দৈনিকবার্তা-সিলেট, ১৮ জানুয়ারি ২০১৬: বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার দুরদর্শী চিন্তা, দৃঢ়চেতা ও বিচক্ষণ নেতৃত্ব, সূচিন্তিত পরিকল্পনা ও সীমাহীন দেশপ্রেম-এর কারণে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও অবকাঠামো উন্নয়নে বিষ্ময় সৃষ্টি করেছে বাংলাদেশ। সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বিরাজ করছে নজিরবিহিন স্থিতিশীলতা। আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে দেশের অবস্থান এখন অত্যন্ত সম্মানজনক অবস্থানে অধিষ্ঠিত। ২১ জানুয়ারী প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার জনসভা সফল করার লক্ষ্যে সোমবার দুপুর ২ টায় সিলেট নগরীর রেকাবীবাজারস্থ কবি নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত যুবলীগ সিলেট জেলা ও মহানগর শাখার প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।প্রধান অতিথি তার বক্তৃতায় যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ২০০৮ সালে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর অত্যন্ত দ্রুততার সাথে দেশ ও জাতিকে প্রত্যাশিত লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন। তাঁর উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে বিএনপি-জামাত নামক অপশক্তি ধারাবাহিকভাবে ষড়যন্ত্র ও নানারকম ঘৃণ্য অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ৭৬৮ কোটি টাকার বাজেট নিয়ে যে দেশটির যাত্রা শুরু হয়েছিল ৪০ বৎসরের মাথায় ২০১৫-১৬ অর্থবছরে সে দেশটির বাজেট আজ ২ লাখ ৯৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা। ৫০০০ কোটি টাকার অর্থনীতি আজ ৮ লাখ কোটি টাকায় উন্নীত। বৈদেশিক মূদ্রার রিজার্ভ ২৭ মিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে। বিএনপি-জামাতের শাসনকালে মাথাপিছু আয় ৫৪৩ ডলার থেকে আজ ১৩১৪ ডলারে উন্নীত হয়েছে। দারিদ্রের হার ৪১.৫% থেকে কমে ২২.৪% এসে দাড়িয়েছে। অতি দরিদ্রের হার ২০০৬ সালে ছিল ২৪.২% তা আজ ৭.৯% নেমে এসেছে। ২০০৬ সালের রেমিটেন্স ৪.৮০ বিলিয়ন ডলার থেকে ২০১৫ সালে ১৫.২ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। এ অগ্রগতির ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশ আজ নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। আজ বিশ্বব্যাংক বলছে শুধু ভারত নয় অনেককে ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ’ আর এ সংস্থার প্রধান অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসুর ভাষায় ‘বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি বিষ্ময়কর’। অবকাঠামো উন্নয়নে সরকারের অর্জন আরও বিষ্ময়কর।
ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে নিজস্ব অর্থায়নে স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মিত হচ্ছে। একের পর এক ফ্লাইওভার মেট্রো রেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে-র নির্মান কাজ দ্রুততার সাথে এগিয়ে চলেছে। ভারতের সাথে দীর্ঘ ৪০ বছরের স্থল সীমান্ত সমস্যার সমাধান হয়েছে। ভারত ও মায়ানমারের সাথে সমূদ্র সীমানা বিরোধ নিষ্পত্তি হয়েছে। এর ফলে সমুদ্রে ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় বাংলাদেশের নিরঙ্কুশ অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়ে আজ ১৪ হাজার ৭৭ মেঘাওয়াটে দাড়িয়েছে। ফলে বাংলাদেশের মানুষ বিদ্যুতের লোডশেডিং এর কথা ভুলতে বসেছে। উত্তরাঞ্চলে প্রতি বছরের নিয়মিত মঙ্গার অস্তিত্ব এখন শুধু ডিকশনারীর পাতায় খুঁজে পাওয়া যাবে।
বাংলাদেশের মানুষ আজ আর মঙ্গা শব্দটির সঙ্গে পরিচিত নয়। দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে অভাবিত অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। বছরের প্রথম দিনে ১ম শ্রেণী থেকে ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত সকল ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে সকল পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে বিতরণ করে বর্তমান সরকার এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বর্তমান সরকারের আমলে দেশে ২৩ হাজার ৩৩১টি বিদ্যালয়ে মালটি মিডিয়া ক্লাশরুম চালু হয়েছে। সারা দেশের স্কুলগুলোতে ২৫,৫০০ কম্পিউটার ল্যাব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সরকারের উদ্দোগে ১৬ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ আর স্বপ্ন নয় দেশের প্রতিটি মানুষ ডিজিটাল বাংলাদেশের সেবা পাচ্ছেন এবং সুবিধা ভোগ করছেন।প্রধান অতিথি, প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার জনসভা সফল করার লক্ষ্যে যুবলীগ নেতাকর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতি নিশ্চিত করতে সিলেট বিভাগের আওতাধীন প্রতিটি শাখার নেতৃবৃন্দের প্রতি নির্দেশ প্রদান করেন।
সিলেট মহানগর যুবলীগের আহবায়ক আলম খান মুক্তির সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা হিসাবে উপস্থিত ছিলেন যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মোঃ হারুনুর রশীদ, এ ছাড়াও বক্তব্য রাখনেঃ জাতিসংঘের প্রতিনিধি ডঃ আব্দুল মোমেন, যুবলীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য শহীদ সেরনিয়াবাদ, মুজিবুর রহমান চৌধুরী, মাহাবুবুর রহমান হিরন, ডঃ আহম্মদ আল কবির, আনোয়ার হোসাইন, ডঃ এনামুল কবির ইমন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক আতিক, মুহাম্মদ বদিউল আলম, আসাদুল হক আসাদ, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য কাজী আনিসুর রহমান, মিজানুল ইসলাম মিজু, রফিকুল ইসলাম চৌধুরী, সহ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় সদস্য এন আই আহম্মেদ সৈকত, রেকায়েত আলী খাঁন নিয়ন, মুক্তাদিউর রহমান শিমুল, ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তর সভাপতি মাঈনুল হোসেন খাঁন নিখিল, সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন প্রমূখ।