দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৩ জানুয়ারি ২০১৬: ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজের মরদেহে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে মরহুমের পরিবারের সদস্যদের সমবেদনাও জানিয়েছেন তিনি। শনিবার বিকেলে এম এ আজিজের পুরান ঢাকার হোসনে দালানের বাসায় গিয়ে এ শ্রদ্ধা ও সমবেদনা জানান প্রধানমন্ত্রী।বিকেল সাড়ে ৪টার কিছু আগে হোসনে দালানে যান প্রধানমন্ত্রী। এরপর এম এ আজিজের মরদেহ দেখেন তিনি। তারপরই মরদেহে ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান শেখ হাসিনা।
শ্রদ্ধা নিবেদনের পর এম এ আজিজের দোতলার বাসায় যান প্রধানমন্ত্রী। সেখানে পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা ও সমবেদনা দেন। এসময় ওই বাসায় আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। প্রধানমন্ত্রী সেখানে বেশ কিছু সময় কাটান।প্রায় আধা ঘণ্টা হোসনে দালানে থেকে ৪টা ৫৫ মিনিটে বেরিয়ে যান শেখ হাসিনা।দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান এম এ আজিজ (৬৮)। বাদ মাগরিব বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মরহুমের প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। আর দ্বিতীয় নামাজে জানাজা হবে রাত ৮টায় আলিয়া মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে।ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রয়াত এম এ আজিজের মরদেহ দেখতে গিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।প্রধানমন্ত্রী শনিবার বিকাল ৪টার কিছু পরে পুরান ঢাকার বকশীবাজার এলাকায় প্রয়াত এম এ আজিজের বাড়িতে পৌঁছান বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন।তিনি বলেন, সেখানে মরদেহ দেখে এম এ আজিজের কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী। এরপর প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতার দোয়া কামনায় মোনাজাতে অংশ নিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ সময় কাটান তিনি।এ সময় প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত এমএ আজিজের বিভিন্ন স্মৃতিচারণা করে তার পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেন।
কয়েকজন মন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী বিভিন্ন সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন জানিয়ে উপ প্রেস সচিব আশরাফুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী প্রায় ৪০ মিনিট সেখানে ছিলেন।এর আগে শনিবার দুপুরে মস্তিস্কের রক্তক্ষরণে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন এম এ আজিজ।এরপর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে তাৎক্ষণিভাবে পাঠানো শোক বার্তায় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, এম এ আজিজের মৃত্যুতে আওয়ামী লীগ দীর্ঘ দিনের পরীক্ষিত, ত্যাগী ও নিবেদিত প্রাণ এক নেতাকে হারালো।
পঁচাত্তরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ড পরবর্তী দুঃসময়ে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগকে পুনরায় সংগঠিত করতে এম এ আজিজের ভূমিকা অপরিসীম ছিল মন্তব্য করে এতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে মরহুমের সাহসী ভূমিকার কথা জাতি চিরকাল গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে ।ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শাখা ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে গত আট বছর ধরে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন পঁচাত্তরোর্ধ্ব আজিজ।
২০০৩ সালে সম্মেলনে সাবেক মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ঢাকা মহানগরের সভাপতি নির্বাচিত হলে ওই কমিটিতে সহসভাপতি হন আজিজ।একুশে অগাস্টের গ্রেনেড হামলায় আহত হানিফ ২০০৭ সালে মারা যাওয়ার পর আজিজকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। তারপর থেকে তিনি এই দায়িত্বেই ছিলেন। ২০১২ সালে কাউন্সিল হলেও নতুন কমিটি গঠিত না হওয়ায় আজিজ আগের মতোই ভারপ্রাপ্ত সভাপতির হিসেবে কাজ করে আসছিলেন। আজিজের তিন ছেলের মধ্যে বড় জন উমর বিন আব্দুল আজিজ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর।