দৈনিকবার্তা-রাজশাহী, ০৯ জানুয়ারি ২০১৬: বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী নির্বাচন কমিশনের ওপর অভিযোগ জানিয়ে বলেন,‘নির্বাচন কমিশন সরকারের আনন্দের ঢাক-ঢোল পেটাচ্ছে। তারা কোনো সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করছে না।শনিবার দুপুর ১২টায় রাজশাহী মহানগর বিএনপির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত পৌর নির্বাচন নিয়ে রুহুল কবির রিজভী বলেন, গত পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয় হয়েছে। তবে জনগণের হার হয়েছে। পৌরসভার নির্বাচনে বিএনপির নেতাকর্মীরা মাঠে কাজ করতে পারেনি।যেখানে গণতন্ত্র অবরুদ্ধ, নেতাকর্মীদের নামে পাশে মামলা-হামলার দায় চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। সেখানে খুব অল্প কয়েকজন নেতাকর্মী মাঠে কাজ করতে পেরেছে।২০ দলীয় জোট ভাঙার পেছনে সরকারের হাত আছে এমন প্রশ্নের জবাবে রিজভী এরশাদ সরকারের উদাহরণ টেনে বলেন, যখন কোনো সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে, তখন তারা এ ধরনের কাজ করেন। বিগত সময়ে এরশাদ সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার কারণে এ ধরনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। বর্তমান সরকারও জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সে কারণে তারাও এ ধরনের কাজ করছেন।
ইসলামী ঐক্যজোটের একাংশ ২০ দলীয় জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার বিষয়ে রিজভী বলেন,মহাসাগর থেকে এক বালতি পানি তুলে নিলে কী আর মহাসগর শুকিয়ে যায়? বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ৫ জানুয়ারীর জনসভায় জাতীয়তাবাদীদের জোয়ার দেখে সরকার দিশেহারা হয়ে পড়েছে। তাই ঈর্ষান্বিত হয়ে তারেক রহমানের সম্পদ অনুসন্ধানের ঘোষনা দিয়েছে। মঈনুদ্দিন-ফখরুদ্দিন তারাও তারেক রহমানের অবৈধ সম্পদের খোঁজ পায়নি। আওয়ামীলীগ ৫ বছর ক্ষমতায় থেকেছে, তখনো অবৈধ সম্পত্তির খোঁজ পায়নি। ২ বছর ভোটবিহিন নির্বাচনের পরেও দূর্নীতির খবর পাওয়া গেল না।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির এই নেতা দুদকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, দুদক একটি বিষধর সাপ। এর একদিকে আছে বিষ, অন্যদিকে নির্লজ্জ ক্ষমা। বিষাক্ত দিক দিয়ে দুদক সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে বিএনপির হাজার হাজার নিরীহ নেতা-কর্মীকে দংশন করছে। ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দিয়ে নেতা-কর্মীদের জেলে পাঠাচ্ছে। আরেক দিকে সরকারের নির্দেশে বিষহীন লেজ দিয়ে পরীক্ষিত দুর্নীতিবাজদের ক্ষমা করে দিচ্ছে। উদারতা দেখাচ্ছে।রিজভী অভিযোগ করেন, দুদকের এই নির্লজ্জ উদারতায় হল-মার্ক কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত, পদ্মা সেতু কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত সরকারের মন্ত্রী, রাঘববোয়ালেরা পার পেয়ে গেছেন। সরকারি দলের সাড়ে সাত হাজার দুর্নীতিবাজ নেতার অপকর্ম ধুয়েমুছে ছাপ করে দিয়েছে এই মেরুদণ্ডহীন দুমুখো দুদক।
তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করলে বিএনপি আন্দোলন কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে উল্লেখ করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের আজ্ঞাবহ ফখরুদ্দীন সরকার দুই বছর ক্ষমতায় ছিল, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোনো প্রমাণ হাজির করতে পারেনি। অবৈধ কোনো সম্পদের অস্তিত্ব পায়নি। তারেক রহমানের কোনো অবৈধ সম্পদ থাকলে আওয়ামী লীগ এত দিন বসে থাকত না। এত দিন পর দুদককে দিয়ে তারেক রহমানের অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধান করা হচ্ছে। এটা বিএনপির বিরুদ্ধে সরকারের নতুন ষড়যন্ত্র।বক্তব্যে পৌরসভা নির্বাচনে আবারও কারচুপির অভিযোগ করেন রিজভী। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য শাহীন শওকত, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কামরুল মনির, রাজশাহী মহানগর কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আসলাম সরকার,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জেলা বিএনপির দফতর সম্পাদক গোলাম মোস্তফা মামুন প্রমুখ।