BITF.jpg1422171974680

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ০৯ জানুয়ারি ২০১৬: দিন যতই যাচ্ছে ততই ভিড় বাড়ছে ২১তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার।মেলার নবম দিন শনিবার সব বয়সী ক্রেতা-দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত মেলা প্রাঙ্গণ। ছুটির দিনে দর্শনার্থীদের স্রোতে মেলায় যেন তিল ধারণের ঠাঁই নেই। তাই বিক্রেতাদের মুখেও দেখা গেল সন্তুষ্টির ছাপ।শনিবার ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা ঘুরে দেখা যায়, সকালে লোকজনের ভিড় কিছুটা কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লোকজন বাড়তে থাকে। দুপুর গড়িয়ে বিকেল দর্শনার্থীদের স্রোত আরো তীব্রভাবে আছড়ে পড়ে মেলা প্রাঙ্গণে। শেষ বিকেলই মেলা প্রাঙ্গণ জনসমুদ্রে পরিণত হয়। এ সময় বিক্রেতাদেরও ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। আশানুরূপ ক্রেতা-দর্শনার্থী পেয়ে খুশি বিক্রেতারা। এবছর রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় ক্রেতা-দর্শনার্থীদের সারা গত বছরের তুলনায় ভালো পাওয়া যাবে বলে আসা করছেন মেলায় অংশ নেয়া স্টল-প্যাভিলিয়নের মালিকরা।

এদিকে, মেলায় ক্রেতাদের বেশি আগ্রহ দেখা গেছে গৃহস্থালী পণ্যের প্রতি। প্লাস্টিক পণ্যের পাশাপাশি রয়েছে প্রেসার কুকার, জুস মেকার, জুস ব্লেন্ডার, ওভেন, রাইস কুকার, ইস্ত্রি, ইন্ডাকশন চুলা, ফ্যানসহ নানা ধরণের ইলেক্ট্রনিক ও ইলেক্ট্রিক গৃহস্থালী পণ্য। মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে। বাণিজ্য মেলায় ভিশনের প্যাভিলিয়ন ইনচার্জ তৌফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশে একমাত্র ভিশন ব্রান্ড সব চেয়ে কম মূল্যে এলইডি স্মার্ট টিভি দিচ্ছে। এয়ারকুলার, ফ্যান, রাইস কুকার, রুম হিটার, আয়রন, কেব্ল সব ধরনের ইলেক্ট্রনিক পণ্য আছে। মেলায় ভিশনের সব ধরনের পণ্যেরে ওপর ৬ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বিশেষ ছাড় দেয়া হচ্ছে। সঙ্গে হোম ডেলিভারি ফ্রি। ফলে ভিশনের পণ্যের প্রতি ক্রেতা- দর্শনার্থীদের আগ্রহ বেশি।

