2016_01_04_13_04_01_AXcDq03ewnwNYwS0pW7eG8gUEvfVKY_original

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৮ জানুয়ারি ২০১৬: পিছু হটা যাবে না, সকল ষড়যন্ত্রে মোকাবেলা করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি আরও বলেন, নির্যাতন চলছে, জিয়াউর রহমানকে খলনায়ক বানানোর চেষ্টা চলছে, দল ভাঙার চেস্টা চলছে, দেশকে কারাগার বানানো হয়েছে এ সকল ষড়যন্ত্রের ভেঙে সামনে দিকে এগিয়ে যেতে হবে।জিয়াউর রহমানে ৮০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার রমনাস্থ ইন্সটিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্স-বাংলাদেশ মিলনায়তনে বিএনপি’র উদ্যোগে আলোচনা সভায় সভাপতির এ মন্তব্য করেন।

আওয়ামী লীগের দিকে ইঙ্গিত করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আক্ষেপ করে বলেন, গণতন্ত্রের জন্য দীর্ঘদিন ধরে যে দলটি সংগ্রাম ও ত্যাগ স্বীকার করেছে, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে, দীর্ঘদিনের পুরোনো সেই দলটির হাতেই গণতন্ত্র নিহত হয়েছে।তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে। আর এ কারণেই তারা ২০ দল ভাঙার ষড়যন্ত্র করছে। ছোট ছোট রাজনৈতিক দলগুলোকে ২০ দলীয় জোট থেকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করছে তারা। মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে আওয়ামী লীগের অগণতান্ত্রিক আচরণের কারণে দলীয় কার্যালয়ে পর্যন্ত সভা সমাবেশ করা যাচ্ছে না। ক্ষমতায় আসার পর থেকে গত কয়েক বছরে বিরোধী মতের নেতাকর্মীদের হত্যা, গুম ও নির্যাতন করছে তারা।এ ধরনের ঘটনা শুধু স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ই ঘটেছিল। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এখন দেশের মানুষ ও গণতন্ত্রের মহাসংকট চলছে। তাই দল-মত নির্বিশেষে জাতীয় ঐক্য দরকার। আমরা জাতীয় ঐক্যের জন্য কাজ করছি।তাই নিজেদের মধ্যে ভেদাভেদ ভুলে দেশের স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। জোটের সমন্বয়ক আরো বলেন, আদর্শ-উদ্দেশ্য ভিন্ন হওয়া সত্ত্বেও শুধু হারানো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও মানুষের অধিকার ফেরানোর লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করতেই ২০ দলীয় জোট গঠিত হয়েছে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে। এজন্য তারা গণতন্ত্রকে বিকশিত না করে অন্য একটি জোট বা দলকে ভাঙ্গার চেষ্টা করছে। অথচ, ক্ষমতাসীন এই দলটির কাজ ছিল, গণতন্ত্রকে বিকশিত করা।গণমাধ্যমের প্রতি আক্ষেপ প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, মিডিয়া শুধু বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের ভুল-ত্রুটি খুঁজে বেড়ায়। মানছি, আমাদেরও কিছু ভুল-ত্রুটি আছে। কাজ করতে গেলে ভুল-ত্রুটি হতেই পারে। কিন্তু যারা গণতন্ত্র হত্যা করেছে, মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারসমূহ কেড়ে নিয়েছে, সেসব নিয়ে মিডিয়াকে সোচ্চার হতে দেখি না।তিনি আরও বলেন, এই সরকার ভিন্নমতকে সহ্য করতে পারে না। একইসঙ্গে মানুষের কোনো ধরনের অধিকার নেই। কথা বলা, লেখা ও ভোট দেয়াসহ মানুষের সব অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। এসব অধিকার ফিরে পেতে ও হারানো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আজ সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন জাতীয় ঐক্য। তাই নিজেদের ছোট-খাট দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ভুলে দেশ ও জাতীয় স্বার্থে দেশপ্রেমিক সকল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বর্তমান সময়ে এটিই সবচেয়ে জরুরি।বিএনপির স্থায়ী কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘ক্ষমতায় যেতে পারি আর না পারি বিএনপিকে বাঁচাতে হবে। হারানো গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনাটাই বিএনপির জন্য বর্তমানে বড় চ্যালেঞ্জ। বিএনপি মিথ্যাচারের শিকার বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।মওদুদ আহমদ বলেন, স্পষ্ট করে বলতে চাই, বিএনপি জিয়াউর রহমানের আদর্শে উজ্জীবিত একটি মধ্যপন্থি উদার গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল।

বাংলাদেশের জনগণ অত্যাচার পছন্দ করে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জনগণ তাদের অধিকার আদায় করবে। জিয়াউর রহমানের মতো এবার খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা হবে।জিয়াউর রহমানের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে মওদুদ বলেন, ‘জিয়াউর রহমান দক্ষ প্রশাসক ছিলেন। তিনি পরিশ্রমী মানুষ ছিলেন। দিনে ১৮/১৯ ঘণ্টা কাজ করতেন। জিয়াউর রহমান ভোগ বিলাস পছন্দ করতেন না, ছিলেন মিতব্যায়ী। দেশে এমন কোনো মাঠ নেই যেখানে জিয়াউর রহমান পদচারণ করেননি।তিনি বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে বৈরী সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও জিয়াউর রহমান তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে ২ লাখ মেট্টিক টন খাদ্য এনেছিলেন। ভবিষ্যতে যাতে দুর্ভিক্ষ না হয় এজন্য প্রতিটি উপজেলায় গুদাম তৈরি করেছিলেন।দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ েেহাসেন, ঢাকা বিশ্ববিদালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. এমাজউদ্দিন আহমেদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. মোস্তাহিদুর রহমান প্রমুখ। আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন দলটির দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।