দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৫: পিএসসিতে দেশসেরা এবং জেএসসিতে শীর্ষস্থান অর্জন করেছে রাজধানীর মিরপুরের মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ। বরাবরের মতো পিইসি-জেএসসিতে শতভাগ সাফল্য পেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। জেএসসিতে ১ হাজার ৯শ ৯৪ শিক্ষার্থীর মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছে ১ হাজার ৫শ ৫৩ জন। আর পিএসসিতে ৩ হাজার ৭শ ৮৩ জনের মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছে ২ হাজার ৯শ ৩৪ জন।বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার পর স্কুল থেকে এ ফলাফল প্রকাশ করা হয়।ফলাফল জানিয়ে স্কুল অধ্যক্ষ মো. ফরহাদ হোসেন জানান, এবার শীর্ষ প্রতিষ্ঠানগুলো নম্বর অনুযায়ী সাজানো হয়নি। তবে তার প্রতিষ্ঠান শতভাগ সাফল্য লাভ করেছে।
দেশের ফলাফল চিত্র বিশ্লেষণে দেখা যায়, ফলাফলের দিক থেকে পিএসসিতে দেশসেরা হয়েছে এ প্রতিষ্ঠান। আর জেএসসিতে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া না গেলেও প্রথম দশের মধ্যে থাকবে বলে আশাবাদী স্কুলের অধ্যক্ষ। মো. ফরহাদ হোসেন জানান, ফলাফলে দেখা যায়, জেএসসিতে তার প্রতিষ্ঠানের ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থী জিপিএ ৫ পেয়েছে। আর পিএসসিতে জিপিএ ৫ পেয়েছে ৭৭ শতাংশ শিক্ষার্থী।তিনি আরও জানান, জেএসসিতে গত চার বছর ধরে মনিপুর স্কুল দেশে প্রথম হয়ে আসছে। এবারও তাই হওয়ার কথা, তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবার সেরকম আকারে সেরা কোনো তালিকা প্রকাশ করেনি। এদিকে, ডিআরভুক্ত শিক্ষার্থী, জিপিএ ৫ প্রাপ্তি, পাসের হার, উপস্থিতির হারের ওপর নির্ধারণ করে অর্জিত মান দেওয়া হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে। এর ওপর ভিত্তি করেই নির্ধারণ করা হয়েছে দেশসেরা ২০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এ হিসেবে সবার সেরা ঢাকার মিরপুরের মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ। এ প্রতিষ্ঠানের অর্জিত মান ৯৯.৮৬।
মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের ৩ হাজার ৮০৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২ হাজার ৮২৬ জনই জিপিএ-৫ পেয়েছেন। পাসের হার শতভাগ। উপস্থিতির হার ৯৯.৪২ শতাংশ।এরপর দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ঢাকার মতিঝিলের ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুল। এ প্রতিষ্ঠান থেকে ডিআরভুক্ত ১৬শ ২১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছে ১৩শ ৫৮ জন। পাসের হার ৯৯.৯৩ শতাংশ। মোট অর্জিত মান ৭২.১৩।
তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। ১৪শ ৯৬ জন ডিআরভুক্ত শিক্ষার্থীর মধ্যে জিপিএ-৫ প্রাপ্তির সংখ্যা ১৩শ ৩১ জন। পাশের হার ৯৯.৯৩ শতাংশ। উপস্থিতির হার ৯৯.৭৩ এবং অর্জিত মান ৭১.১১।এরপর পর্যায়ক্রমে রয়েছে ক্যান্টনমেন্টের মাইলস্টোন প্রিপ্রারেটরি কে.জি. স্কুল, রমনার ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ডেমরার সামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, গুলশানের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, কুমিল্লা সদরের কুমিল্লা মডার্ন স্কুল এবং দশম স্থানে রয়েছে রমনার উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ।১১তম অবস্থানে রয়েছে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের শহীদ বীর উত্তম লে. আনোয়ার গার্লস কলেজ।
পরে মতিঝিলের সাউথ পয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ক্যান্টনমেন্টের শহীদ পুলিশ স্মৃতি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ডেমরার একে উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বন্দরের নৌবাহিনী স্কুল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের আদমজী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল, বসুন্ধরার ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, উত্তরা হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ, মতিঝিল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ (বাসাবো শাখা) এবং ২০তম অবস্থানে রয়েছে গাজীপুরের টংগীর সফিউদ্দিন সরকার একাডেমি অ্যান্ড কলেজ।
অন্যদিকে, প্রাথমিক-ইবতেদায়ি সমাপনীতে এ বছর গড় পাসের হার ৯৮ দশমিক ৫২ শতাংশ। তবে বিভাগ ভিত্তিক এ ফলে সবার চাইতে এগিয়ে আছে রাজশাহী। এ বিভাগের ৯৯ শতাংশ শিক্ষার্থীই পাস করেছে। সবচেয়ে কম সিলেটে ৯৬ দশমিক ৭৯। বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান এ তথ্য জানান।তিনি জানান, প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীতে পাসের হার রাজশাহীতে ৯৯ শতাংশ, ঢাকায় ৯৮.৭৪ শতাংশ, খুলনায় ৯৮.৯৭ শতাংশ, চট্টগ্রামে ৯৮ দশমিক ৪১ শতাংশ, বরিশালে ৯৮.৩০ শতাংশ, সিলেটে ৯৬.৭৯ শতাংশ ও রংপুরে ৯৮.৫৬ শতাংশ।অন্যদিকে ইবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনীতে পাসের হার ঢাকায় ৯৪ দশমিক ২১ শতাংশ, রাজশাহীতে ৯৭ দশমিক ৮৮ শতাংশ, খুলনায় ৯৬ দশমিক ২২ শতাংশ, চট্টগ্রামে ৯৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ, বরিশালে ৯৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ, সিলেটে ৯০ দশমিক ০১ শতাংশ ও রংপুরে ৯৭ দশমিক ২১ শতাংশ। এবার প্রাথমিকে মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ লাখ ৭৫ হাজার ৯৮০ জন শিক্ষার্থী এবং ইবতেদায়িতে ৫ হাজার ৪৭৩ জন শিক্ষার্থী।