full_269798880_1453291825

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২০ জানুয়ারি ২০১৬: ভারতের ব্যাটসম্যানদের সেঞ্চুরি মানেই দলের জন্য হার অবধারিত! অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে চলতি ওয়ানডে সিরিজে ব্যাপারটা দাঁড়িয়েছে তেমনই। প্রথম, দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ভারতের হয়ে সেঞ্চুরি করেন রোহিত শর্মা, তৃতীয় ওয়ানডেতে শতক হাঁকান বিরাট কোহলি। ওই ম্যাচগুলোতে পরাজিত হয় ভারত। বুধবার ক্যানবেরায় সিরিজের চতুর্থ ওয়ানডেতে সেঞ্চুরির দেখা পান শিখর ধাওয়ান ও বিরাট কোহলি। যা হওয়ার হলো ঠিক তা-ই। ম্যাচটিতে ২৫ রানে হেরে যায় ভারত।টানা তিন ম্যাচ হেরে ইতোমধ্যে ওয়ানডে সিরিজ হাতছাড়া হয়ে গেছে ভারতের। বুধবার ক্যানবেরায় ছিল মহেন্দ্র সিং ধোনির দলের মান বাঁচানোর ম্যাচ। মান তো বাঁচলই না। উল্টো চতুর্থ ম্যাচেও টিম ইন্ডিয়ার কপালে জুটল হারের তিক্ত স্বাদ। অস্ট্রেলিয়া সিরিজে লিড নিল ৪-০তে। এখন ভারতের সামনে হোয়াইটওয়াশ ঠেকানোর পালা।

প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে অস্ট্রেলিয়া করে ৩৪৮ রান। জবাবে ৪৯.২ ওভারে সবকটি উইকেট খুইয়ে ভারতের ইনিংস থেমে যায় ৩২৩ রানে।এদিনও ভারতীয় বোলারদের দৈন্য দশা ছিল চোখে পড়ার মতোই। ইশান্ত-যাদব-জাদেজাদের তুলোধুনো করে ৩৪৮ রানের বড় সংগ্রহ গড়ে অস্ট্রেলিয়া। ভারতীয় বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে কম ইকোনোমি রেট জাদেজার, ৫.১০! ১০ ওভারে ৫১ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন তিনি। সফরকারীদের সবচেয়ে খরুচে বোলার ইশান্ত শর্মা। ১০ ওভারে ৭.৭০ ইকোনোমি রেটে দিয়েছেন ৭৭ রান। সফলও তিনি। সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন ভারতের দীর্ঘকায় এই পেসার। ৬৭ রান খরচায় ৩ উইকেট দখলে নেন উমেশ যাদব।টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে অস্ট্রেলিয়ার উদ্বোধনী জুটিতে ১৮৭ রান করেন ডেভিড ওয়ার্নার ও অ্যারন ফিন্স। তাদের ব্যাটিং তাণ্ডবে কোণঠাসা হয়ে পড়েন ভারতীয় বোলাররা। ইশান্ত শর্মার বলে সরাসরি বোল্ড হয়ে ওয়ার্নার সাজঘরে ফেরেন ৭ রানের আক্ষেপ নিয়ে। ৯২ বলে ১২টি চার ও ১টি ছক্কায় ৯৩ রান করেন ওয়ার্নার। আরেক অসি ওপেনার অ্যারন ফিন্সকে অবশ্য আক্ষেপ করতে হয়নি। সেঞ্চুরি পূর্ণ করেই ক্রিজ ছাড়েন ফিন্স। দলকে বড় সংগ্রহ এনে দেওয়ার পেছনে তার অবদান ১০৭ রান। সমান ১০৭ বলে ৯টি চার ও দুটি ছক্কার সাহায্যে ইনিংসটি সাজান তিনি।

অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের জুটি হয়েছে তৃতীয় উইকেটে। এই জুটিতে ৬৭ রান দলের স্কোরশিটে যোগ করেন মিচেল মার্শ ও স্টিভেন স্মিথ। ২৯ বলে চারটি চার ও তিনটি ছক্কায় ৫১ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন অধিনায়ক স্মিথ। আগের ম্যাচে জয়ের নায়ক গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ব্যাট থেকে আসে ৪৩ রান।লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন রোহিত শর্মা। কিন্তু তার ইনিংসের দৌড় বেশিক্ষণ টিকেনি। ২৫ বলে ২টি চার ও তিনটি ছক্কায় ৪১ রান করে রিচার্ডসনের বলে কাটা পড়েন। তবে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ২১২ রান করে ভারতকে জয়ের পথেই রেখেছিলেন বিরাট কোহলি ও শিখর ধাওয়ান। কিন্তু ভারতের জয়ের স্বপ্ন ফিকে হয়ে যায় ম্যাচের শেষ দিকে অসি বোলার হ্যাস্টিংস ও রিচার্ডসনের তাণ্ডবে। শুরুটা ধাওয়ানকে বিদায় করে। দলীয় ২৭৭ রানের মাথায় হ্যাস্টিংসের বলে বেইলির হাতে ক্যাচ তুলে দেন ভারতীয় ওপেনার।

বিদায়ের আগে তুলে নিয়েছেন দারুণ এক সেঞ্চুরি। ১১৩ বলে ১৪টি চার ও দুই ছক্কায় ১২৬ রান করেন ধাওয়ান। সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান বিরাট কোহলিও। ৯২ বলে করেছেন ১০৬ রান। ভারতের টেস্ট অধিনায়কের ইনিংসে ছিল ১১টি চার ও একটি ছক্কার মার।পরবর্তী ব্যাটসম্যানদের মধ্যে শুধু রবিন্দ্র জাদেজা ছুঁয়েছেন দুই অঙ্ক। ২৪ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। মহেন্দ্র সিং ধোনি, গুরখেরাত সিং, আজিঙ্কা রাহানে, ঋষি ধাওয়ান, ভুবনেশ্বর কুমার, উমেশ যাদব ও ইশান্ত শর্মা করেন যথাক্রমে ০, ৫, ২, ৯, ২, ২ ও ০।৬৪ রানে ৫ উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সেরা বোলার কেন রিচার্ডসন। হ্যাস্টিংস নিয়েছেন দুই উইকেট। ১টি উইকেট পকেটে পুরেছেন নাথান লায়ন ও মিচেল মার্শ। সিরিজের পঞ্চম ও শেষ ওয়ানডে আগামী ২৩ জানুয়ারী সিডনিতে।