ধানমন্ডি থেকে মেলায় আসা বেসরকারি চাকরিজীবী আশরাফ হোসেন বলেন, ছুটির দিন হওয়ায় মেলায় ঘুরতে এসেছি। আমি একটি এলইডি টিভি কিনবো। মেলায় সব ব্রান্ডের পণ্য পাওয়া যায়। দাম ও মান যাচাই করছি। বাজেটের মধ্যে পছন্দের পণ্যটি পেলেই কিনবো। মেলায় পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা রাজধানীর পুরান ঢাকার নয়ন বলেন, প্রতি বছরই মেলার অপেক্ষায় থাকি। আজ অফিস নেই তাই পরিবারের সবাইকে নিয়ে মেলায় চলে আসলাম। মেলা ঘুরে বিভিন্ন পণ্য দেখছি। বাচ্চার জন্য খেলনা ও শীতের পোশাক কিনলাম। একটি রাইস কুকার ও ঘরে ব্যবহারের জন্য প্লাস্টিকের বিভিন্ন সামগ্রি কনেছি। পছন্দ হলে আরও কিনব।এদিকে, মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় ক্রেতাদের চাহিদা ও রুচির ভিন্নতা অনুযায়ী ৪ শতাধিক মডেলের পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রি করছে ওয়ালটন। মেলা ও নতুন বছর উপলক্ষে ওয়ালটন ব্র্যান্ড বাজারে ছেড়েছে প্রায় অর্ধশতক নতুন মডেলের পণ্য। পাশাপাশি দাম কমানো হয়েছে রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজার, সিআরটি ও এলইডি টেলিভিশনসহ অসংখ্য পণ্যের।শনিবার ওয়ালটনের কর্মকর্তারা এসব তথ্যই জানালেন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মেলার মাধ্যমে বছরের শুরুতে ক্রেতাদের হাতে নতুন পণ্য তুলে দিতে ওয়ালটন বাজারে নিয়ে এসেছে ইনভার্টার প্রযুক্তির বেশ কয়েকটি নোফ্রস্ট রেফ্রিজারেটর, ডোনাট মেকার, স্যান্ডউইচ মেকার, কেক মেকার, ট্রাভেল ব্লেন্ডার, এলইডি বাল্ব, সুইচ, সকেট, সিলড লিড রিচার্জেবল ব্যাটারি, হোল্ডার, ফ্যান রেগুলেটরসহ নানা ধরনের ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যাল পণ্য। এরমধ্যে ৫২৬ লিটারের ৩ দরজা বিশিষ্ট নো ফ্রস্ট ফ্রিজ উল্লেখযোগ্য।এবারের মেলায় ওয়ালটনের রয়েছে দৃষ্টিনন্দন দু’টি সেলস ও ডিসপ্লে সেন্টার। একটি প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন নম্বর ২৩ ও অন্যটি স্টল (নম্বর ৩১এ ও ৩১বি)। যেখানে প্রদর্শন করা হচ্ছে ওয়ালটনের সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি উচ্চ গুণগতমানের ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যাল হোম অ্যাপ্লায়েন্সেস। মেলার মূল প্রবেশ দ্বারের সোজাসুজি ফোয়ারার পশ্চিম পাশে এবং বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়নের দক্ষিণ পাশেই স্থাপন করা হয়েছে ওয়ালটনের দৃষ্টিনন্দন প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন।

তিন তলা প্যাভিলিয়নের নিচতলায় রয়েছে রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজার, সিআরটি ও এলইডি টেলিভিশন, এয়ার কন্ডিশনারসহ অন্যান্য ইলেকট্রনিক্স পণ্য।আরও আছে-এলইডি বাল্ব, সুইচ, সকেট, সিলড লিড এসিড রিচার্জেবল ব্যাটারি, জেনারেটরসহ আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ইলেকট্রিক্যাল অ্যাপ্লায়েন্সেস।দ্বিতীয় তলায় প্রদর্শনী ও বিক্রির জন্য আছে ডিপ ফ্রিজসহ ওয়ালটন ব্র্যান্ডের মোবাইলসেট। দর্শক-ক্রেতা এবং পণ্য উঠানামা সহজ করতে প্যাভিলিয়নে সংযুক্ত করা হয়েছে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন লিফট।অন্যদিকে ওয়ালটনের স্টলে (স্টল নম্বর ৩১ এ, ৩১ বি) প্রদর্শণ করা হচ্ছে ইলেকট্রনিক্স হোম অ্যাপ্লায়েন্সেস। উল্লেখ, ১ জানুয়ারি শুক্রবার মাসব্যাপী ২১তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চলবে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত এবারের মেলায় বাংলাদেশসহ মোট ২২টি দেশ অংশ নিয়েছে। মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। মেলায় প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রবেশ মূল্য বা টিকিট মূল্য ৩০ টাকা এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য থাকছে ২০ টাকা রাখা হয়েছে।

এ বছর ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় ১৩টি ক্যাটাগরিতে মোট ৫৫৩টি স্টল ও প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন ৬০টি, জেনারেল প্যাভিলিয়ন ১০টি, রিজার্ভ প্যাভিলিয়ন তিনটি, ফরেন প্যাভিলিয়ন ৩৮টি অন্যতম। এছাড়া থাকছে প্রিমিয়ার মিনি প্যাভিলিয়ন ৩৬টি, জেনারেল মিনি প্যাভিলিয়ন ১৩টি, রিজার্ভ মিনি প্যাভিলিয়ন ছয়টি, ফুড স্টল ২৫টি, রেস্টুরেন্ট পাঁচটি।