দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২০ জানুয়ারি ২০১৬: সামনে এশিয়া কাপ ও টি২০ বিশ্বকাপ। আসন্ন টুর্নামেন্টকে সামনে রেখে বাংলাদেশ দলে চলছে পরীক্ষা-পরীক্ষা। নতুনদের সুযোগ দিয়ে বাজিয়ে দেখা হচ্ছে। এ কাজটি স্বাগতিকরা শুরু করেছে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চার ম্যাচের টি২০ সিরিজ দিয়ে। প্রথম ম্যাচে অভিষেক হয় নুরুল হাসান সোহানের। উইকেটের পেছনে ও সামনে বেশ ভালোই পারফর্ম করছেন তিনি।এদিকে টানা দুই ম্যাচ জিতে বাংলাদেশ পরীক্ষার ম্যাচ হিসেবেই বেছে নেয় তৃতীয় টি২০ ম্যাচকে। এই ম্যাচে অভিষেক ঘটে চারজন ক্রিকেটারের। তারা হলেন মোহাম্মদ শহিদ, আবু হায়দার রনি, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও মুক্তার আলী।
ওয়ালটন টি-টোয়েন্টি সিরিজে এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ নিশ্চিত করা হলো না টাইগারদের। সিরিজ জিততে তাই তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে ২২ জানুয়ারি সিরিজের চতুর্থ ও শেষ ম্যাচের দিকে। বুধবার তৃতীয় ম্যাচে সফরকারী জিম্বাবুয়ের কাছে ৩১ রানের পরাজয় মেনে নেয় বাংলাদেশ। ফলে, চার ম্যাচ সিরিজ ২-১ এ থমকে দাঁড়ালো।আগে ব্যাট করে বড় সংগ্রহ দাঁড় করায় সফরকারী জিম্বাবুয়ে। নির্ধারিত ২০ ওভারে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৮৭ রান তোলে স্প্রি বকরা। জবাবে নির্ধারিত ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ তোলে ১৫৬ রান।
এর আগে খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে দুপুর আড়াইটায় টস হওয়ার কথা থাকলেও হালকা বৃষ্টির কারণে তা নির্ধারিত সময়ে সম্পন্ন হয়নি। পরে টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় সফরকারীরা। নিয়মিত অধিনায়ক এল্টন চিগুম্বুরা দলের বাইরে থাকায় জিম্বাবুয়ের হয়ে টস করেন হ্যামিলটন মাসাকাদজা।প্রথম চার ওভারে টাইগারদের বিপক্ষে এক উইকেটে ৪৫ রান তোলেন জিম্বাবুয়ের ওপেনার ভুসি সিবান্দা এবং হ্যামিলটন মাসাকাদজা। চতুর্থ ওভারের শেষ বলে মাসাকাদজাকে বিদায় করেন অভিষিক্ত মোহাম্মদ শহীদ। আউট হওয়ার আগে মাসাকাদজা ১৪ বলে ২০ রান করেন।দুপুর সাড়ে তিনটার পর আবারো বৃষ্টি শুরু হলে ম্যাচ বন্ধ রাখেন ম্যাচের আম্পায়াররা। তার আগে পর্যন্ত ৭ ওভারে এক উইকেট হারিয়ে ৭২ রান তোলে জিম্বাবুয়ে। বৃষ্টির বাধায় প্রায় ২২ মিনিট খেলা বন্ধ থাকলেও কোনো ওভার কাটা যায়নি।
বৃষ্টির পর আবারো ম্যাচ শুরু হয়। এরপরই সাকিব আন্তজার্তিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ৪০০তম উইকেট তুলে নেন মুতুমবামিকে ফিরিয়ে দিয়ে। দলীয় নবম ওভারে জিম্বাবুয়ের এ ব্যাটসম্যান আউট হওয়ার আগে করেন ১৯ বলে ২০ রান। দলীয় ৮০ রানে স্বাগতিক বাংলাদেশ জিম্বাবুয়ের দুই উইকেট ফেলে দিলেও বড় সংগ্রহের দিকে যেতে থাকে সফরকারীরা। তবে, আগের ওভারে মুতুমবামিকে ফেরানো সাকিব নিজের পরের ওভারে ওপেনার ভুসি সিবান্দাকে ফিরিয়ে দেন। সিবান্দা আউট হওয়ার আগে করেন ৩৩ বলে ৪৪ রান।ইনিংসের ১৮তম ওভারে ম্যালকম ওয়ালারকে ফিরিয়ে দেন সাকিব। জিম্বাবুয়ের চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে ওয়ালার ২৩ বলে ৪৯ রান করেন। ঝড়ো ইনিংস খেলার পথে ওয়ালার দুটি চার আর চারটি ছক্কা হাঁকান।শেষ ওভারের প্রথম বলে আবু হায়দার রনি এলবির ফাঁদে ফেলেন শেন উইলিয়ামসকে। ২৬ বলে উইলিয়ামস দুটি চার আর একটি ছক্কায় ৩২ রান করেন।
একই ওভারের পঞ্চম বলে সিকান্দার রাজাকে ফেরান আবু হায়দার।বাংলাদেশের হয়ে ৪ ওভারে ৩২ রান খরচায় সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নেন সাকিব। দুটি উইকেট দখল করেন ৪ ওভারে ৪০ রান খরচ করা আবু হায়দার রনি। একটি উইকেট পান মোহাম্মদ শহীদ।জয়ের লক্ষ্যে স্বাগতিকদের হয়ে ব্যাটিং উদ্বোধন করতে নামেন ইমরুল কায়েস ও সৌম্য সরকার। তবে, ইনিংসের প্রথম ওভারের শেষ বলে সাজঘরে ফেরেন বোল্ড হওয়া ইমরুল কায়েস (১ রান)।অষ্টম ওভারের শেষ বলে লেগ স্পিনার গ্রায়েম ক্রেমারের বলে তুলে মারতে গিয়ে আউট হন ওপেনার সৌম্য সরকার। তিনি ২১ বলে ২৫ রান করে আউট হন।দলীয় দুই রানের মাথায় ইমরুল কায়েস ফিরে গেলে রানের চাকা ঘোরানোর দায়িত্ব নেন ইনফর্ম সাব্বির এবং সৌম্য। জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে দারুণ খেলতে থাকা সাব্বির রহমান হাফ-সেঞ্চুরির করার পর সিকান্দার রাজার বলে আউট হন।
১১.২ ওভারে মুজারবানির ক্যাচে পরিণত হন এ ইনফর্ম ব্যাটসম্যান। তিনি ৩২ বলে নয় চারে ৫০ রান করেন।মোসাদ্দেক হোসেন ও সাকিব আল হাসানও ব্যাট হাতে ব্যর্থ হন। মোসাদ্দেক ১৫ ও সাকিব ৩ রানে বিদায় নেন। ১৫তম ওভারে বিদায় নেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (৬ রান)।শেষ দিকে নুরুল হাসান ৩০ রান আর মুক্তার আলি ১৯ রানে অপরাজিত থাকেন। এ জুটি থেকে আসে ৪৯ রান। মাত্র ১৭ বলে সাজানো নুরুল হাসানের ইনিংসে ছিল ৫টি চারের মার। আর ১৫ বলে ১৯ রান করার পথে মুক্তার আলি একটি করে চার ও ছক্কা হাঁকান।এ ম্যাচের মধ্যদিয়ে অভিষেক ঘটে মোহাম্মদ শহীদ, মোসাদ্দেক হোসেন, আবু হায়দার রনি ও অলরাউন্ডার মুক্তার আলীর। একাদশে জায়গা ফিরে পান ইমরুল কায়েস।