রচার ও প্রকাশের ক্ষেত্রে জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। পত্রিকা বা চ্যানেলের প্রচার ও প্রসারের বিষয়টি প্রাধান্য দিলে চলবে না।রাষ্ট্রপতি বলেন, সম্প্রতি সরকার ঘোষিত পে-স্কেলের ফলে সাংবাদিকরা বৈষম্যবোধ করছে। আমি আশা করব সরকার এ ব্যাপারে যথাযথ মনোযোগ দেবে এবং সমস্যাটির অচিরেই সমাধান হবে।আবদুল হামিদ বলেন, রাষ্ট্রপতি হিসেবে আমি আশ্বস্ত করতে পারি আমার দুয়ার আপনাদের জন্য সব সময়ই উন্মুক্ত। আর আমার পক্ষে যতটুকু করা সম্ভব তা আমি অবশ্যই করব।
২০১৩ সালে সংবাদপত্র ও বার্তা সংস্থাগুলোর কর্মীদের মূল বেতনের ৭৫ শতাংশ বাড়িয়ে নতুন মজুরি কাঠামো ঘোষণা করে সরকার।গতবছরের সেপ্টেম্বরে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মাচরীদের নতুন বেতন কাঠামো অনুমোদন দেওয়ার পর ডিইউজে এক বিবৃতিতে সাংবাদিকদের জন্যও নতুন বেতন কাঠামোর দাবি তোলে।
গত ডিসেম্বরে সরকারি কর্মচারিদের অষ্টম বেতন কাঠামোর গেজেট প্রকাশ করে সরকার, যেখানে ২০টি গ্রেডের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল বেতন ৭৮ হাজার টাকা এবং সর্বনিম্ন মূল বেতন ধরা হয়েছে ৮ হাজার ২৫০ টাকা।বেতন বেড়েছে গ্রেড ভেদে ৯১ থেকে ১০১ শতাংশ।এছাড়া মন্ত্রিপরিষদ সচিব, মুখ্য সচিব ও এদের সমমর্যাদার পদের বেতন ৮৬ হাজার টাকা এবং জ্যেষ্ঠ সচিব ও সমমর্যাদার পদের বেতন ৮২ হাজার টাকা নির্ধারিত থাকছে।রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ পত্রিকা বা চ্যানেলের প্রসারের চেয়ে জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, গণতন্ত্র বিকশিত হলেই গণমাধ্যমও প্রসারিত হয়। তাই গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে আপনাদেরকে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করতে হবে।মনে রাখতে হবে আপনার দেয়া একটি সংবাদ বা রিপোর্টের কারণে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা জাতি যেন কোনোভাবেই অহেতুক হয়রানির শিকার না হয়। সংবাদ প্রচার ও প্রকাশের ক্ষেত্রে জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। পত্রিকা বা চ্যানেলের প্রচার ও প্রসারের বিষয়টি প্রাধান্য দিলে চলবে না।তিনি আরও বলেন, আমাদের মহান মুক্তিসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধসহ প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে গণমাধ্যমের ভূমিকা খুবই প্রশংসনীয়। কিছু লোকের ভূমিকার কারণে আপনাদের সুনাম যাতে ক্ষুন্ন না হয় সে ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে।রাষ্ট্রে গণমাধ্যমের গুরুত্ব তুলে ধরে রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ।এর মাধ্যমে জাতি তার অব্যক্ত আশা-আকাঙ্খা ও অভিপ্রায় ব্যক্ত করে থাকে। রাষ্ট্রের নির্বাহী ও অন্যান্য বিভাগ যা ভুলে যায় কিংবা পর্যাপ্তভাবে দৃষ্টিক্ষেপণ করে না, সেটা বলার দায়িত্ব তারা পূরণ করে।একারণে অনেক সময় গণমাধ্যম কর্মীরা অনেকের বিরগভাজনও হয়ে থাকেন। কিন্তু তবুও এটা একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ, যা ছাড়া জাতি ও গণতন্ত্র অপূর্ণাঙ্গ থাকে। সে কারণেই জাতি গঠনে গণমাধ্যম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।বক্তব্যের শুরুতে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি আলতাফ মাহমুদের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপতি।
ডিইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আতিকুর রহমান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি মুহম্মদ শফিকুর রহমান, বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাফর ওয়াজেদ, ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক কুদ্দুস আফ্রাদ প্রমুখ।