দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২২ জানুয়ারি ২০১৬: আওয়ামী লীগের পর বিএনপিও তাদের কাউন্সিলের তারিখ চূড়ান্ত করতে চায়। শনিবার দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের বৈঠকে কাউন্সিলের তারিখ চূড়ান্ত করা হতে পারে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।সূত্রটি জানায়, শনিবার রাত সাড়ে আটটায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক ডেকেছেন। বৈঠকটি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে হওয়ার কথা। মূলত পৌরসভা নির্বাচন পর্যালোচনা ও দলের কাউন্সিল নিয়ে আলোচনার জন্য এ বৈঠক ডাকা হয়েছে বলে সূত্রটি জানায়।জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য মাহবুবুর রহমান বলেন, শনিবার রাতে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক। সেখানে দলের কাউন্সিল, পুনর্গঠন, প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার সাম্প্রতিক বক্তব্যসহ সমসাময়িক রাজনীতি নিয়ে আলোচনা হতে পারে।সাংগঠনিক কার্যক্রমসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করতে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির ডেকেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী জানান, শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এ বৈঠক হবে।স্থায়ী কমিটির সঙ্গে এটিই হবে নতুন বছরে বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রথম বৈঠক। রিজভী বলেন, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিসহ সাংগঠনিক কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা করতে আমাদের চেয়ারপারসন এ বৈঠক ডেকেছেন।এর আগে পৌর নির্বাচন সামনে রেখে গত বছর ১২ ডিসেম্বর জ্যেষ্ঠ নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন খালেদা জিয়া। গত ৩০ ডিসেম্বর দলীয় প্রতীকে হওয়া ওই নির্বাচনে বিএনপির ভরাডুবি হয়। অবসরের পর বিচারকদের রায় লেখা নিয়ে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার সাম্প্রতিক বক্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনের নানা আলোচনা বিএনপির বৈঠকে আসতে পারে বলে মনে করছেন দলের নীতিনির্ধারকরা।আবার বিএনপির কাউন্সিলের সম্ভাব্য তারিখ নিয়েও স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনা হতে পারে বলে গণমাধ্যমের খবর।
এদিকে, বর্তমান সরকারের আমলে মামলায় জড়জড়িত নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়িয়ে টাইম লাইনে চলে এসেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও আইনজীবী নেতা অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন। মামলার ভয়ে যখন দলের দাপটি নেতারা মুখ লুকিয়ে রেখেছেন তখন তিনি সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন অনেকটা দাপটের সঙ্গেই। আইনজীবী নেতা হওয়ার কারণেই অবশ্য তিনি এ সুযোগটা পেয়েছেন। তারপরও তাকে জেলে যেতে হয়েছে। কিন্তু তারপরও পিছ পা হননি তিনি। দলের ক্রান্তি লগ্নে পাশে থাকা এ নেতাকে সে কারণেই সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণ ফোরাম স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দেখতে চায় বিএনপির অঙ্গ সংগঠন জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা-জাসাস নেতাকর্মীরা। বৃহস্পতিবার এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে জাসাস ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি জাহাঙ্গীর শিকদার এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন।তিনি বলেন, খন্দকার মাহবুব হোসেন বিএনপির চরম দুর্দিনে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে সক্রিয় থেকেছেন, কথা বলেছেন। এখনো সক্রিয় রয়েছেন। এজন্য তাকে জেলও খাটতে হয়েছে। কিন্তু তিনি পিছপা হননি। তাই আমাদের আশা, বিএনপির আগামী কাউন্সিলে অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেনকে দলের স্থায়ী কমিটিতে দেখতে পাবো।’ এ সময় উপস্থিত নেতাকর্মীরা করতালির মাধ্যমে জাহাঙ্গীর শিকদারের বক্তব্যকে সমর্থন করে।
তবে খন্দকার মাহবুব েেহাসেন এ প্রসঙ্গ নিয়ে কোনো কথাই বলেননি। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, আমার হাত ধরেই রিজভী অহমেদ অ্যাডভোকেট হয়েছে। এ সময় আলোচনা সভার মঞ্চে আসনগ্রহণকারী রিজভী আহমেদকে হাসিমুখে হাততালি দিতে দেখা যায়।দলীয় সূত্র জানায়, আগামী মার্চে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের আগেই কাউন্সিল সম্পন্ন করতে চায় বিএনপি। দলের কাউন্সিলে নেতৃত্বে অনেক পরিবর্তন আসতে পারে। সেক্ষেত্রে স্থায়ী কমিটিতে বেশ কয়েকজন নতুন মুখ যোগ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। চেয়ারপারসনের আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত আইনজীবী নেতা অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুবকে ওই পদে আনা হতে পারে বলে দলেও কানাঘোষা চলছে। তবে বিএনপিতে অলিখিতভাবে আঞ্চলিক প্রথা চালু আছে। সেক্ষেত্রে স্থায়ী কমিটিতে যাওয়ার লড়াইয়ে খন্দকার মাহবুব হোসেনের সঙ্গে বরিশাল অঞ্চল থেকে আরো দুইজন প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছেন। তারা হলেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীরউত্তম ও অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন।তাই বরিশাল অঞ্চল থেকে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরামে কে জায়গা পেতে যাচ্ছেন তা জানার জন্য কাউন্সিল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।