দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৬ জানুয়ারি ২০১৬: অষ্টম বেতন কাঠামোতে বৈষম্যের প্রতিবাদ ও দাবিতে তিনদিনের কর্মবিরতি পালন শুরু করেছেন দেশের সব সরকারি কলেজের শিক্ষকরা। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী মঙ্গলবার থেকে পরীক্ষা বর্জনসহ তিন দিনের পূর্ণ কর্মবিরতি শুরু করেছেন শিক্ষকরা।বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সভাপতি প্রফেসর নাসরীন বেগম বলেন, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী দেশের সব সরকারি কলেজের শিক্ষকরা ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত কর্মবিরতিতে থাকবেন।দাবি পূরণে কোনো অগ্রগতি হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের ঘোষিত কর্মসূচি চালিয়ে যাব।এর আগে দাবি পূরণের জন্য ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সরকারকে সময় বেঁধে দেন সংগঠনটির নেতারা। ২২ জানুয়ারি বিশেষ সাধারণ সভায় সংগঠনটির সভাপতি তাদের আন্দোলনরে রূপরেখা ঘোষণা করেন।
সে সময় প্রফেসর নাসরিন বলেন, আল্টিমেটামের মধ্যে দাবি আদায় না হলে ২৬-২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনসহ সর্বাত্মক অবস্থান ঘর্মঘট পালন করা হবে। মাঝখানে ৫ ফেব্র“য়ারি পর্যন্ত আলোচনা বা সমঝোতার সুযোগ রাখছি। ফলপ্রসূ অগ্রগতি না হলে ৬-১০ তারিখ পর্যন্ত ক্লাস বর্জন। এতেও দাবি আদায় না হলে ১১-১৮ তারিখ পর্যন্ত আবারো ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের কর্মসূচি পালন করা হবে। এসব কর্মসূচিতে আন্দোলন বাস্তায়িত না হলে ২৩ ফ্রেব্র“য়ারি থেকে ক্লাস পরীক্ষা বর্জনসহ অনির্দিষ্টকালের পূর্ণ কর্মবিরতি চলবে।অষ্টম জাতীয় বেতন স্কেলে অধ্যাপকদের পদ ও বেতন স্কেল অবনমনের প্রতিবাদে এবং পদ আপগ্রেড, সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল পুনর্বহাল ও কৃত্য পেশাভিত্তিক প্রশাসনের দাবিতে এই কর্মসূচির পালন করছে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি।সাধারণত সরকারি কলেজের অধ্যাপকেরা চতুর্থ গ্রেডের কর্মকর্তা। সিলেকশন গ্রেড থাকায় এত দিন অধ্যাপকদের ৫০ শতাংশ গ্রেড-৩ এ যেতে পারতেন। কিন্তু সিলেকশন গ্রেড বাদ দেয়ায় এখন এই পথ বন্ধ হয়ে গেছে। এর ফলে পদমর্যাদার পাশাপাশি মারাত্মক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন বলে শিক্ষকদের দাবি।
শিক্ষকদের ছয় দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- ব্যাচ ভিত্তিক প্রমোশন, নিজস্ব ক্যাডার বহির্ভূত কর্মকর্তা ছাড়া অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের প্রেষণ বাতিল, নায়েমের ডিজি, পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান ও জেলা সদরের অনার্স বা মাস্টার্স রয়েছে এমন কলেজের অধ্যক্ষের পদ গ্রেড-১ এ উন্নীতকরণ এবং অন্যান্য ক্যাডারের সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকরণ।সব সরকারি কলেজ, সরকারি আলিয়া মাদরাসা,সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, সরকারি কমার্শিয়াল কলেজ ও সরকারি শিক্ষা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মরত ১৫ হাজার ২৮৯ জন বিসিএস শিক্ষক ও শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এ কর্মবিরতি পালন করছেন।এর আগে গত ২২ ডিসেম্বর সংগঠনটি রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে দাবি আদায়ের আল্টিমেটাম দেয় । এরপর ৪ ও ৫ জানুয়ারি কর্মবরতি পালন করেন তারা। ১১-১৭ তারিখ পর্যন্ত প্রতিদিন দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতির পর ২২ জানুয়ারি সাধারণ সভায় এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।