20-01-16-BNP_Dhaka Mohanagar-2

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২০ জানুয়ারি ২০১৬: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, প্রধান বিচারপতির বক্তব্য অনুযায়ী সরকারের বৈধতা নেই। অবৈধ সরকার অনৈতিকভাবে ক্ষমতায় থাকার জন্য দুর্নীতিকে বৈধতা দিচ্ছে।এ নিয়ে সরকারের মধ্যেই কোন্দল শুরু হয়েছে।বুধবার বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে সব রাজবন্দির মুক্তির দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি। ঢাকা মহানগর বিএনপির আয়োজনে এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী আবুল বাসার ও পরিচালনা করেন, খিলগাঁ থানা বিএনপির সভাপতি ইউনুছ মৃধা এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ।

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার বক্তব্য অনুযায়ী সরকারের বৈধতা নেই। নিজেদের মধ্যে কোন্দল শুরু হয়ে গেছে। দুর্নীতিকে বৈধতা দিচ্ছে। প্রতিদিন পদ্মসেতুর ব্যয় বাড়ছে। মৌচাক ফ্লাইওভারে ১২০০ কোটি টাকা ব্যয় বাড়িয়েছে। এসব বাড়ানো অর্থ সরকার লুটপাট করছে। সকল দুর্নীতির বৈধতা দিচ্ছে সরকার।উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সুপ্রিমকোর্টের ওয়েবসাইটে ১৬ জানুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণের একবছর পূর্তিতে প্রধান বিচারপতির দেয়া বাণীতে এস কে সিনহা বলেন, বিচারপতিদের অবসরে গিয়ে রায় লেখা আইন ও সংবিধান পরিপন্থি। কোনো কোনো বিচারক রায় লিখতে অস্বাভাবিক বিলম্ব করেন, আবার কেউ কেউ অবসর গ্রহণের দীর্ঘদিন পর পর্যন্ত রায় লেখা অব্যাহত রাখেন, যা আইন ও সংবিধান পরিপন্থি।

প্রতিবাদ সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান জিয়াউর রহমানের সমাধি সরানোর প্রসঙ্গে বলেন, পূর্তমন্ত্রী বলছেন আইউব খানের পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ হবে। আইউব খানের প্রতি এতো শ্রদ্ধা। ভাবতে ভালোই লাগে।তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের জানাজায় লক্ষ লক্ষ লোক উপস্থিত হয়েছিল। তার কবরে হাত দিতে গেলে লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রতিবাদে ফেটে পড়বে। কাউকে দাওয়াত দেয়া লাগবে না। সরকারের উচিত বুঝে শুনে কবরে হাত দেয়া। চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, পত্রিকায় নিউজ যা-ই হোক তারেক রহমান ভবিষ্যতে নেতৃত্ব দিবেন আমরা এটা বিশ্বাস করি। আমরা ধানের শীষের সমর্থক। শহীদ জিয়ার সৈনিক।

সমাবেশে যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, যুব বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সমাজ কল্যান বিষয়ক সম্পাদক আবুল খায়ের ভূইয়া, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ,স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র সহ সভাপতি মুনির হোসেন, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন, ওলামা দলের সভাপতি হাফেজ আব্দুল মালেক, ছাত্রদলের সহ সভাপতি এজমল হোসেন পাইলট প্রমুখ বক্তব্য দেন। এদিকে, সদ্য সমাপ্ত পৌরসভা নির্বাচনে কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগ করেছে বিএনপি। ঢাকায় নিযুক্ত বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠকে এ অভিযোগ তুলে ধরেছেন দলটির শীর্ষ নেতারা।বুধবার বিকেলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সোয়া চারটা থেকে সোয়া পাঁচটা পর্যন্ত ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন।

তিনি জানান, সম্প্রতি যে পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো, সে নির্বাচনকে আমরা কিভাবে দেখছি, তা জানতে চেয়েছিলেন বিদেশি কূটনীতিকরা। তাদের কাছে নির্বাচনে অনিয়ম-কারচুপির বিষয়ে অভিযোগ তুলে ধরেছি আমরা। আপনারা কোনো দালিলিক প্রমাণ দিয়েছেন কি-না, সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে রিপন বলেন, আমরা দালিলিক তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করেছি।তারা কোনো কমেন্টস করেছেন কি-না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রথাগতভাবে বিদেশি কূটনীতিকরা কোনো কমেন্টস করেন না। তবে আমরা কারচুপি-অনিয়মের বিষয়ে আমাদের অভিযোগ আমরা তুলে ধরেছি।

সমসাময়িক রাজনৈতিক অন্যান্য বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হয় বলেও জানান রিপন।বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি রবার্ট ডি ওয়াটকিনস্ এবং সুইডেন, ডেনমার্ক ও তুরস্কের রাষ্ট্রদূতসহ ১৪টি দেশের কূটনীতিকরা বৈঠকে অংশ নেন।বিএনপির বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়াও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইনাম আহমেদ চৌধুরী ও সাবিহউদ্দিন আহমেদ, মধ্যপ্রাচ্যে খালেদা জিয়ার বিশেষ দূত ইনামুল হক চৌধুরী এবং বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।