গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৫ জানুয়ারি ২০১৬: ২০ জানুয়ারি (বুধবার) বিকেল ৩টায় পাকিস্তানি হাইকমিশন ঘেরাওয়ের ঘোষণা দিয়েছে গণজাগরণ মঞ্চ।শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার এ ঘোষণা দেন। পাকিস্তানে বাংলাদেশ দূতাবাসে নিযুক্ত কূটনীতিক মৌসুমী রহমানকে বহিষ্কার করায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সরকারের উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় এ প্রতিবাদ বিক্ষোভ সমাবেশ ও মশাল মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

ইমরান সরকার বলেন, এ ঘটনার প্রেক্ষিতে আমরা এরই মধ্যে পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে সরকারকে অনুরোধ করেছি।তিনি বলেন,পাকিস্তানের সাধারণ জনগণের প্রতি আমাদের কোন ক্ষোভ নেই। কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত পাকিস্তান নামক রাষ্ট্র একাত্তরের গণহত্যার জন্য ক্ষমা না চাইবে ততক্ষণ পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাবে না।আমরা এর আগে সরকারকে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছি। কিন্তু সরকার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এখনো কোন ব্যবস্থা নেয়নি। সরকার কেন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নতজানু, এ প্রশ্ন করেন তিনি।পরে শাহবাগ থেকে একটি মশাল মিছিল টিএসসি ঘুরে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এসে শেষ হয়।শুক্রবার বিকেলে শাহবাগে মঞ্চের বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এ হুঁশিয়ারি দেয়া হয়। পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশি কূটনীতিক মৌসুমীকে বহিষ্কারের পর বাংলাদেশের সরকারের তরফ থেকে উপযুক্ত ব্যবস্তা নেয়া হয়নি- এমন অভিযোগ এনে এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

এরআগে গত শুক্রবার এই ঘটনার প্রতিবাদে পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সকল কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক বন্ধের দাবিতে সমাবেশ করেছিল গণজাগরণ। ওই সমাবেশ থেকে পাকিস্তানকে জবাব দিতে সরকারকে ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেয়া হয়েছিল। সেদিন ইমরান বলেছিলেন, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সরকার পাকিস্তানের কূটনীতিকদের ফেরত পাঠিয়ে উপযুক্ত জবাব না দিলে আবারও পাকিস্তান হাইমকমিশন ঘেরাও এবং পাকিস্তানি পণ্য বর্জনের কর্মসূচি দেয়া হবে। এবারও যদি ২০১৩ সালের মতো আঘাত আসে, তাহলে সেই আঘাত উপেক্ষা করেই পাকিস্তানের হাইকমিশন ঘেরাও করা হবে।আজকের সমাবেশে ইমরান পাকিস্তানকে জঙ্গিবাদের মদতদাতা ও প্রশ্রয়দাতা আখ্যা দিয়ে দেশটির বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান। তিনি বলেন, উপমহাদেশে জঙ্গিবাদের হেডকোয়ার্টার ইসলামাবাদ। আর বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের আস্তানা পাকিস্তান দূতাবাস। বাংলাদেশে পাকিস্তানের যে হাইকমিশন রয়েছে সেটা দূতাবাস নয়, জঙ্গিবাস হয়ে গেছে। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যা চালানোর জন্য এবং মৌসুমী রহমানকে অকারণে বহিষ্কারের জন্য পাকিস্তান যতক্ষণ পর্যন্ত বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা না চাইবে ততক্ষণ পর্যন্ত দেশটির সঙ্গে সকল কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক বন্ধ রাখার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বানও জানান তিনি।

সমাবেশে ইমরান ছাড়াও বক্তব্য রাখেন- সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী শান্তা বসু, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক ইমরান হাবিব, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি খান আসাদুজ্জামান মাসুম, গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম সংগঠক মারুফ রসুল, ভাস্কর রাসা প্রমুখ।সমাবেশে শেষে একটি মশাল মিছিল বের করা হয়।