দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২১ জানুয়ারি ২০১৬: ২০১৫ সালের গড় বৈশ্বিক তাপমাত্রা উষ্ণতার দিক দিয়ে বিগত অনেক বছরের রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়ে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। উষ্ণতা বৃদ্ধি নিয়ে বিজ্ঞানীরা বহুদিন যাবত সতর্কতা দিয়ে আসছিলেন। পৃথিবীর দুই মেরুতে জমাট বরফ গলতে শুরু করেছে অনেক আগে থেকেই। সেই সাথে বেড়ে চলেছে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা। বন্যাকবলিত হচ্ছে সমুদ্র তীরবর্তী নিচু অঞ্চলগুলো। বিজ্ঞানীদের এই সতর্কতাগুলো অনেকদিন যাবতই আমলে নেয়নি মানুষ। কিন্তু সামগ্রিক উষ্ণতা বৃদ্ধির এ বৈশিষ্টগুলো ইতিমধ্যেই প্রকট আকার ধারণ করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের দুটো সরকারি সংস্থা ২০১৫ সালকে উষ্ণতম সাল হিসেবে চিহ্নিত করেছে। গত বছরের নভেম্বরের শেষে প্যারিসে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন। সেখানে বিশ্বের প্রায় ১৯৫টি দেশের প্রতিনিধি এবং রাষ্ট্রনায়কেরা অংশগ্রহণ করেছিলেন। উষ্ণতা বৃদ্ধিতে গ্রীনহাউস গ্যাস নিঃসরণ সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে কল-কারখানা এবং যানবাহন থেকে নিঃসরিত কার্বন। যদিও সম্মেলন শেষে কার্বন নিঃসরণ কমানোর জন্য একটি সম্মিলিত চুক্তি করা হয়েছে, কিন্তু উষ্ণতা রুখতে সেটা কতটা সাহায্য করবে তা নিয়ে অনেক পরিবেশবাদীর মনেই শঙ্কা রয়েছে। এর মধ্যে ২০১৫ সালের এই উষ্ণতার রেকর্ড সেই শঙ্কাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ সংস্থা নাসা এবং ন্যাশনাল ওশানিক এন্ড এটমোসফেরিক অ্যাডমিনিসট্রেশান থেকে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, ২০১৫ সালে বিশ্বের সমুদ্র এবং ভূখণ্ডের গড় তাপমাত্রা ছিল ১.৬২ ডিগ্রি ফারেনহাইট (০.৯০ সেলসিয়াস) যেটা কিনা গত বিংশ শতকের মধ্যে বেশি। এর সাথে সবচেয়ে উৎকৃষ্ট তুলনা করা যেতে পারে ২০১৪ সালের গড় তাপমাত্রাকে। ২০১৪ সালে গড় তাপমাত্রা ছিল ০.২৯ ডিগ্রি ফারেনহাইট (০.১৬ সেলসিয়াস)। ইংল্যান্ডের মেট অফিসের জলবায়ু বিজ্ঞানীরা এবং ইস্ট এঞ্জেলিকা জলবায়ু গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা যুক্তরাষ্ট্রের প্রাপ্ত ফলাফলের যথার্থতা বিচার করে গত বুধবার তাদের ফলাফল প্রকাশ করেছে। বিজ্ঞানীরা এই উষ্ণতার কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন মানুষের কার্যক্রম এবং জীবাশ্ম তেল পোড়ানোকে।