দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২১ ডিসেম্বর ২০১৫: রাজধানীর মতিঝিলে রাস্তার পাশে ঝুলন্ত তারে আগুন লাগার পর আতঙ্কিত হয়ে পাশের ভবন থেকে হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। ওই চিকিৎসকের নাম অধ্যাপক ডা. এস এম শাহনেওয়াজ দ্বীন তবীব (৪৫)। তিনি রাজধানীর মিরপুর ২ নম্বরে অবস্থিত মিরপুর শিশু স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও শিশু হাসপাতালের অধ্যাপক এবং শিশু বিভাগের পরিচালক।এছাড়া তিনি পল্টনে অবস্থিত ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের কনসালট্যান্ট হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন বলেও জানা গেছে।সঙ্গে থাকা পরিচয়পত্র থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের চিকিৎসকরা তার পরিচয় নিশ্চিত করেন।
মতিঝিল থানার এএসআই মামুন হোসেন জানান, সোমবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে মতিঝিলের ১০ তলা হাজি ম্যানসনের সামনে এঘটনা ঘটে।নিহত শাহনেওয়াজ বিন তাবিদ (৬৫) পেশায় চিকিৎসক। তিনি মাতুয়াইল মা ও শিশু হাসপাতালের সাবেক পরিচালক।ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা এনায়েত হোসেন বলেন, হাজি ম্যানসন ভবনের মাঝ বরাবর সামনের তারে আগুন লাগার পর ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে দ্রুত আগুন নিভিয়ে ফেলে।কিন্তু ওই ভবনের তৃতীয় ও চতুর্থ তলার কয়েকটি কক্ষে ধোঁয়া ঢোকায় লোকজন আতঙ্কে হুড়োহুড়ি করে নামার চেষ্টা করে। সে সময় অধ্যাপক শাহনেওয়াজ চার তলা থেকে নামতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন।তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর দুপুর সোয়া ১টার দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানান এএসআই মামুন।
চিকিৎসক শাহনেওয়াজের গাড়িচালক শিপন বলেন, আমি গাড়ি নিয়ে নিচে ছিলাম, স্যার চারতলায় একটি ব্যাংকে গিয়েছিলেন।আগুন লাগার পর স্যারকে ফোন করে আতঙ্কিত হতে না করি। পরে দেখি ধরাধরি করে অচেতন অবস্থায় স্যারকে ফায়ার সার্ভিস নিচে নামাচ্ছে।নিহত শাহনেওয়াজের স্ত্রী সাবিনা সুলতানাও পেশায় চিকিৎসক।তিনি জানান, তাদের গ্রামের বাড়ি খুলনায়। ঢাকায় রমনার ইস্টার্ন ফ্লাওয়ারে থাকেন। তাদের এক ছেলে রয়েছে।গত বছর শাহনেওয়াজ অবসরে যাওয়ার পর মিরপুরের একটি শিশু হাসপাতালে যোগ দেন, বলেন সাবিনা।স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে থেকে এমবিবিএস পাশ করে শাহনেওয়াজ মিটফোর্ড হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে কাজ করেছেন।শাহনেওয়াজের মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হবে না বলে জানিয়েছেন তার ভায়রা মির্জা তারেকুল কাদের।
জানা যায়, সোমবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে অগ্নিকাণ্ডের সময় তিনি ওই ভবনের একটি ব্যাংকে ছিলেন। অগ্নিকাণ্ডের খবর শুনে দ্রুত নামার সময় পা পিছলে পড়ে গিয়ে অচেতন হন। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।ফায়ার সদর দফতরের টেলিফোন অপারেটর জিয়াউর রহমান বলেন, আগুনের ধোঁয়ায় জ্ঞান হারিয়ে ফেললে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে যান।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) সেন্টু চন্দ্র দাস বলেন, অজ্ঞান অবস্থায় ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বেলা পৌনে ১২টার দিকে হাজি ম্যানশন ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ওই ঘটনা ঘটে। প্রায় আধা ঘণ্টা চেষ্টার পর সোয়া ১২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে বলে জানান ফায়ার সার্ভিস কন্ট্রোলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনায়েত হোসেন।