দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২০ ডিসেম্বর ২০১৫: আসন্ন পৌরসভা নির্বাচন নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করলেও বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, ৩০ডিসেম্বর পৌর নির্বাচনে ভোটের মাধ্যমে জনগণ প্রতিক্রিয়া দেখাবে। সারাদেশে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী, এজেন্ট ও নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, তাদের বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেফতারের অভিযোগ তুলে দলটির দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, এসব ঘটনা প্রমাণ করে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের স্বচ্ছ নির্বাচনের ইচ্ছে নেই।
রোববার দুপুরে বিএনপির নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। পৌর নির্বাচন উপলক্ষে সারাদেশ থেকে দলের নেতাকর্মীদের পাঠানো অভিযোগ ও তথ্য নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।রিজভী আহমেদ বলেন, সরকারের চাওয়া পাওয়া ইচ্ছা পূরণ নির্বাচন কমিশন কাজ করছে।৩০ডিসেম্বর জান লড়িয়ে ভোটাররা তাদের অধিকার প্রয়োগ করবে।নির্বাচনের শুভ লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না উল্লেখ করে রিজভী বলেন,নির্বাচনের প্রাক্কালে ধারাবাহিকভাবে সন্ত্রাসের পরিকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে।
নির্বাচন থেকে বিরত থাকতে কুষ্ঠিয়ায় বিএনপির প্রার্থীকে প্রশাসন থেকে হুমকি দেয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ রিজভীর। রিজভী বলেন, সারাদেশে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী, সমর্থক ও এজেন্টদের ওপর হামলা চালাচ্ছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকেরা। কোনো অভিযোগ নিয়ে গেলে প্রশাসনের লোকেরাও প্রতিকারের পরিবর্তে বিএনপি নেতাকর্মীদের ভয়ভীতি ও গ্রেফতারের হুমকি দিচ্ছেন।ইতোমধ্যে ঝিনাইদহ, ফেনী,ভোলা,যশোর, চট্টগ্রাম, বরিশাল, রাজশাহীর চারঘাট, কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর, কুমিল্লার লাকসামসহ বেশ কিছু স্থানে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ও দলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপির এ যুগ্ম-মহাসচিব। তিনি বলেন, ঝিনাইদহে একজন যুবদল নেতাকে কুপিয়েও হত্যা করা হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে বেশ কিছু নেতাকর্মীকে আহত করা হয়েছে। বিএনপির নেতাকর্মী ও প্রার্থীদের বাড়িঘরেও হামলা চালানো হচ্ছে।
রিজভী বলেন, ভোলায় বিএনপির প্রার্থীর বাড়ির সামনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নির্বাচনী ক্যাম্প করে ধানের শীষের প্রার্থীর প্রচারণায় বাধা-বিঘœ সৃষ্টি করা হচ্ছে। কেবল এখানেই নয়, সারাদেশে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন। অভিযোগ করেও প্রতিকার আসছে না।বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, সরকার সুষ্ঠু নির্বাচন চায় না। চাইলে তারা নির্বাচনের আগে দলের লোকদের দিয়ে বিএনপি প্রার্থীদের ওপর হামলা চালাতো না, মামলা- গ্রেফতার করতো না। বরং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক এম এ মান্নানসহ নেতাকর্মীদের মুক্তি দিয়ে দিতো।তিনি বলেন, কেবল সরকার নয়, নির্বাচন কমিশনও স্বচ্ছ নির্বাচন করতে উৎসাহী নয়। এ কারণেই তারা সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে কাজ করছে।
রিজভী বলেন, অবৈধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ার বিষয়টি এখন কেবল জনগণের ওপর নির্ভর করছে। তারাই পারেন ভোট দিয়ে সরকার ও ইসির পক্ষপাতমূলক আচরণের জবাব দিতে।বিএনপির দফতরেরর দায়িত্বপ্রাপ্ত এ নেতা বলেন, শেখ হাসিনা ‘জঙ্গলবাদ কায়েম করতে চাইছেন, কালো মেঘে ছেয়ে গেছে। তারা মিথ্যাচার করছে। এ মিথ্যাচারের জবাব জনগণই দেবে। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম, সহ-দফতর সম্পাদক আসাদুল করিম, নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা প্রমুখ।