দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৫: দাবি করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী বিভিন্ন সংগঠন। মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত গুলশান এলাকায় অবস্থান করেন তারা। এ সময় বিক্ষোভ সমাবেশ ছাড়াও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বাসভবন ও কার্যালয় ঘেরাও করার চেষ্টা করেন অবস্থানকারীরা। পরে পুলিশি বাধায় গুলশান-২ চত্বর এলাকায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করে কর্মসূচি শেষ করেন তারা। ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটির নেতৃত্বে মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে একটি বিক্ষোভ মিছিল গুলশান-২ গোলচত্বরে জড়ো হয়। এতে অংশ নিয়েছে আমরা গর্বিত বাঙালি, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।তারা বিক্ষোভ মিছিলটি নিয়ে খালেদা জিয়ার বাড়ি অভিমুখে রওনা হন। পরে পুলিশ গোলচত্বরেই তাদের আটকে দেয়। সেখানে অবস্থান নিয়ে তারা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।
অবস্থান কর্মসূচি শুরুর পর গুলশান গোল চত্বরের পাশে যান চলাচল বন্ধ করে দেয় পুলিশ। সেখানে অবস্থান কর্মসূচিতে খালেদা জিয়ার সাজার দাবিতে নানান স্লোগান দেয় বিক্ষুব্ধরা।এদিকে তাদের এই কর্মসূচি ঘিরে সকাল থেকে খালেদা জিয়ার বাসভবন ও এর আশপাশের রাস্তায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে খালেদা জিয়ার বিতর্কিত বক্তব্যের প্রতিবাদে গুলশান-২ চত্বরে দুই ঘণ্টা অবস্থান শেষে চলে গেছেন মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পরিবারের সন্তানেরা। স্থান ত্যাগ করার আগে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির সাংবাদিকদের বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করায় খালেদা জিয়াকে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতেই হবে।অবস্থান কর্মসূচি পালন করে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সন্তান ও স্বজনসহ সাধারণ জনতা।প্রথমে গুলশান ২ নম্বরের তাহের টাওয়ারের সামনে অবস্থান এবং পরে গুলশান টাওয়ারে বিক্ষোভ করে বেলা ১২টার দিকে তারা চলে যান। অবস্থান কর্মসূচি শুরু হওয়ার পর গুলশান গোল চত্বরের পাশে আড়াআড়িভাবে ভ্যান রেখে যান চলাচল বন্ধ করে দেয় পুলিশ।
অবস্থান কর্মসূচিতে খালেদা জিয়ার সাজার দাবিতে নানা স্লোগান দেয়া হয়। একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করায় খালেদা জিয়াকে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতেই হবে।খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান তিনি। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যেন কটূক্তি করা না যায়, এ জন্য মুক্তিযুদ্ধ অস্বীকার অপরাধ আইন করার কথা বলেন তিনি।শাহরিয়ার কবির আরও বলেন, এটা কূটনৈতিক এলাকা। ভিয়েনা কনভেনশন মেনেই আমরা প্রতিবাদ জানাচ্ছি। প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে আমরা এখান থেকে চলে যাব।
বিখ্যাত ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী বলেন, খালেদা জিয়া যা, তা একটি কথায় প্রমাণ করেছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুদিনে তিনি কেক কেটে জন্মদিন পালন করেন। তাকে আর নতুন করে কী চিনব? তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করা উচিত।অবস্থান কর্মসূচিতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, বিশিষ্ট চলচ্চিত্রকার ও মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দীন ইউসুফ, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল, শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি তুরিন আফরোজ অংশ নেন।
উল্লেখ্য, গত ২১ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের এক সমাবেশে মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন খালেদা জিয়া। ওই সমাবেশে খালেদা জিয়া বলেন, আজকে বলা হয় এত লাখ শহীদ হয়েছে, এটা নিয়েও অনেক বিতর্ক আছে। তিনি (বঙ্গবন্ধু) বাংলাদেশের স্বাধীনতা চাননি। তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন। জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা না দিলে মুক্তিযুদ্ধ হত না। এ নিয়ে ঢাকা ও নড়াইলে পৃথক কয়েকটি মামলা হয়েছে ।তার এই বক্তব্যের প্রতিবাদে ক্ষমতাসীনরা আজকের এই কর্মসূচির ঘোষণা করে।