দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৮ জানুয়ারি ২০১৬: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা দিয়ে মেট্রোরেল যাওয়ার পক্ষে-বিপক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন রুটে বাসে চলাচলকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা পক্ষে এবং ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটি বিপক্ষে স্মারকলিপি জমা দেন। আজ সোমবার দুপুরে উপাচার্যের কার্যালয়ে গিয়ে তাঁরা পৃথকভাবে স্মারকলিপি জমা দিলে উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক তা গ্রহণ করেন।কয়েকজন শিক্ষার্থী বলছেন, উত্তরা, মিরপুর, কাফরুল, গাজীপুরসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেক শিক্ষার্থী প্রতিদিন ক্যাম্পাসে আসেন। এ সময় তাঁদের বিভিন্ন ভোগান্তির মুখে পড়তে হয়। অনেক পথ ঘুরে আসার কারণে অনেক সময় নষ্ট হয়। অনেক সময় দীর্ঘ যানজটের কারণে তাঁরা নির্ধারিত সময়ে ক্লাসে আসতে পারেন না। তাই বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা দিয়ে মেট্রো রেল গেলে ও বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় স্টেশন থাকলে তাঁরা সহজেই আসা-যাওয়া করতে পারবেন। এতে শিক্ষা পরিবেশে গতিশীলতা সৃষ্টি হবে বলে তাঁরা মনে করেন।
অন্যদিকে ছাত্র ইউনিয়ন তাদের স্মারকলিপিতে বলে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর দিয়ে মেট্রোরেলের রুট নির্মাণ হলে রাজু ভাস্কর্যের একটি অংশ আজীবন মেট্রোরেলের রুটের ছায়ায় ঢেকে থাকবে। এতে এর ত্রিমাত্রিক তাৎপর্য হারিয়ে যাবে। সিমেন্টের আস্তর ধসে পড়বে, ভাস্কর্যে ফাটল ধরতে পারে। প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তরের জাতীয় ঐতিহ্য সংরক্ষণের নীতিমালা অনুযায়ী, জাতীয় ঐতিহ্য হিসেবে জাতীয় জাদুঘর, চারুকলা, তিন নেতার মাজার, ঢাকা গেটের ২০০ বর্গমিটার এলাকায় কোনো ভারী স্থাপনা তৈরি করার নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। মেট্রোরেল থেকে সৃষ্ট এক বছরের কম্পন একটি ছয় থেকে সাড়ে ছয় মাত্রার ভূমিকম্পের সমান, যা ঢাকা গেইট ও কার্জন হলের জন্য হুমকি। ভূতাত্ত্বিক জরিপকারী প্রতিষ্ঠানও সেটা স্বীকার করেছে।স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্য দিয়ে মেট্রোরেল নির্মিত হলে শিক্ষার পরিবেশ মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হবে। পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট, কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগ, অণুজীববিজ্ঞান বিভাগসহ অনেক বিভাগের অবস্থান প্রস্তাবিত মেট্রোরেল রুটের সন্নিকটে।দুই পক্ষের স্মারকলিপি পেয়ে উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক তাঁদের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, রুট পরিবর্তন সম্ভব না। তবে শব্দ দূষণ ও কম্পন যাতে কম হয় এবং শিক্ষার পরিবেশ যাতে নষ্ট না হয় সে জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করা হবে।